দেবহাটা প্রতিনিধি:
দেবহাটার প্রানকেন্দ্র পারুলিয়ায় আমির হামজা নামের ষাটোর্ধ্ব এক ব্যবসায়ীর অন্তত বিশ বছরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দিনে দুপুরে জবরদখলের পর ছয় মাস কেটে গেলেও আজও কোন প্রতিকার পাননি ভুক্তভোগী পরিবার। এনিয়ে একাধিকবার হয়েছে শালিস বৈঠক, ভুক্তভোগী পরিবার অভিযোগ করেছেন থানা পুলিশসহ বিভিন্ন দপ্তরের। তবুও ক্ষমতাধর জবরদখলকারীদের কবল থেকে পুনরুদ্ধার হয়নি ভুক্তভোগী পরিবারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি। উল্টো প্রভাবশালীদের হুমকি ধামকিতে রীতিমতো দূর্বিষহ দিন কাটাচ্ছেন ওই ব্যবসায়ী ও তার পরিবারের সদস্যরা।
ভুক্তভোগী আমির হামজা পারুলিয়ার খেজুরবাড়িয়া গ্রামের মৃত আইজুদ্দিন গাজীর ছেলে। দীর্ঘদিনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি জোরপূর্বক দখল করে নেয়ার পর থেকে শারিরীকভাবে অনেকটাই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তিনি। সম্প্রতি এঘটনায় আবারও ব্যবসায়ী আমির হামজার ছেলে মোশারফ হোসেন প্রতিকার চেয়ে দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
মোশারফ হোসেন তার অভিযোগে বলেন, পারুলিয়া সেড মসজিদ সংলগ্ন শাহিন ভ্যারাইটি স্টোরের পাশে আমাদের ২৪ ফুট দৈর্ঘ্য ও সাড়ে ১০ ফুট প্রস্থের ইটের দেয়াল ও টিনের ছাউনি বিশিষ্ট একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ওই দোকানটি পজেশন আকারে ১৯৯৬ সালের ২১ সেপ্টেম্বর লিখিত চুক্তিপত্র বুনিয়াদে পূর্ববর্তী পজেশন হোল্ডার পারুলিয়ার মৃত গহর আলীর ছেলে শামসুর রহমানের কাছ থেকে আমার বাবা আমির হামজা ক্রয় করেন। সেই থেকে সেখানে আমার পরিবার ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। ওই জমিটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় থাকাকালে সেখানে এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে এবং অন্যান্য ব্যবসায়ীদের ন্যায় আমার পরিবার সেখানে একটি পজেশন খরিদ করে ব্যবসা শুরু করে। পরে জমিটুকু ইজারা পেতে আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডে লিখিত আবেদনও করি। কিন্তু বিগত ৮ এপ্রিল রাত ১টার দিকে দক্ষিণ পারুলিয়ার মৃত নজরুল ইসলামের দুই ছেলে আব্দুল্যাহ আল মামুন ও আরিফ ফয়সাল, শামসুর মোল্যার ছেলে সেলিম রেজা, ইয়াছিন মোল্যার ছেলে হায়দার আলী, দেবহাটা সদরের টাউনশ্রীপুর গ্রামের মৃত আব্দুর রউফ সরদারের ছেলে আবুল খায়ের বুলু দলবল নিয়ে আকর্ষিক আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি ভেঙে দিয়ে মালামাল লুটপাট ও জমিটুকু জবরদখল করে নেয়।
মোশারফ হোসেন আরও বলেন, এনিয়ে আমরা বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করি। আদালত জবরদখলকারিদের আমাদের জমিতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। চলমান বিচারকার্যে ইউনিয়ন সহকারি ভূমি কর্মকর্মর্তা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও থানা পুলিশ পৃথক পৃথক প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেছেন। প্রতিবেদনে সকলে আমাদের স্বপক্ষে সত্য তথ্য উপস্থাপন করেছেন। তাছাড়া বিষয়টি নিয়ে পারুলিয়া বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির উদ্যোগে শালিস বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়। শালিসে উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি, পারুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক বাবু, বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম মনিসহ অন্তত অর্ধশত গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। শালিসে আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জমি ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত দেয়া হলেও জবরদখলকারিরা তা অমান্য করে আমাদের হয়রানি করে চলেছে। দীর্ঘদিনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি পুনরুদ্ধারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, দেবহাটা থানার ওসিসহ সংশ্লিষ্টদের সহযোগীতা চেয়েছেন তিনি।