হোম জাতীয় দ্রুততম সময়ে টিকা নিশ্চিতে বুথ বাড়ানো হবে: সেব্রিনা

জাতীয় ডেস্ক :

রাজধানীর দক্ষিণখানে ফার্মেসিতে মডার্নার টিকা মেলার ঘটনায় দায় নিতে নারাজ টিকা বিতরণ বিষয়ক জাতীয় কমিটির প্রধান ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। এদিকে, টিকার জন্য মানুষের অপেক্ষা কমাতে দ্রুততম সময়ে বুথ বাড়ানোর জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

রোববার (২২ আগস্ট) ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি।

কঠোর নিরাপত্তা আর ব্যবস্থাপনার ফাঁক গলে রাজধানীর প্রান্তিক এলাকার ফার্মেসিতে মডার্নার টিকা পাওয়ার বিষয়টি জন্ম দেয় নানা প্রশ্নের। কোভিড টিকার মতো স্পর্শকাতর পণ্য বাইরে চলে যাওয়ার ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি খতিয়ে দেখছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরও।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, টিকা বাইরে যাওয়ার বিষয়ে এখনো উপসংহারে পৌঁছানোর মতো তথ্য মেলেনি। তদন্ত করে নেওয়া হবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। একই সঙ্গে পর্যালোচনা করা হচ্ছে বিতরণ ব্যবস্থায় কোনো ঘাটতি আছে কি না। তবে দায় নিতে নারাজ টিকা বিতরণ বিষয়ক জাতীয় কমিটির প্রধান।

দিনকে দিন আগ্রহ বাড়ায় টিকার এসএমএস এর জন্য অপেক্ষমাণ মানুষ তালিকাও দীর্ঘ হচ্ছে। নিবন্ধনের পর এখনো প্রথম ডোজ না পাওয়াদের সংখ্যা প্রায় দুই কোটি। অন্যদিকে বর্তমানে মজুদ এক কোটিরও কম। তবে জট কমিয়ে আনতে বুথ বাড়ানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে মাঠপর্যায়ে বলে জানান তিনি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, কোভিডের ভয়াবহতা এখন কিছুটা কমলেও প্রস্তুতিতে কোনো ভাটা পড়বে না কারণ এখনো শনাক্তের হার ১৬ শতাংশের বেশি।
এদিকে, কোভ্যাক্সের আওতাসহ বিশ্বের বিভিন্ন উৎস থেকে বাংলাদেশকে কোভিড-১৯ এর প্রতিষেধক ২১ কোটি ডোজ টিকা দেবার প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। বুধবার (১৮ আগস্ট) বিকেলে সচিবসভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে ব্রিফিংকালে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

আজ দেশে করোনায় মৃত ও নতুন রোগীর সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। তিন দিন ধরে শনাক্তের হারও ২০ শতাংশের নিচে। সেই সঙ্গে বাড়ছে সুস্থতার হারও। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ঢাকার বাইরে ৭৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এমনটি ভেবে স্বাস্থ্যবিধি না মানার কোনো সুযোগ নেই বলে জানান চিকিৎসকরা।

গত দু’মাসের তুলনায় সংক্রমণের ভয়াবহতার পারদ এখন অনেকটাই নিম্নমুখী। শনাক্তের চেয়ে সুস্থতার হার দ্বিগুণ। হাসপাতালগুলোর ভয়ংকর রূপ বদলে অনেকটা স্বস্তিতে ফিরেছে। সপ্তাহজুড়ে দৈনিক মৃত্যু দুইশ’র নিচে থাকায় পরিস্থিতি সহনীয় পর্যায়ে। শয্যার সংকট কেটে গেলেও আইসিইউ নিয়ে ছুটোছুটি চলছে।

এদিকে, মহামারি করোনার ধাক্কা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে সারা বিশ্ব। করোনার নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্টের কাছে বিশ্বের ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলোও ধরাশায়ী। পৃথিবীজুড়ে টিকা কার্যক্রম চললেও থামছে না সংক্রমণ ও মৃত্যুহার। তবে, গত তিন দিন ধরে বিশ্বে করোনায় মৃত্যু ও আক্রান্তের হার কমেছে।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশ সময় রোববার (২২ আগস্ট) সকাল ৮টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় মারা গেছেন আরও ৮ হাজার ৬৬৬ জন এবং আক্রান্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৬২ হাজার ১৬৮ জন।

এর আগে শনিবার (২১ আগস্ট) সকাল ৮টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় মারা গেছেন আরও ১০ হাজার ২০৫ জন এবং আক্রান্ত হয়েছেন ৬ লাখ ৮২ হাজার ২০২ জন এবং শুক্রবার (২০ আগস্ট) করোনায় মারা গেছেন ১০ হাজার ৮৭৬ জন এবং আক্রান্ত হয়েছেন ৭ লাখ ২০ হাজার ৫৫৯ জন।

এ নিয়ে বিশ্বে এখন পর্যন্ত মোট করোনায় মৃত্যু হলো ৪৪ লাখ ৩৬ হাজার ৬৪২ জন এবং আক্রান্ত হয়েছেন ২১ কোটি ২১ লাখ ৪৬ হাজার ২৫৯ জন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৮ কোটি ৯৭ লাখ ৭৫ হাজার।

করোনায় এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও মৃত্যু হয়েছে বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশ যুক্তরাষ্ট্রে।

তালিকায় শীর্ষে থাকা দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনা সংক্রমিত হয়েছেন ৩ কোটি ৮৫ লাখ ১৯ হাজার ২৯৬ জন। মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ৪৪ হাজার ৮৪০ জনের।

আক্রান্তে দ্বিতীয় ও মৃত্যুতে তৃতীয় অবস্থানে থাকা ভারতে এখন পর্যন্ত মোট সংক্রমিত হয়েছেন ৩ কোটি ২৪ লাখ ২৩ হাজার ৫৪৯ জন এবং এখন পর্যন্ত মোট মৃত্যু হয়েছে ৪ লাখ ৩৪ হাজার ৩৯৯ জনের।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন