হোম জাতীয় দুর্ঘটনার ক্ষতি এড়াতে যেসব বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে কর্ণফুলী টানেলে

জাতীয় ডেস্ক:

উন্নয়নের পথে বাংলাদেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রার নতুন সঙ্গী কর্ণফুলী নদীর নিচে বঙ্গবন্ধু টানেল। সব কাজ শেষে এখন শুধু অপেক্ষা ২৮ অক্টোবরের। সেদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্ণফুলীর এপার থেকে ওপার পাড়ি দিয়ে সম্পন্ন করবেন উদ্বোধনের আনুষ্ঠানিকতা। পরদিন থেকেই সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেয়া হবে দেশের প্রথম টানেল।

পানির উপরিভাগ থেকে ৪২.৮ মিটার গভীরে নদীর তলদেশে টিউবের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে চলাচলের এই বিশেষ পথ। মূল টানেলের দৈর্ঘ্য ৩.৩১২ কিলোমিটার আর টিউবের দৈর্ঘ্য ২.৪৫ কিলোমিটার। দুই টিউবের একটি দিয়ে যেতে হবে আরেকটি দিয়ে আসতে হবে।

স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে, উপরিভাগ থেকে এত গভীরে দুর্ঘটনা এড়াতে কী ধরনের ব্যবস্থা থাকছে?

১০.৮০ মিটার ব্যাসের এই টানেলের মাঝ বরাবর চলার পথ। মাঝে তিনটি ক্রস প্যাসেজের মধ্যদিয়ে যুক্ত থাকবে দুটি টানেল।

যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় দুই থেকে তিন মিনিটের মধ্যেই পৌঁছে যাবে কুইক রেসপন্স টিম। এছাড়া নিচের অংশে থাকছে বিশেষ সার্ভিস লেন। যা থেকে খুব সহজেই চলে যাওয়া যাবে টানেলের দুই প্রান্তে।

সেতু বিভাগের সচিব মো. মনজুর হোসেন সময় সংবাদকে বলেন, যে পথে গাড়িগুলো চলবে সেদিকে জেট ফ্যান স্থাপন করা হয়েছে। ফলে ধোয়া কিংবা আগুনের কোনো বিষয় থাকলে সেই ডিটেকশনে চলে যাবে। এছাড়া টানেলের ভেতরে অনেকগুলো জরুরি বহির্গমনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অর্থাৎ উপরে যদি কোনো সমস্যা হয় তাহলে টানেলের নিচের দিকে চলে যাওয়া যাবে। যেদিক দিয়ে গাড়ি চলবে তার নিচের আরেকটি লেবেল রয়েছে যেটি একটি টিউবের মতো। মানুষজন খুব সহজেই সেই জরুরি বহির্গমন দিয়ে দ্রুত নিচে চলে যেতে পারবেন। তারপর দুই প্রান্ত দিয়ে উঠে যেতে পারবেন।

বঙ্গবন্ধু টানেল প্রকল্পের মোট দৈর্ঘ্য ৯.৩৯ কিলোমিটার। টানেলের পূর্ব-পশ্চিম প্রান্তে ৫.৩৫ কিলোমিটার অ্যাপ্রোচ রোড আর ৭২৭ মিটার ওভারব্রিজ রয়েছে।

মো. মনজুর হোসেন বলেন, টানেলের ব্যাস যদি বাইরের দিক থেকে হিসাব করি তাহলে ১১.৮০ মিটার। আর ভেতরে হলো ১০.৮০ মিটার; ভেতরে এটি এক মিটার পুরু। এখানে বোরিং করতে হয়েছে ১১.৮০ মিটারের বেশি। সেই কারণে আমাদের দুটো টিউব করতে হয়েছে। একটা টিউব করতে গেলে কিন্তু বিশাল হয়ে যাবে। অর্থাৎ, কারিগরি দিক বিবেচনা করেই দুটো টিউব করা হয়েছে।

২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং যৌথভাবে বঙ্গবন্ধু টানেলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। প্রকল্পের ঠিকাদার হিসেবে কাজ করছে চায়না কমিউনিকেশনস কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রথম টানেল টিউবের কাজের উদ্বোধন করেন।

বর্তমানে প্রকল্পের খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৬৮৯.৭১ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ও চীন সরকারের যৌথ অর্থায়নে টানেল প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। চীনের এক্সিম ব্যাংক দুই শতাংশ সুদ হারে ঋণ দিচ্ছে ৫ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা এবং বাকি অংশের অর্থায়ন করছে বাংলাদেশ সরকার।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন