অনলাইন ডেস্ক:
দেশে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সংখ্যা সাড়ে ৩৫ লাখের কাছাকাছি। সমাজসেবা অধিদফতরের হালনাগাদকৃত প্রতিবন্ধিতা শনাক্তকরণ জরিপের (ডিআইএস) তথ্য অনুযায়ী এই সংখ্যা ৩৫ লাখ ৪১ হাজার ২২১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২১ লাখ ৪৩ হাজার ২৫৪ জন এবং নারী ১৩ লাখ ৯৫ হাজার ৫৮ জন। এছাড়াও হিজড়া জনগোষ্ঠী আছেন ২ হাজার ৯০৯ জন। আজ ৩ ডিসেম্বর ৩৩তম আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস ও ২৬তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস। এবারের প্রতিপাদ্য ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক টেকসই ভবিষ্যৎ বিনির্মাণ, বিকশিত নেতৃত্বে এগিয়ে যাবে প্রতিবন্ধী জনগণ।’
সমাজসেবা অধিদফতরের তথ্য বলছে, প্রতিবন্ধিতার ধরন বিবেচনায় অটিজম ৯০ হাজার ৮১৮ জন, শারীরিক প্রতিবন্ধী ১৮ লাখ ৪১ হাজার ৬৪৮ জন, দীর্ঘস্থায়ী মানসিক ও অসুস্থতাজনিত প্রতিবন্ধী ১ লাখ ৩৩ হাজার ৫৭৫ জন, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ৪ লাখ ৭৪ হাজার ৫৬৫ জন, বাক প্রতিবন্ধী ২ লাখ ১ হাজার ৩৬৯ জন, বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ২ লাখ ২৯ হাজার ৬৬৪ জন, শ্রবণ প্রতিবন্ধী ১ লাখ ৪৯ হাজার ২৫ জন, শ্রবণ-দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ১৫ হাজার ১৪৪ জন, সেরিব্রাল পালসি ১ লাখ ৩১ হাজার ৭৩৪ জন, বহুমাত্রিক প্রতিবন্ধী ২ লাখ ৪৬ হাজার ২৯০ জন, ডাউন সিনড্রোম ৭ হাজার ১৪৪ জন ও অন্যান্য প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ২০ হাজার ২৪৫ জন।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে সব নাগরিকের সমঅধিকার, মানবসত্ত্বার মর্যাদা, মৌলিক মানবাধিকার ও সামাজিক সাম্য প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়েছে। বিশ্বজুড়ে শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধিতার শিকার মানুষের জীবনমান উন্নয়ন ও সুরক্ষার অঙ্গীকার নিয়ে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যথাযথ মর্যাদায় দিবসটি পালিত হচ্ছে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, প্রকৃতিগতভাবে বিশেষ গুণসম্পন্ন প্রতিবন্ধিরা আমাদের সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সমাজের এই বিশেষ জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। সঠিক পরিচর্যা ও প্রতিবন্ধিদের উন্নয়নে অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করা হলে তারাও দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখতে সক্ষম হবেন। এ প্রেক্ষিতে দিবসটির এবছরের প্রতিপাদ্য—‘অন্তর্ভুক্তিমূলক টেকসই ভবিষ্যৎ বিনির্মাণ, বিকশিত নেতৃত্বে এগিয়ে যাবে প্রতিবন্ধী জনগণ’ অত্যন্ত সময়োপযোগী এবং যথার্থ হয়েছে বলে আমি মনে করি।
প্রধান উপদেষ্টা তার বাণীতে বলেন, প্রতিবন্ধী শিশুর বাবা-মা সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অত্যন্ত চিন্তিত থাকেন। এ থেকে পরিত্রাণের জন্য প্রতিবন্ধী ব্যক্তির উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নানামুখী কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে অটিজম ও এনডিডি শিশুদের জাতীয় জীবনের মূলধারায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে বলে আমি আশা করি।
সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ ৩৩তম আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস ও ২৬তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস ২০২৪ পালনে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে একটি সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানান।
দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকছেন সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা। অনুষ্ঠানে ১৭ ব্যক্তিকে এবং প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজ করা ৩ প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার দেওয়া হয়। ফাউন্ডেশন চত্বরে তিন দিনব্যাপী মেলারও আয়োজন করা হয়েছে।