রাজনীতি ডেস্ক:
নির্বাচনী কার্যালয়ে ককটেল হামলার বিষয়ে বিদেশি প্রতিনিধিদের কাছে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন ঢাকা-১৭ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
বুধবার (৬ ডিসেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেয়া এক পোস্টে বিদেশি প্রতিনিধিদের কাছে এই প্রশ্ন রাখেন তিনি।
পোস্টে আরাফাত লিখেন, গতকাল রাতে আমার নির্বাচনী অফিসে বোমা হামলা হয়েছে। আমার একজন প্রহরী আহত হয়েছেন। দৃশ্যত, তারা এখন আমাদের টার্গেট করছে। এটাকে নির্বাচন বিরোধী তৎপরতা সহিংসতা হিসেবে বিবেচনা করা উচিত নয় কি? এ ধরনের কাজ কি নির্বাচনকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে না?
এমন প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে তিনি এক্সে ট্যাগ করেছেন, যুক্তরাজ্যভিত্তিক পত্রিকা গার্ডিয়ানের দক্ষিণ এশিয়ার সংবাদদাতা হান্না এলিস পিটারসেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মারি মাসদুপুয়, বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত অখিম ট্রস্টার, বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক, ব্রিটিশ হাইকমিশনের ডেপুটি হাইকমিশনার ম্যাট ক্যানেল, আইনজীবী কেরি কেনেডি, যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক বিষয়ক সেক্রেটারি ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ান হাই কমিশন বাংলাদেশ, বাংলাদেশে কানাডার হাই কমিশন, মানবাধিকার কর্মী রবার্ট এফ কেনেডি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত, জাতিসংঘের হাই কমিশনার ভোলকার তুর্ক, বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাতিসংঘের বিশেষ রিপোর্টার ক্লেমেন্ট ভউলসহ আরও অনেককেই।
ঢাকা-১৭ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী মোহাম্মদ আলী আরাফাতের এক্সে দেয়া পোস্ট।
এর আগে মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) রাত ১০টার দিকে ঢাকা-১৭ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী মোহাম্মদ আলী আরাফাতের নির্বাচনী কার্যালয়ে ককটেল হামলা চালায় অবরোধসমর্থকরা। মোহাম্মদ আলী আরাফাতের ব্যক্তিগত সহকারী (গণমাধ্যম সমন্বয়ক) মাইকেল চৌধুরী বলেন, এ সময় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা গার্ড হারুনুর রশিদ আহত হন।
এ ধরনের হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, দোষীদের শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।
বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ অনেক আগে থেকেই তোড়জোড় শুরু করে। যৌথভাবে বিবৃতি দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ডেনমার্ক, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, স্পেন, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস। এরইমধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ (ইইউ) বিভিন্ন দেশ থেকে প্রাকনির্বাচনী দলও বাংলাদেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে গেছে।
দেশে অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করার লক্ষ্যে গত ১৫ নভেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর। এবং ভোটগ্রহণ ৭ জানুয়ারি।
এদিকে গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ায় ২৯ অক্টোবর সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল দেয় বিএনপি। প্রধান বিচারপতির বাসায় হামলার মামলায় দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ শীর্ষ পর্যায়ের অনেক নেতাকর্মী গ্রেফতার হন।
এরপর সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচন এবং দলের গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে ধারাবাহিকভাবে হরতাল-অবরোধের মতো সহিংস কর্মসূচি পালন করে আসছে দলটি। নির্বাচন ঠেকানোর অপচেষ্টার অংশ হিসেবে সবশেষ বুধবার (৬ ডিসেম্বর) ভোর ৬টা থেকে শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) ভোর ৬টা পর্যন্ত দশম দফায় অবরোধ পালন করছে দলটি। এ অবরোধের আগের রাতে মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) ঢাকা-১৭ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ আলী আরাফাতের নির্বাচনী কার্যালয়ে ককটেল হামলা চালায় অবরোধসমর্থকরা।