হোম জাতীয় পর্যটনের সম্ভাবনা কাজে লাগালে বদলে যাবে বাংলাদেশ

জাতীয় ডেস্ক:

সুজলা-সুফলা বাংলাদেশ। সুপ্রাচীনকাল থেকেই বিদেশি ভ্রমণার্থীদের জন্য আকর্ষণীয় এই দেশের নয়নাভিরাম মায়াময় সবুজ প্রকৃতি। চীনা পর্যটক ফা হিয়েন, হিউয়েং সাং থেকে শুরু করে বাংলার আকর্ষণ উপেক্ষা করতে পারেননি মধ্যযুগের সবচেয়ে বিখ্যাত পর্যটক ইবনে বতুতাও। তিনি দীর্ঘদিন বাংলায় অবস্থান করে উপভোগ করেন এখানকার শ্যামল প্রকৃতি।

বলা হয়, বাংলার প্রতিটি গ্রামই যেন এক একটি পর্যটন স্পট। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণের জন্য বারো শতাধিক পর্যটন স্পট রয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৫৩টি সম্ভাবনাময় হিসেবে মনে করে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড। তবে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন ও ব্র্যান্ডিংয়ের দিক থেকে অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশের পর্যটন খাত।

পর্যটন খাতে চোখের সামনে শ্রীলঙ্কার অভিজ্ঞতা

পর্যটন শিল্পের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারলে কীভাবে একটি দেশ উপকৃত হতে পারে, তার অন্যতম উদাহরণ বাংলাদেশের দক্ষিণ এশীয় প্রতিবেশী দেশ শ্রীলঙ্কা। রাজনৈতিক সংঘাত ও কোভিডের ফলে সৃষ্ট ধাক্কায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে দেশটির অর্থনীতি। আন্তর্জাতিক ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে একপর্যায়ে দেউলিয়া ঘোষিত হয় দেশটি। এমনকি বাংলাদেশের থেকে ঋণ নিতে বাধ্য হয় তারা।

তবে এর সবই এখন অতীত। মাত্র এক বছরের মধ্যেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশটির অর্থনীতি। তাদের মূল্যস্ফীতি এখন বাংলাদেশের থেকেও কম। এমনকি সম্প্রতি বাংলাদেশের থেকে নেয়া ২০০ মিলিয়ন ডলার ঋণও শোধ করেছে তারা। আর এই সবই সম্ভব হয়েছে দেশটির পর্যটন খাতের কল্যাণে। কোভিড নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর দেশটিতে ফের ফিরতে শুরু করেন বিদেশি পর্যটকরা। এর বদৌলতে মাত্র এক বছরের মধ্যেই খাদের কিনারা থেকে ফের উঠে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে তারা।

পর্যটন সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে ব্যর্থ হচ্ছে বাংলাদেশ

শ্রীলঙ্কার উদাহরণ থেকে শিক্ষা নেয়ার অনেক কিছুই রয়েছে বাংলাদেশের সামনে। যে দেশে রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত, বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন, যেখানে রয়েছে বিশ্বের অন্যতম প্রশস্ত একাধিক নদী, পাহাড়, সবুজ বনানী, বিস্তৃত শস্যের খেত, সেখানে সারা বিশ্ব থেকে পর্যটকদের হুমড়ি খেয়ে পড়ার কথা।

কক্সবাজারে পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতের একটি অংশ। ছবি: সময় সংবাদ

কিন্তু বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। বিশ্বের সবচেয়ে কম বিদেশি পর্যটক ভ্রমণ করা দেশের তালিকায় প্রথম সারিতে অবস্থান করছে বাংলাদেশ, যা এ দেশের ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা হাজারও পর্যটন আকর্ষণের তুলনায় বেমানান। মাত্র ২০০ পর্যটন স্পটে রয়েছে পর্যটকদের জন্য থাকা খাওয়ার-ব্যবস্থা। যদিও অনেক পর্যটন স্পটে নানা অব্যবস্থাপনা সম্পর্কে অভিযোগ রয়েছে পর্যটকদের।

সেই সঙ্গে রয়েছে সিন্ডিকেটবাজির মাধ্যমে পর্যটকদের জিম্মি করে অতিরিক্ত হোটেল ভাড়া, যানবাহন ভাড়া কিংবা খাবারের জন্য অতিরিক্ত খরচ করতে বাধ্য করা। এ ছাড়া পর্যটন স্পটগুলোতে নিরাপত্তা ইস্যু তো রয়েছেই। এমনকি প্রধান প্রধান পর্যটন স্পট ছাড়া দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে অবস্থিত পর্যটন স্পটগুলোতে দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা দেয়ার ব্যাপারে রয়েছে নানা ঘাটতি।

পর্যটন খাত উন্নয়নে নিতে হবে সমন্বিত উদ্যোগ

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের পর্যটনের অমিত সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে নিতে হবে সমন্বিত উদ্যোগ। যেখানে যুক্ত থাকতে হবে সরকারি-বেসরকারি সব অংশীদারকে। সরকারি বিনিয়োগের পাশাপাশি বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে হবে। পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে স্থানীয় অধিবাসীদের। পাশাপাশি বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণে বাড়াতে হবে। এ ক্ষেত্রে চালাতে হবে আলাদা ব্র্যান্ডিং।

পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিশেষ করে, বিদেশি পর্যটকদের নিরাপত্তায় রাখতে হবে বিশেষ নজর। তাদের মতে, বর্তমানে দেশের জিডিপির ৩ দশমিক ৩ শতাংশ আসে পর্যটন খাত থেকে। তবে একটু উদ্যোগ নিলেই এই হারকে বাড়িয়ে ৭ থেকে ৮ শতাংশে উন্নীত করা সম্ভব, যা দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে পারে অনেকখানি।

পর্যটন খাতে আকর্ষণ করতে হবে বেসরকারি বিনিয়োগ

পর্যটন বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টুরিজম ও হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সন্তোষ কুমার দেব বলেন, বাংলাদেশের পর্যটন মূলত অভ্যন্তরীণ পর্যটনকেন্দ্রিক। জিডিপিতে পর্যটন খাতের অবদান ৩ দশমিক ৩ শতাংশ, যার মধ্যে ৯০ শতাংশের অবদান বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ পর্যটনের, আর বাকি ১০ ভাগ বিদেশনির্ভর। বাংলাদেশের প্রত্যন্ত এলাকায় যে পর্যটন স্পটগুলো রয়েছে, সেখানে উপযুক্ত আবাসন কিংবা পর্যটকবান্ধব তেমন কোনো পরিবেশ গড়ে ওঠেনি। এ অবস্থায় বাংলাদেশ যে পর্যটন মাস্টারপ্ল্যান করেছে, সেই মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন হলে দেশে পর্যটকবান্ধব পরিবেশ গড়ে উঠবে। তবে এতে যে বিনিয়োগ প্রয়োজন, তা একা সরকারের পক্ষে বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না। বেসরকারি বিনিয়োগকারীদেরও এগিয়ে আসতে হবে।

পর্যটন খাতে বাড়াতে হবে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার

প্রযুক্তির অগ্রগতি ছাপ ফেলেছে পর্যটন খাতে। এখন পর্যটকরা প্রযুক্তিবান্ধব। তারা যেখানে ঘুরতে যান, সেখানেও প্রযুক্তির সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে চান না। এ ব্যাপারে পর্যটন সংশ্লিষ্টদের গুরুত্ব দেয়ার কথা জানান অধ্যাপক ড. সন্তোষ কুমার দেব। তিনি বলেন, পর্যটন সেবা খাতে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। যেমন: পাঁচতারকা হোটেলগুলোতে পর্যটকরা তাদের রুম সার্ভিসে আইওটি সুবিধা প্রত্যাশা করেন। তারা চান তাদের রুমের আলো হবে প্রাকৃতিক আলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রক্ষা করে। তাদের রুমে কতখানি আলো প্রয়োজন এটি কিন্তু আইওটির মাধ্যমে প্রযুক্তিই নিশ্চিত করে। স্মার্ট যে টেকনোলজিগুলো রয়েছে যেমন: আইওটি, অগমেন্টেড রিয়েলিটি, ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ইত্যাদির ব্যবহার বাড়াতে হবে দেশের পর্যটন খাতে।

তিনি আরও বলেন, ‘একজন বিদেশি নাগরিক দেশের পর্যটন স্পটগুলো সম্পর্কে কিউআর কোডের মাধ্যমে স্ক্যান করেই যেন জানতে পারেন, সে ব্যবস্থা থাকতে হবে। তারা যেন সহজেই দেখতে পারে এই স্পটগুলোর বৈশিষ্ট্য কেমন, কী কী সুযোগ-সুবিধা রয়েছে, তাদের নিরাপত্তা পরিস্থিতি কেমন ইত্যাদি।’

অভ্যন্তরীণ পর্যটনে গুরুত্ব দিতে হবে ব্লু ইকোনমিকে

একটি দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে ব্লু ইকোনমি বা সুনীল অর্থনীতি। এর অন্যতম একটি উপাদান হলো সুনীল পর্যটন। এর মধ্যে দুটি উপাদান রয়েছে। একটি হলো মেরিন টুরিজম, আরেকটি কোস্টাল টুরিজম।

বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের পাশাপাশি দেশের নদীভিত্তিক পর্যটনের সুযোগ রয়েছে উল্লেখ করে ড. সন্তোষ কুমার দেব বলেন, এগুলোকে উপস্থাপন করতে পারলে দেশের পর্যটন খাত অনেকখানি এগিয়ে যেতে পারে।

এ ক্ষেত্রে উদাহরণ হিসেবে মিশরের নীলনদকেন্দ্রিক পর্যটনের কথা উল্লেখ করেন ড. সন্তোষ কুমার দেব। তিনি বলেন, মিশরে নীলনদের দুই তীরের প্রাকৃতিক পরিবেশ উপভোগের জন্য তিন-চার ঘণ্টার ক্রুজ সার্ভিস রয়েছে। যেখানে উপভোগ করা যায় নীলনদের দুই তীরের প্রাকৃতিক পরিবেশ। এ জন্য প্রচুর অর্থ ব্যয় করেন পর্যটকরা। আমরাও আমাদের পদ্মা-যমুনা নদীকেন্দ্রিক চরগুলোকে কেন্দ্র করে এ ধরনের ক্রুজ সার্ভিসসহ অন্যান্য পর্যটন সেবা চালু করতে পারি।

যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি সম্ভাবনা তৈরি করেছে পর্যটন খাতে

গত কয়েক বছরে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় অভূতপূর্ব উন্নয়ন ঘটেছে। পদ্মা সেতুর মাধ্যমে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ সম্ভব হয়েছে। কক্সবাজার পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে রেল নেটওয়ার্ক। শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যুক্ত হচ্ছে থার্ড টার্মিনাল এবং কক্সবাজার বিমানবন্দরকে উন্নীত করা হচ্ছে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে।

দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার এই উন্নয়ন দেশের পর্যটন খাতের বিকাশে বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন ড. সন্তোষ কুমার দেব।

তিনি বলেন, ‘আগে কিন্তু যাতায়াত ব্যবস্থার অসুবিধার কারণে পর্যটকরা কুয়াকাটায় যেত না। পদ্মা সেতু হওয়ার কারণে কিন্তু এখন কক্সবাজারের পরই দেশের দ্বিতীয় প্রধান পর্যটক গন্তব্যে পরিণত হয়েছে কুয়াকাটা। এ ছাড়া সুন্দরবনেও এখন প্রচুর পর্যটক ঘুরতে যান। সেই সঙ্গে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ হিসেবে ঘোষিত বাগেরহাটের ষাটগম্বুজ মসজিদেও কিন্তু প্রচুর পর্যটক ঘুরতে যাচ্ছেন। ভবিষ্যতে বাংলাদেশের নেচার বেজড টুরিজমের ক্ষেত্রে কক্সবাজার হবে একটি হাব, যেখানে সমুদ্রের তীর ঘেঁষে বিমান ল্যান্ড করবে। বিদেশ থেকে পর্যটকরা এখানে অবতরণ করে সাবরাংয়ের পর্যটন স্পটে অবস্থান করবেন।’

পর্যটন স্পটে নিরাপত্তা দিতে তৎপর রয়েছে টুরিস্ট পুলিশ

দেশের পর্যটন স্পটগুলোতে নিরাপত্তা নিয়ে নানা সময়েই ভোগান্তিতে পড়েন পর্যটকরা। বিশেষ করে কক্সবাজারসহ দেশের জনপ্রিয় টুরিস্ট স্পটগুলোতে নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের শিকারে পরিণত হন সেখানে ঘুরতে যাওয়া পর্যটকরা।

তবে এ ব্যাপারে টুরিস্ট পুলিশ তৎপর রয়েছে বলে সময় সংবাদকে জানান বাংলাদেশ টুরিস্ট পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. আবু কালাম সিদ্দিক। তিনি বলেন, কক্সবাজারে পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে টুরিস্ট পুলিশ ব্যাপক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। জনপ্রিয় স্পটগুলোতে সিসি ক্যামেরাসহ অন্যান্য সব ধরনের নিরাপত্তামূলক প্রযুক্তি স্থাপন করা হয়েছে। স্পটগুলোতে টুরিস্ট পুলিশ নিয়মিতভাবে মোতায়েন রয়েছে। সিসিটিভি মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোকে সার্ভেইলেন্সের অধীন আনা হয়েছে।

সুন্দরবনের বিভিন্ন পর্যটন স্পট ঘিরে সিন্ডিকেটবাজির বিরুদ্ধে টুরিস্ট পুলিশের কঠোর অবস্থানের কথা তুলে ধরে ডিআইজি আবু কালাম সিদ্দিক বলেন, ‘সুন্দরবনে যদি পর্যটকদের কোনো প্রকার হয়রানি করা হয়, এবং এ ব্যাপারে অভিযোগ পাওয়া যায়, তাহলে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ব্যাপারে কোনো ছাড় দেয়া হবে না। পর্যটকরা যেন নিশ্চিন্তে বিভিন্ন স্পট উপভোগ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে সদাতৎপর টুরিস্ট পুলিশ। সাজেকে টুরিস্ট পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে দেশের বিভিন্ন পর্যটন স্পটে টুরিস্ট পুলিশ মোতায়েন করা হবে। তাছাড়া টুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি পর্যটকদের সেবা দিতে তৎপর রয়েছে স্থানীয় থানার পুলিশও।

অবকাঠামো উন্নয়নের পরিকল্পনা পর্যটন করপোরেশনের

বাংলাদেশের পর্যটন খাতে সরকারি সেবাদাতাদের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন। দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন স্থানগুলোতে রয়েছে তাদের হোটেল, মোটেল, গেস্ট হাউজ ও রেস্টুরেন্ট। এক সময় এসব হোটেল-মোটেলই ছিল দেশের পর্যটনপ্রিয় মানুষের আস্থার প্রতীক। তবে সময়ের পরিক্রমায় বেসরকারি খাত থেকে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়েছে পর্যটন করপোরেশনের হোটেল-মোটেলগুলো।

তারপরও বিদ্যমান অবকাঠামো দিয়ে পর্যটকদের আরও উন্নত সেবা দেয়ার কথা জানান বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের পরিচালক এ কে এম তারেক। তিনি বলেন, পর্যটন করপোরেশনের মোটেলগুলোর অবকাঠামো সময়োপযোগী ও আধুনিক করা হচ্ছে। পাশাপাশি প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে অবস্থিত পর্যটন স্পটগুলোতে বাড়ানো হচ্ছে পর্যটন করপোরেশনের অবকাঠামো।

এ কে এম তারেক বলেন, ‘বাগেরহাটের খানজাহান আলীর মাজারের কাছে নতুন মোটেল তৈরি হচ্ছে। যার কাজ এই অর্থবছরে শেষ হচ্ছে। কুয়াকাটায় এরই মধ্যে ৮৬টি রুমের বিশাল একটি মোটেল রয়েছে। সেখানে সুইমিংপুল ও বাচ্চাদের রাইড স্থাপনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। পাশাপাশি এর ভেতরে থাকা জলাশয়কে আরও দৃষ্টিনন্দন রূপ দেয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।’

রাঙামাটিতে ঝুলন্ত ব্রিজের কাছে থাকা পর্যটন মোটেলে সুইমিংপুল স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, পাশাপাশি হাওড়াঞ্চলে কাজ করছে পর্যটন করপোরেশন। টাঙ্গুয়ার হাওড়ের টেকেরঘাটে দুই রুমের একটি স্থাপনা করা হয়েছে। এ ছাড়া নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে একটি গেস্টহাউজ করা হয়েছে, যেখানে সাত/আটটি রুম করা হয়েছে, যেখান থেকে হাওড় খুব সুন্দরভাবে উপভোগ করা যায়।

পর্যটন খাতের উন্নয়নে টুরিজম বোর্ড এর মাস্টারপ্ল্যান

দেশের পর্যটন খাতের দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশ টুরিজম বোর্ড। পর্যটনের উন্নয়ন ও বিকাশে রয়েছে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। দেশের পর্যটনের চেহারা পাল্টে দিতে মাস্টারপ্ল্যান বা মহাপরিকল্পনার কথা জানিয়েছে সংস্থাটি।

বাংলাদেশ টুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের বলেন, পর্যটন খাতের উন্নয়নে ব্যাপক পদক্ষেপ নিয়েছে বর্তমান সরকার। টুরিজম মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করা হচ্ছে। এই মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন শুরু হলেই বদলে যাবে দেশের পর্যটনের সার্বিক চেহারা। বিশ্বমানের টুরিজম দেয়া সম্ভব হবে বাংলাদেশে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট সব স্টেকহোল্ডারকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করা হচ্ছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন