রাজনীতি ডেস্ক:
নির্বাচন পরবর্তী সংঘর্ষের ঘটনায় মেহেরপুরে মুজিবনগর উপজেলা চেয়ারম্যান ও প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা জিয়া উদ্দীন বিশ্বাসকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বুধবার (১০ জানুয়ারি) বিকেলে আদালতের আদেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে জিয়া উদ্দীন বিশ্বাসের নামে মামলার ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া বিরাজ করছে।
অভিযোগ থেকে জানা যায়, মেহেরপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ফরহাদ হোসেনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি আব্দুল মান্নানের ট্রাক প্রতীকে ভোট করেন জিয়া উদ্দীন বিশ্বাসসহ আওয়ামী লীগের একাংশ। নির্বাচনে ফরহাদ হোসেন বিজয়ী হলে আব্দুল মান্নান পক্ষের লোকজনের ওপর সহিংসতা শুরু হয়। নেতাকর্মীদের মারধর, বাড়িঘরে হামলা, বিলের মাছ লুটপাট ও খেতের ফসল কেটে তছরুপ করা হয়। এসব নিয়ে বুধবার (৯ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে বিস্তর অভিযোগ করেন পরাজিত প্রার্থী আব্দুল মান্নান। সহিংসতা বন্ধ না হলে আওয়ামী লীগের ঘরে ঘরে গৃহযুদ্ধ লেগে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
এর আগে মঙ্গলবার (৮ জানুয়ারি) রাতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ফরহাদ হোসেনের নেতাকর্মীরা মুজিবনগর উপজেলার আনন্দবাস গ্রামে বিজয় মিছিল করেন। মিছিলটি মুজিবনগর উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জিয়া উদ্দীন বিশ্বাসের বাড়ির সামনে যায়। সেখানে জিয়া উদ্দীন বিশ্বাসের এক কর্মীকে চড় থাপ্পড় দেয় নৌকা প্রতীকের সমর্থকরা। এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ লেগে যায়। এতে নৌকা পক্ষের উভয় পক্ষের ১৮ জন আহত হয়। রাতেই তাদেরকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় নৌকা প্রতীকের সমর্থক আনন্দবাস গ্রামের আলতাফ হোসেন বাদী হয়ে মুজিবনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় জিয়া উদ্দীন বিশ্বাসকে প্রধান আসামি করে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মান্নান পক্ষের ২৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ৩০-৪০ জনকে আসামি করা হয়।
মামলা দায়েরের পর তিনজনকে গ্রেফতার করে মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) আদালতে সোপর্দ করে মুজিবনগর থানা পুলিশ। এদিকে বুধবার জিয়া উদ্দীন বিশ্বাসসহ ১৬ আসামি আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিন আবেদন করেন। একইসঙ্গে জামিন আবেদন করা হয় মঙ্গলবার গ্রেফতার হওয়া তিন জনের। বিজ্ঞ আদালত আসামি পক্ষের আইনজীবীদের শুনানি শেষে জিয়া উদ্দীন বিশ্বাস ও হাজতবাসে থাকা মামুনের জামিন নামঞ্জুর করেন। বাকি আসামিদের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।
মুজিবনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আব্দুল আলিম বলেন, ‘দুজনের জামিন নামঞ্জুর এবং কয়েকজনের জামিনের বিষয়টি আমি শুনেছি।’
আসামি পক্ষের আইনজীবী ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মিয়াজান আলী জামিন মঞ্জুর ও নামঞ্জুরের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘সংঘর্ষের ঘটনায় আমাদের পক্ষের বেশ কয়েকজন গুরুতর জখম আছে। মুজিবনগর থানায় মামলা দায়েরের জন্য অভিযোগ দেয়া হলেও পুলিশ তা রেকর্ড করছে না।’