হোম অর্থ ও বাণিজ্য দিনাজপুর: ক্ষুদ্র শিল্পে অপার সম্ভাবনা, দিনে মজুরি ১০০০ টাকা

বাণিজ্য ডেস্ক:

দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার রানীরবন্দর বাজার। দেখলে মনে হবে গাজীপুর বা সাভারের পোশাক শিল্পের আদলে গড়ে উঠেছে ছোট ছোট গার্মেন্টস। এসব ক্ষুদ্র পোশাক কারখানাগুলোতে শ্রমিকরা দিনে ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা মজুরি পাচ্ছেন। এতে বদলে যাচ্ছে এখানকার আর্থসামাজিক অবস্থা।

তবে ব্যবসায়ী সংগঠন দিনাজপুর চেম্বার মনে করে নতুন ও পুরানো পোশাক তৈরির ক্ষুদ্র শিল্পের অপার সম্ভাবনা রয়েছে এ অঞ্চলে।

সরেজমিনে উপজেলার রানীরবন্দর বাজার এলাকায় ক্ষুদ্র পোশাক কারখানাগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, এসব কারখানায় কেউ কাটছেন কাপড়। কেউবা মেশিনে সেলাই করছেন। সব কাজ শেষে লাগানো হচ্ছে বোতাম ও চেইন। কেউবা করছেন পোশাক আয়রন।

প্রশিক্ষণ নিয়ে এলাকার বেকার সব বয়সের মানুষ নিয়ে গড়ে ওঠা ক্ষুদ্র পোশাক কারখানাগুলোতে পোশাক তৈরিতে কর্মব্যস্ততা তুঙ্গে। কারখানার সেলাই মেশিনের শব্দই বলে দিচ্ছে কারিগরদের কর্মব্যস্ততা। এসব কারখানায় সব বয়সের মানুষের জন্য বাহারি ডিজাইনের জ্যাকেট থেকে শুরু করে মেয়েদের হাল ফ্যাশনের শীতের পোশাক তৈরি হচ্ছে। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ থেকে কাপড়সহ অন্যান্য কাঁচামাল এনে পোশাক তৈরি করেন ক্ষুদ্র পোশাক শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা।

গ্রামীণ শহর রানীরবন্দরে সুমাইয়া গার্মেন্টস ও মা গার্মেন্টসে পলাশ মহন্ত, মনির হোসেন, অহিদুল ইসলাম ও আনোয়ার হোসেনসহ একাধিক শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দরজায় কড়া নাড়ছে শীত। এজন্য তারা শীতবস্ত্র তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন। বাজার ধরতে বর্তমানে শার্ট-প্যান্ট, রেডিমেট শার্টসহ অন্যান্য পোশাক তৈরি ছেড়ে দিয়ে তারা শীতের পোশাক তৈরি করছেন। তারা শীতের পোশাক তৈরি করে থরে থরে সাজিয়ে রাখছেন। এসব কারখানায় প্রোডাকশনের ওপর কাজ করে থাকেন।

একজন শ্রমিক দৈনিক ৮-১০টি জ্যাকেট তৈরি করতে পারেন। এতে তারা দৈনিক ৮০০-১০০০ টাকা আয় করছেন। একজন দক্ষ শ্রমিক প্রতিমাসে ২৫-৩০ হাজার টাকা আয় করেন। শীতের পোশাকের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় শ্রমিকরাও ভালো মজুরি পাচ্ছেন। বেকার সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি এ অঞ্চলের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে ক্ষুদ্র পোশাক কারখানাগুলো।

মুজাহিদ গামেন্টের মামনুর রশিদ এবং মা গামেন্টের আতিয়ার রহমান জানান, এসব কারখানায় তৈরি হওয়া শীতের পোশাক পাঠানো হয় নীলফামারী, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, রংপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া, টাঙ্গাইলসহ বিভিন্ন জেলার পাইকারি বাজারে।

ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান দিনাজপুর চেম্বার সভাপতি রেজা হুমায়ুন ফারুক চৌধুরী জানান, এসব পোশাক শিল্প সরকারি সহযোগিতা পেলে এ অঞ্চলে আর্থসামাজিক উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখবে।

দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলা রানীরবন্দর বাজারে গড়ে ওঠা ছোট বড়সহ ১৮টি ছোট গার্মেন্টসে কাজ করেন ৬৪৮ জন কারিগর। এ মৌসুমে অন্তত ৭ কোটি টাকার ব্যবসা হবে বলে আশা ক্ষুদ্র গার্মেন্টস মালিকদের।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন