জাতীয় ডেস্ক:
দ্বাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশনে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ ৪৭টি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার এবং মিশন প্রধানরা। সংসদে বসে রাষ্ট্রপতির ভাষণ শোনেন তারা।
মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদ ভবনে একাদশ জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকুর সভাপতিত্বে সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়। এর মধ্য দিয়ে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে আওয়ামী লীগের সরকার গঠনের পর যাত্রা করলো দ্বাদশ জাতীয় সংসদ।
এদিন সংসদে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টারা, রাজনৈতিক নেতা, সরকারি কর্মকর্তা এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ আরও অনেক ব্যক্তিবর্গ ও তাদের আত্মীয়-স্বজনসহ পাঁচ শতাধিক অতিথি। এদের মধ্যে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ মোট ৪৭টি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার এবং মিশন প্রধানরাও।
প্রথম অধিবেশনকে ঘিরে পুরো সংসদ ভবন নবীন-প্রবীণ এমপিদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে। ৩শ সংসদ সদস্যের পাশাপাশি কয়েকশ অতিথির উপস্থিতিতে সংসদকক্ষের ভিআইপি গ্যালারি ও দর্শনার্থী গ্যালারি পরিপূর্ণ হয়ে যায়।
অধিবেশনের প্রথম দিন যা যা হলো
অধিবেশনের শুরুতে ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন। এরপর দিনের কার্যসূচি অনুযায়ী স্পিকার পদে নির্বাচন হয়। স্পিকার পদে ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর নাম প্রস্তাব করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। প্রস্তাবটি সমর্থন করেন সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটন। এরপর কণ্ঠভোটে তা পাস হয়।
এরপর স্পিকারের শপথ অনুষ্ঠানের জন্য সংসদ অধিবেশন কিছু সময়ের জন্য মুলতবি করা হয়।
সংসদ ভবনে অবস্থিত রাষ্ট্রপতির দপ্তরে স্পিকারকে শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। শপথ গ্রহণ শেষে সংসদ অধিবেশন পরিচালনায় আসেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
এরপর ডেপুটি স্পিকার পদে নির্বাচন হয়। এ পদে পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকুর নাম প্রস্তাব করেন সরকার দলীয় সংসদ সদস্য এবি তাজুল ইসলাম এবং সমর্থন করেন মকবুল হোসেন। প্রস্তাবটি ভোটে দিলে সংসদ সদস্যরা ‘হ্যাঁ’ বলে সমর্থন জানান।
দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচিত ডেপুটি স্পিকারকে শপথ পড়ান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
সভাপতিমণ্ডলী মনোনয়ন
ডেপুটি স্পিকার নির্বাচন শেষে নিয়ম অনুযায়ী পাঁচ সদস্যের সভাপতিমণ্ডলী মনোনয়ন দেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। তারা হলেন, এবি তাজুল ইসলাম, শাহাব উদ্দিন, আ ফ ম রুহুল হক, হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ ও উম্মে কুলসুম। স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের অনুপস্থিতিতে নামের অগ্রবর্তিতা অনুসারে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যরা সংসদের বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন।
শোক প্রস্তাব উত্থাপন
সভাপতিমণ্ডলী মনোনয়নের পর শোক প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী শোক প্রস্তাবটি পেশ করেন। শোক প্রস্তাবে কুয়েতের আমির শেখ নাওয়াফ আল আহমদ আল জাবের আল সাবাহ’র মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করা হয়। এছাড়া সাবেক সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, সাবেক সংসদ সদস্য ও প্রতিমন্ত্রী জিনাতুন নেসা তালুকদার, সাবেক সংসদ সদস্য ড. মো. আকরাম হোসেন চৌধুরীসহ বিভিন্ন স্তরের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করা হয়।
রাষ্ট্রপতির ভাষণ
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ভাষণ দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে আহ্বান করেন। বিউগল বাজানোর মধ্য দিয়ে বিকেল সাড়ে ৪টায় রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন অধিবেশন কক্ষে প্রবেশ করলে সবাই দাঁড়িয়ে সম্মান জানান। এরপর শব্দযন্ত্রের মাধ্যমে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। স্পিকারের পাশের আসনে বসেন রাষ্ট্রপতি। এরপর ভাষণ দেন তিনি। নির্বাচিত হওয়ার পর এটাই ছিল রাষ্ট্রপতির জাতীয় সংসদে প্রথম ভাষণ। রাষ্ট্রপতির ভাষণ শেষে মুলতবি ঘোষণা করা হয় অধিবেশনের প্রথম দিন।