জাতীয় ডেস্ক:
‘এসো বন্ধু সাইক্লিং করি মাদকমুক্ত দেশ গড়ি’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে রাজবাড়ীতে মাদকবিরোধী সাইকেল র্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। মাদকের ভয়াবহতা তুলে ধরার পাশাপাশি ইভটিজিং, বাল্যবিয়ে ও স্মার্ট ফোনে আসক্তির কুফল সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে ব্যতিক্রমী এ আয়োজন করা হয়।
সাইকেল লাভার রাজবাড়ীর আয়োজনে মাদকবিরোধী এই সাইকেল র্যালিতে অংশ নেন বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী। এতে সার্বিক সহযোগিতা করে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রান্তিক জনকল্যাণ সংস্থা।
পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সাইকেল র্যালি উদ্বোধন করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) ও সদ্য পুলিশ সুপার পদে পদন্নোতি প্রাপ্ত মো. রেজাউল করিম। র্যালিতে নেতৃত্বও দেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।
র্যালিটি পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে বের হয়ে শহরের ১ নম্বর রেলগেট দিয়ে ঘুরে বড়পুল হয়ে শ্রীপুর এলাকা থেকে ইউটার্ন নিয়ে আবার বড়পুল মোড় হয়ে মুরগির ফার্ম দিয়ে বাগমারা তালতালা হয়ে ইউটার্ন নিয়ে বড়পুল হয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
র্যালিতে অংশ নেওয়া সজল, সিফাত, শিমুল, মিঠু, সুজন বিষ্ণুসহ একাধিক ব্যক্তি বলেন, এই প্রথম আমরা কোনো ব্যতিক্রমী সাইকেল র্যালিতে অংশগ্রহণ করলাম। মাদক, ইভটিজিং, বাল্যবিয়ে ও স্মার্ট ফোনে আসক্তির কুফল সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরি করাই আজকের এই সাইকেল র্যালির মূল উদ্দেশ্য।
র্যালিতে অংশ নেওয়া নারী নিলান্ত ও মনিকা বলেন, জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল করিম স্যারের এই ব্যতিক্রমী আয়োজনে আজ আমরাও অংশ নিয়েছি। সবাইকে র্যালিতে অংশ নিয়ে খুবই ভালো লাগছে।
সাইকেল লাভার রাজবাড়ী গ্রুপের এডমিন আলামিন বিশ্বাস বলেন, অনলাইন আসক্তি থেকে যুবসমাজকে দূরে রাখা ও মাদকমুক্ত সমাজ গড়ার প্রত্যয়ে ২০২২ সালে যাত্রা শুরু করে সাইকেল লাভার রাজবাড়ী। আমরা বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষার্থীদের নিয়ে এই সাইকেল লাভার গ্রুপ করেছি। আমরা সচেতনতামূলক কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে সমাজের মানুষকে সচেতন করে তুলছি। পাশাপাশি নিজের দেহমন ঠিক রেখে পাড়াশোনা করছি। ভালো মানুষ হচ্ছি। এর মধ্য দিয়েই আমরা সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতে আমরা আজ জেলা পুলিশের সঙ্গে একতাবদ্ধ হয়ে সাইকেল র্যালি করেছি। ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে আমাদের এ ধরনের সাইকেল র্যালি করার ইচ্ছা আছে।
প্রান্তিক জনকল্যাণ সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. রুহুল কবির বলেন, প্রান্তিক জনকল্যাণ সংস্থা সবসময় মাদক, ইভটিজিং, বাল্যবিয়ে, সন্ত্রাস রোধে কাজ করে থাকে। আজকের এই সাইকেল র্যালিতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীসহ বিভিন্ন বয়সের ও শ্রেণিপেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেছে। এ র্যালির মাধ্যমে আমরা মাদক, ইভটিজিং, বাল্যবিয়ে ও জঙ্গি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছি।
রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) ও সদ্য পুলিশ সুপার পদে পদন্নোতি প্রাপ্ত মো. রেজাউল করিম বলেন, মাদক শুধু ব্যক্তি নয়, পুরো পরিবারকেই ধ্বংস করে। তরুণ, যুবকরা হচ্ছে জাতির শ্রেষ্ঠ সম্পদ, মাদকের ছোবল থেকে তাদের বাঁচাতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। মাদকের বিরুদ্ধে সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তাই যুব সমাজকে মাদকের ভয়াবহ ছোবল থেকে বাঁচাতে, ইভটিজিং, বাল্যবিয়ে রোধ ও সমাজ থেকে সন্ত্রাস দূর করতে এবং স্মার্ট ফোনে আসক্তির কুফল সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে আজ জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সাইকেল র্যালি করা হয়েছে।