হোম ফিচার নড়াইলে দু’মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্চিত করার দৃশ্য ধারণ করায় সাংবাদিকের ক্যামেরা কেড়ে নেওয়া হলো

 

নড়াইল অফিস :

নড়াইল মুক্ত দিবসে জেলা প্রশাসনের কয়েক কর্মচারী দু’জন মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্চিত করার দৃশ্য ধারণ করার সময় এক সাংবাদিকের মোবাইল ক্যমেরা কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরের জেলা শিল্পকলা একাডেমীতে নড়াইল জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সামনে এসব ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিকদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

জেলা পরিষদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা সাইফুর রহমান হিলু জানান, শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ ফকরুল হাসানের সভাপতিত্বে ১০ ডিসেম্বর মুক্ত দিবসের আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে প্যাকেট বিতরণ চলছিল। এ সময় আমরা ৩-৪জন মুক্তিযোদ্ধা ছিলাম। জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার অ্যাডভোকেট এসএ মতিন নাস্তার প্যাকেট আনতে যান। তখন তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ডিসি অফিসের সহকারী নাজির বাবর আলীর সাথে কথা কাটাকাটি হয়।

তর্ক-বিতর্ককালে বাবরসহ ডিসি অফিসের কয়েকজন কর্মচারী এসএ মতিনকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়। তখন আমি এগিয়ে যাই। এরপর বাবর আলীসহ তার অনুসারীরা পুনরায় আমাদের ওপর চড়াও হয় এবং কয়েকবার তেড়ে আসে। এ সময় উত্তেজিতভাবে আমাদের নিয়ে অশালীণ আচরণ করতে থাকে। ঘটনাস্থলে নড়াইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকসহ (সার্বিক) বেশ কয়েকজন ম্যাজিষ্ট্রেট উপস্থিত ছিলেন।’

সাংবাদিক আবদুস সাত্তার বলেন,‘সহকারী নাজির বাবর আলীসহ বেশ কয়েকজন কর্মচারী বীরমুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট এসএ মতিন ও সাইফুর রহমান হিলুর ওপর তেড়ে যাচ্ছিলেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত নড়াইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ ফকরুল হাসান ঠেকানোর চেষ্টা করেও নাজির বাবর আলী তা তোয়াক্কা না করে মুক্তিযোদ্ধাদের দিকে একাধিকবার হাত এগিয়ে নিয়ে যান এবং কেউ কেউ চেয়ার উচু করে মারতে যান। তখন পেশাগত কারনে আমি ভিডিও ধারণ করতে যাই।

এসময় ডিসি অফিসের কয়েক কর্মচারী আমাকে জাপটে ধরে জোরপূর্বক হাত থেকে মোবাইলটি ছিনিয়ে নেয়। এর দু’ঘন্টা পর ক্যামেরা মোবাইল ফেরত দিলেও ওই ঘটনাস্থলের ভিডিও এবং আমার গুরুত্বপূর্ণ অন্যান্য প্রোগ্রামের সব ভিডিও ডিলিট করে দেয়।। পরে দুপর ২টার দিকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এ মোবাইল ফোন ফিরিয়ে দেয়।

মুক্তিযোদ্ধা সাইফুর রহমান হিলু এ প্রতিনিধিকে জানান, স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি এবং মুজিব জন্মশতবর্ষের এ সময়ে এ ধরনের ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। এ ঘটনায় দোষি কর্মচারিদের যদি উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া না হয় তাহলে সংবাদ সম্মেলন করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান।

জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার অ্যাডভোকেট এস.এ মতিন এ প্রতিনিধিকে বলেন, ডিসি অফিসের কর্মচারি বাবর আলী চেয়ার দিয়ে আমাকে মারতে উদ্বত হয়। আমরা এভাবে অপমানিত হবার জন্য কি দেশ স্বাধীন করেছিলাম ? নড়াইল মুক্ত দিবসে মুক্তিযোদ্ধাদের লাঞ্চিত করার ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি এ ঘটনার জন্য দায়ী জেলা প্রশাসনের কর্মচারিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

নড়াইল জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমি বাইরে ছিলাম। নড়াইলে এসেছি। আলোচনার মাধ্যমে সন্তোষজনক সমাধানের জন্য বিষয়টি নিয়ে বসবো।’

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন