হোম এক্সক্লুসিভ পাইকগাছা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচন মঙ্গলবার

পাইকগাছা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচন মঙ্গলবার

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 318 ভিউজ

খুলনা অফিস :

অক্টোবর মঙ্গলবার পাইকগাছা উপজেলা পরিষদ উপ-নির্বাচন। নির্বাচনের চেয়ারম্যান পদে দুই জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার ইকবাল মন্টু ও ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক ডাঃ মোঃ আব্দুল মজিদ। ইতোমধ্যে নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন। প্রতিটি কেন্দ্রে পৌছে দেওয়া হয়েছে ব্যালট বক্স ও ভোটের যাবতীয় উপকরণ। নিছিদ্র নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন উপজেলা প্রশাসন ও নির্বাচন কর্মকর্তা। প্রার্থীরাও তাদের প্রচার প্রচারণা শেষ করেছেন। তবে প্রচার প্রচারণায় ধানের শীষ প্রতীকের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে নৌকা প্রতীকের প্রচার প্রচারণা। দলীয় নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করায় এবং ক্লিনইমেজের প্রার্থী হিসেবে জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী আনোয়ার ইকবাল মন্টু।

অপরদিকে ভোটার উপস্থিতি এবং সুষ্ঠু নির্বাচন হলে প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ নির্বাচন হবে এবং জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী বলে জানিয়েছেন ডাঃ আব্দুল মজিদ। উল্লেখ্য, গত ১৭ জুলাই উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী মোহাম্মদ আলী করোনা পজেটিভ নিয়ে মৃত্যুবরণ করলে উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ শূন্য হয়। শূন্য এ পদে নির্বাচন কমিশন ১৫ সেপ্টেম্বর তফসীল ঘোষণা করেন। তফসীল অনুযায়ী আজ ২০ অক্টোবর মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার ৭৯টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে। মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ১৯ হাজার ৭১৬ যার মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ১০ হাজার ৫৬৪ ও মহিলা ভোটার ১ লাখ ৯ হাজার ১৫২ জন। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী ২ প্রার্থীর মধ্যে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার ইকবাল মন্টু।

প্রার্থী মন্টুর পারিবারিক পরিচয়ে রাজনৈতিক ঐতিহ্য রয়েছে। তার পিতা শহীদ এমএ গফুর ছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একান্ত সহচর, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও ভাষাসৈনিক। মন্টু আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাদের মধ্যে একজন অন্যতম। তিনি ১৯৭৪ সালে ছাত্রলীগের সদস্য, ১৯৮৮ সালে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য, ১৯৯৬ সালে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, ২০১৪ সালে উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য, ২০১৯ সালে উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির যুগ্ম-আহবায়ক এবং একই বছর ২৪ নভেম্বর সম্মেলনের মাধ্যমে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। এবারই প্রথম তিনি দলীয় মনোনয়ন নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করছেন। নির্বাচনে জয় হলে এটি হবে তার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। বিগত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী থাকলেও এবারের নির্বাচনে কোন বিদ্রোহী প্রার্থী নাই।

পাশাপাশি স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আক্তারুজ্জামান বাবু সরাসরি নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ না করলেও তার দিক নির্দেশনায় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসহযোগি সংগঠনের জেলা ও উপজেলা সহ সকল পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ ঐক্যবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে কাজ করায় সামগ্রীকভাবে এবং জনমত জরিপে আনোয়ার ইকবাল মন্টু নির্বাচনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অনেকটাই এগিয়ে রয়েছেন। জয়ের ব্যাপারে আনোয়ার ইকবাল মন্টু বলেন, দলীয় সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করেছে। প্রতিটি এলাকা এবং মানুষের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে আমি এবং দলের নেতাকর্মীরা ভোট প্রার্থনায় সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। শেখ হাসিনার সরকার দেশে অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছে। সাধারণ মানুষ উন্নয়নে বিশ্বাসী এ জন্য উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে এলাকাবাসী নৌকা প্রতীকে ভোট দিবে।

প্রচার প্রচারণায় গিয়ে এলাকার মানুষের যেভাবে সমর্থন পেয়েছি আশা করছি মহান আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে নৌকা প্রতীক বিশাল ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করবে। অপরদিকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছে উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক ডাঃ মোঃ আব্দুল মজিদ। বিএনপি’র এ প্রার্থী রাজনৈতিকভাবে ১৯৮৩ সালে বরিশাল মেডিকেল কলেজের হল ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক, ১৯৮৯ সালে ইর্টানী ডক্টরস হোস্টেলের হল ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক, ১৯৯২ সালে ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) এর আজীবন সদস্য, ১৯৯৩ সালে ড্যাবের খুলনা জেলা শাখার সমাজ কল্যাণ সম্পাদক, ২০০৬ সালে উপজেলা বিএনপি’র সদস্য, ২০০৮ সালে জেলা বিএনপি’র আহবায়ক কমিটির সদস্য, ২০১০ সালে জেলা বিএনপি’র স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক, ২০১৪ সাল থেকে অদ্যাবধি উপজেলা বিএনপি’র আহবায়কের দায়িত্বে রয়েছেন।

এর আগে তিনি একবার উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে পরাজিত হন। বিগত নির্বাচনে বিএনপি উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি। এজন্য এবারের নির্বাচনকে তারা অনেকটাই গুরুত্ব দিচ্ছে। নির্বাচন প্রসঙ্গে ডাঃ আব্দুল মজিদ বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, প্রশাসন যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে, আমাদের এজেন্টের যদি বের করে না দেওয়া হয় এবং ভোটার উপস্থিত যদি স্বাভাবিক হয় তাহলে ধানের শীষ প্রতীক জয়লাভ করবে। নির্বাচনের প্রস্তুতি প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার কামালউদ্দীন আহম্মেদ বলেন, ভোটের আগের দিন প্রতিটি কেন্দ্রে ব্যালট বক্স সহ ভোটের যাবতীয় উপকরণ ভালভাবে পৌছে দেওয়া হয়েছে। সুন্দর পরিবেশে ভোটাররা তাদের ভোট দিতে পারবেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী জানান, নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।

নিছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বিজিবি, র‌্যাব, কোস্টগার্ড, পুলিশ ও আনসার নিয়োজিত থাকবে। আশা করছি সকলের সহযোগিতায় একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করতে পারবো। খুলনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রশাসন ও দক্ষিণ জিএম আবুল কালাম আজাদ জানান, অন্যান্য বাহিনীর পাশাপাশি পুলিশের ৪ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। নির্বাচনে নিরাপত্তার কোন ঘাটতি নাই। আশা করি আইন শৃংখলা স্বাভাবিক থাকবে এবং ভোটাররা নির্ভয়ে-নির্বিগ্নে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে। এবারের উপ-নির্বাচনে কে হচ্ছেন উপজেলা চেয়ারম্যান এমন অপেক্ষায় রয়েছেন এলাকার মানুষ।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন