মোস্তফা কামাল, নড়াইল:
নড়াইলের কালিয়া উপজেলার মাউলি ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামে নবগঙ্গা নদীর পাড়ে ইটভাটা বন্ধ করে বানানো হয়েছে ৫৬ হাজার ধারণকৃত বিশাল ড্রাগন গাছের বাগান। বছরে আড়াই কোটি টাকা আয়ের লক্ষ নিয়ে পরিবেশের ক্ষতি মেনে নিতে না পেরে কলেজ শিক্ষক মরফুদুল হাসান পলাশ ইটভাটা বন্ধ করে ২৩ একর ইটভাটার গড়ে তুলেছেন ড্রাগন বাগান। ভাটার চিমনিকে বৃদ্ধাগুলি দেখিয়ে নবগঙ্গা নদীর পাড়ে দুলছে লকলকে ড্রাগন চারা। ভাটার কালো ধোয়ার বদলে সেখানে বেড়ে উঠেছে প্রাথমিক ভাবে ২৮ হাজার ড্রাগন চারার বিশাল সবুজ বাগান। রেড ভেলভেট, আমেরিকান বিউটি, ইসরাইল ইভলো, ভিয়েতনাম রেড, ভিয়েতনাম হোয়াইট, পলোরা জাতের ড্রাগন গাছ ।
কালিয়ার মুন্সী মানিক মিয়া ডিগ্রি কলেজর শিক্ষক মরফুদুল হাসান পলাশ তার দুই ভাইয়ের সহযোগিতায় ২০২২ সালের জানুয়ারীতে শুরু করেন ড্রাগন বাগানের কাজ। বর্তমানে বাগানে ১৫ জন শ্রমিক কাজ করছেন।
বাগান পরিচর্যাকারী শ্রমিকরা বলেন এই বাগানের শুরু থেকে আমি কাজ করি। খুব সহজ পদ্ধতিতে বাগান তৈরি করা যায়। এটা খুব বেশি পরিশ্রমের কাজ না। সার উসুদ দিয়ে তাকি মাসে ১৫ হাজার টাকা বেতন পাই এত আমার সংসার চলে। তবে সবসময় খেয়াল রাখতে হয় যেন পোকামাকড় বা রোগ বালায় গাছের কোন ক্ষতি করতে না পারে। কেউ আছেন যারা বাগানের ফল কেটে বিভিন্ন শহরে বিক্রি করেন। খুলনা বিভাগের সবচেয়ে বড় এই বাগান দেখতে আসছেন দুরের উৎসাহীরা, ড্রাগন চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন তারা। অনেকই চারা কিনে নিচ্ছেন ছোট করে বাড়ির আঙ্গিনায় চাষ করার জন্য। ভালো হলে আগামী বাগার করার ইচ্ছা তাদের।
বাগানের মালিক কলেজ শিক্ষক মরফুদুল হাসান পলাশ বলেন, ইট ভাটার পরিবেশ বান্ধব না। বর্তমানে কৃষিবান্ধব সরকার আছে যাতে কৃষির উন্নতি হয় সেই কারণে আমি এই ড্রাগন বাগান করেছি। এটা শুধু নড়াইল জেলা না, খুলনা বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বড় বাগান। ৭ হাজার পিলার নিয়ে এই বাগান টি করা হয়েছে। আমার দেখাদেখি যেন অন্যরাও পরিবেশের কথা চিন্তা করে এই রকম বাগান গড়ে তুলছেন। আশা করছি বাগানের সব গাছে যখন ফল আসবে বছরে ২ থেকে আড়াই কোটি টাকার ফল বিব্রি বরা যাবে। যা ইটের ভাটার থেকে আয় কম হবেনা।
এ ব্যাপারে মাউলি ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা কালিয়া উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা চ ল কুমার মল্লিক বলেন, পলাশ স্যারের বাগানে কালিয়া কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে আমরা প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে থাকি। অল্প সময়ে বাগানে ফল আসা শুরু করে, তাই এটি লাভজনক চাষ। নতুন কেও এটা করতে চাইলে আমরা সব ধরনের সহযোগিতা করবো।
নড়াইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দীপক কুমার রায় বলেন, ইটভাটা একটা নির্জীব পরিবেশ সেই ইটভাটা থেকে কৃষক ঘুরে এসেছে ড্রাগন ফলের দিকে । নির্জীব পরিবেশ থেকে সজীব পরিবেশে যেটা ছিল কুলষিত যার আশপাসে কোন ফসলই হবে না। ইটের ভাটা মানে সেখানে সমস্ত পরিবেশ ধ্বংস করে দেবে। আমরা একটা সবুজ নড়াইল গড়ে তুলতে সক্ষম হবো।