জাতীয় ডেস্ক:
শরীয়তপুর জজ কোটের সরকারি কৌঁসুলি (জিপি) আলমগীর মুন্সীর বিরুদ্ধে সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র দে’কে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় বুধবার (১৫ মে) রাতে জিপি আলমগীর মুন্সির বিরুদ্ধে পালং মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী ওই কর্মকর্তা।
পালং মডেল থানা ও নির্বাচন কার্যালয় সূত্র জানায়, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে আগামী ২১ মে শরীয়তপুর সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের একজন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান উজ্জল ঘোড়া প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
কামরুজ্জামানের পক্ষে নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা করছেন শরীয়তপুর জজ কোটের সরকারি কৌঁসুলি (জিপি) ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আলমগীর মুন্সী। নির্বাচনের প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের তালিকা ও ভোট কেন্দ্রের তথ্য সংক্রান্ত গোপনীয় কিছু নথি নিয়ে মঙ্গলবার রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে যান সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র দে। তিনি ওই নথিপত্র নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাইফুদ্দিন গিয়াসের সঙ্গে কথা বলছিলেন। তখন সেই কক্ষে প্রবেশ করেন জিপি আলমগীর মুন্সী। ওই নথিগুলো তখন সরিয়ে রাখেন নির্বাচন কর্মকর্তা। এতে ক্ষুব্ধ হন জিপি আলমগীর মুন্সী। বুধবার বিকেলে নির্বাচন কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যাওয়ার পথে আলমগীর মুন্সী তার গতিরোধ করে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন বলে অভিযোগ উঠে।
এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সাইফুদ্দিন গিয়াস, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাইনউদ্দিন ও এনডিসি সোহেল রানা সেখানে আসেন। বিকাশ চন্দ্র বিষয়টি নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলেন। তখন আলমগীর মুন্সী পুনরায় তাকে গালাগালি করে তেড়ে মারতে যান। জেলা প্রশাসনের ওই কর্মকর্তারা তখন দুজনকে সরিয়ে দেন। এ ঘটনাটির বিষয় নিয়ে বিকাশ চন্দ্র রাতে পালং মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। ওই অভিযোগটি রাত সাড়ে ১২টার দিকে মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়।
সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র দে সময় সংবাদকে বলেন, আলমগীর মুন্সী একজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থক। নির্বাচন সংক্রান্ত তিনি কিছু গোপন নথি দেখতে চেয়েছিলেন। তাকে নথি না দেখানোয় আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন এবং লাঞ্ছিত করেছেন। আমি আমার সিনিয়র কর্মকর্তা ও নির্বাচন কমিশনের পরামর্শে মামলা করেছি।
তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন শরীয়তপুর জজ কোটের জিপি আলমগীর মুন্সী। তিনি বলেন, আমার সঙ্গে কোন সরকারি কর্মকর্তার খারাপ সম্পর্ক নেই। তাছাড়া আমি নির্বাচন কর্মকর্তাকে অপদস্থ করিনি।
এ বিষয়ে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবদুল মান্নান বলেন, জিপি আলমগীর মুন্সী আমার এক কর্মকর্তার সঙ্গে অসদাচরণ আচরণ করেছেন এবং মারতে উদ্যত হয়েছেন। তখন ঘটনাস্থলে এডিসি জেনারেল, এনডিসি ও ইউএনও উপস্থিত ছিলেন। পরে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে মামলা করা হয়েছে।
পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দীন আহাম্মেদ বলেন, সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগে জজ কোটের জিপির বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।