আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
বিবিসির প্রতিবেদন মতে, ছোট এক অপরাধে অভিযুক্ত করে লাশন থম্পসন নামের এক ব্যক্তিকে কারাদণ্ড দেয়া হয়। কর্মকর্তারা তাকে মানসিকভাবে অসুস্থ বলে অভিহিত করে। এরপর তাকে জর্জিয়া রাজ্যের ফুলটন কাউন্টি কারাগারের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ শাখায় পাঠানো হয়।
কিন্তু ওই কারাগারের সেলে তার মৃত্যু হয়। থম্পসনের পরিবারের আইনজীবী মাইকেল ডি হার্পার থম্পসনের ছবি প্রকাশ করেছেন। এতে থম্পসনের পুরো শরীর ছারপোকায় ঢাকা দেখা যায়।
এই ঘটনায় একটি ফৌজদারি তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন আইনজীবী মাইকেল। সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এই ঘটনায় শিগগিরই একটি মামলা করা হবে।
এক বিবৃতিতে আইনজীবী হার্পার বলেন, ‘থম্পসনকে পোকামাকড় ও ছারপোকাযুক্ত একটি সেলে রাখা হয়। সেখানেই তাকে জীবন্ত খেয়ে ফেলেছে ছারপোকা। এরপর ওই নোংরা সেলে বা কারাকক্ষেই তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।’ আইনজীবী আরও বলেন, ‘যে কারাগারে থম্পসনকে রাখা হয়েছিল তা অসুস্থ প্রাণীরও উপযুক্ত না। এমনটা তার প্রাপ্য ছিল না।’
তবে কারা কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণ উল্টো কথা বলছে। ফুলটন কাউন্টির মেডিক্যাল পরীক্ষকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তিন মাস আগে থম্পসনকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর তাকে কারাগারে নিশ্চল অবস্থায় পাওয়া যায়।
আরও বলা হয়, স্থানীয় পুলিশ ও চিকিৎসা কর্মীরা তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন। পরে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। তবে আইনজীবী হার্পার বলেন, কারাগারের রেকর্ডে দেখা যায়, আটক কর্মকর্তা ও চিকিৎসাকর্মীরা থম্পসনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ার বিষয়টি লক্ষ্য করেছিলেন। কিন্তু তারা তাকে সহায়তা বা সহায়তার ব্যবস্থার মতো কোনও পদক্ষেপই নেননি।
তবে মেডিক্যাল পরীক্ষকের প্রতিবেদনে কারাগারে থম্পসনের কক্ষে ছারপোকার ব্যাপক উপদ্রব ছিল বলে স্বীকার করা হয়েছে। তবে থম্পসনের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি বলে জানানো হয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে তার মৃত্যুর কারণ ‘অজ্ঞাত’ বলে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। আইনজীবীর প্রকাশিত ছবিগুলোতে দেখা যায়, মৃত থম্পসসের মুখ ও শরির ছারপোকায় ঢাকা। কেনটাকি বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ববিদ ও ছারপোকা বিশেষজ্ঞ মাইকেল পটার বলেন, ছবিগুলোতে কারাগারের কক্ষের যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে তা অত্যন্ত ভয়াবহ।
বিবিসিকে এক সাক্ষাৎকারে পটার বলেন, ‘আমি গত ২০ বছরের বেশি সময় ছারপোকা নিয়ে কাজ করেছি। কিন্তু এমন ভয়াবহ পর্যায়ের কোনো কিছু আমি কখনই দেখিনি।’
বিছানার ছারপোকার কামড় সাধারণত প্রাণঘাতী হয় না। তবে কিছু বিরল ক্ষেত্রে দীর্ঘসময় ধরে ব্যাপক পরিমাণে ছারপোকার উপদ্রবের কারণে গুরুতর রক্ত স্বল্পতা দেখা দিতে পারে। এ অবস্থায় যদি চিকিৎসা না নেয়া হয়, তাহলে মৃত্যুও হতে পারে।