হোম জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশের কাছে শেখার আছে বিশ্বের: ড. আতিউর

জাতীয় ডেস্ক:

জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় বাংলাদেশের সামর্থ্য অনেক বেড়েছে যা বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশ এ ব্যাপারে অগ্রগণ্য। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশের কাছে শিখতে পারে বাকি বিশ্ব এমন মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও ইমেরিটাস প্রফেসর ড. আতিউর রহমান।

শনিবার (০৭ অক্টোবর) রাজধানীর একটি হোটেলে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও) আরডিআরএস আয়োজিত ‘অন ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যাডাপ্টেশন, অ্যাগ্রিকালচারাল ইনোভেশন অ্যান্ড রেজিলিয়েন্স’ শীর্ষক এ সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।

সেমিনারে ড. আতিউর বলেন, ‘অল্প কিছুদিন আগেও জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধিকে ভবিষ্যতের বিষয় হিসেবে মনে করা হলেও, এখন তা খুবই প্রাসঙ্গিক। জলবায়ু পরিবর্তন বর্তমানে আমাদের সবার ওপর এসে পড়েছে। একে এখনই মোকাবেলা করতে হবে। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় বাংলাদেশের সামর্থ্য অনেক বেড়েছে, বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশ এ ব্যাপারে অগ্রগণ্য। জলবায়ু পরিবর্তন জনিত দুর্যোগ মোকাবিলায় বাকি বিশ্বের বাংলাদেশের থেকে শেখার আছে।

তিনি এ প্রসঙ্গে জার্মানিতে হওয়া সাম্প্রতিক ঝড়ের কথা উল্লেখ করে বলেন, সেই ঝড়ে দুই শতাধিক মানুষ হতাহত হয়েছেন অথচ বাংলাদেশের আম্পানের মতো মারাত্মক সাইক্লোনেও প্রাণহানির সংখ্যা অতি সামান্য। এর থেকেই প্রমাণিত হয়, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বাংলাদেশের সক্ষমতা কতখানি।

জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে দেশের কৃষিখাতের অভিযোজনের সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে ড. আতিউর রহমান বলেন, ‘দেশে সৌরবিদ্যুৎ চালিত সেচপাম্পের সংখ্যা আরও বাড়াতে হবে। এতে কৃষিকাজে সেচে ব্যবহৃত জ্বালানির খরচই শুধু কমবে না, পরিবেশ দূষণও অনেকটাই হ্রাস পাবে।’

এখাতে দেশের ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের আর্থিক সহযোগিতা দিতে এগিয়ে আসতে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি আহ্বান জানিয়ে পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট সঙ্কট মোকাবেলায় সরকারের বরাদ্দ করা অর্থের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা এবং এ কর্মকাণ্ডে দেশের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বেসরকারি সংস্থা ও এনজিওগুলোকে আরও সম্পৃক্ত করার পরামর্শ দেন ড. আতিউর।

এছাড়া চরাঞ্চল, দক্ষিণাঞ্চলসহ দেশের পিছিয়ে থাকা অঞ্চলগুলোতে সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্রিক সেচ ব্যবস্থা ও বায়োগ্যাসের মত পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির প্রসারে এগিয়ে আসতে আরডিআরএসের মত বেসরকারি সংস্থা ও এনজিওগুলোকে এগিয়ে আসার কথা জানান ড. আতিউর রহমান।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও ঢাকা স্কুল অব ইকোনোমিকসের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্বাধীনতা পদক বিজয়ী কৃষিবিদ ও ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার অধ্যাপক ড. এম জি নিয়োগী। আরও বক্তব্য রাখেন, পিকেএসএফের গভর্নিংবডির সদস্য ড. মো. আব্দুল মুয়িদ, চ্যানেল আইয়ের পরিচালক শাইখ সিরাজ, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ জুলিয়ান ফ্রান্সিস প্রমুখ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আরডিআরএসের বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারপারসন পারভিন মাহমুদ। সমাপনী বক্তব্য রাখেন আরডিআরএসের নির্বাহী পরিচালক তপন কর্মকার। অনুষ্ঠান শেষে উপস্থিত অতিথিদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেয়া হয়।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন