হোম খুলনাযশোর দর্শনার্থীদের সমাগমে জমজমাট মধুমেলা

দর্শনার্থীদের সমাগমে জমজমাট মধুমেলা

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 80 ভিউজ

অনলাইন ডেস্ক:

হাজারো দর্শক-শ্রোতা ও সুধীর সমাগমে জমজমাট মধুমেলা। সেইসঙ্গে মেলাকে ঘিরে কেশবপুর উপজেলা জুড়েও বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। কপোতাক্ষ নদের পাড়ে এ মেলা এখন এ অঞ্চলের মানুষের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে।

মহাকবির জন্মদিন ২৫ জানুয়ারি হলেও ১৯ জানুয়ারি থেকে যশোর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এবং সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় কবির জন্মভূমি সাগরদাঁড়িতে শুরু হয়েছে ৯ দিনব্যাপী মধুমেলা। চলবে ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত। মধুভক্তদের বিনোদনের জন্য মেলায় যাত্রা, সার্কাস, যাদু প্রদর্শনী, বিচিত্রা অনুষ্ঠান, মৃত্যুকূপ, নাগরদোলাসহ বিভিন্ন আয়োজন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে নানা পণ্যের পসরা নিয়ে বসেছেন মৌসুমী ব্যবসায়ীরা।

এ বছর শুক্রবার মেলার উদ্বোধন হওয়ায় প্রথমদিন থেকেই জমজমাট এ মেলা। মেলায় কেবল যশোর নয় আশপাশের বিভিন্ন স্থান থেকে দলে দলে এসেছেন নানা বয়সের মানুষ। মেলাকে উপলক্ষে আসলেও দর্শনার্থীরা বলছেন কবির বাস্তুভিটা দেখাই মূল উদ্দেশ্য। আর স্থানীয়দের দাবি মেলাকে ঘিরে তাদের এলাকায় আত্মীয় স্বজনের আগমন বেড়েছে। যে কারণে মেলা জমজমাট হয়ে উঠেছে। মেলায় আনন্দ উপভোগের পাশাপাশি কেনাকাটাও করছেন দর্শনার্থীরা। প্রথম দিনে বেচা কেনা ভালো হওয়ায় খুশি দোকানিরা।

জাহান আলী নামে এক দর্শনার্থী খুলনা থেকে পরিবারসহ এসেছেন মধুমেলা দেখতে। তিনি বলেন, ‘প্রতিবছরই আসি। অন্য বছর অফিস ছুটি নিয়ে আসতে হয়। এবার শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছি।’

মেহেরপুরের সালমা বেগম নামে এক দর্শনার্থী বলেন, ‘মধুকবির বাড়ি দেখতেই সাগরদাঁড়ি আসা। তবে বাড়তি হিসেবে মেলা পেয়ে গেলাম। ঘুরছি, দেখছি, অনেক ভালো লাগছে।’

বিথিকা সরকার নামে আরেক দর্শনার্থী বলেন, ‘আমরা সাতক্ষীরা থেকে এসেছি। আসতে কষ্ট হলেও এখানে এসে সে কষ্টটা ভুলে গিয়েছি। বাচ্চারা নাগরদোলায় চড়ছে, সার্কাস দেখছে, আমাদেরও অনেক ভালো লাগছে।’

তাহিরা নামে এক শিশু দর্শনার্থী বলে, ‘আমি বাবা মায়ের সাথে এসেছি। মেলায় এসে অনেক ঘোরাঘুরি করেছি, অনেক রাইডে উঠেছি। বেশ আনন্দ হয়েছে।’

মধুমেলায় কসমেটিকসের স্টল দিয়েছেন ঝিনাইদহের আক্তার হোসেন নামে এক ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিবছরই দোকান দেই। আমরা তো বড় বড় মেলাগুলোকে টার্গেট করি বড় অংকের বেচাকেনার জন্য। এ বছর মধুমেলা জমজমাট হচ্ছে। শুক্রবার মেলার উদ্বোধন হওয়ায় প্রচুর মানুষ পাওয়া গিয়েছে। প্রথম দিন থেকেই বেচাকেনা খুব ভালো।’

দেলোয়ার হোসেন নামে আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ‘এবার মেলা দুই দিন বৃদ্ধি করা হয়েছে। এজন্য আমরা লাভের আশা করছি। তবে স্টলের ভাড়া অনেক বেশি।’

এদিকে এ বছরও মধুকবির জন্মভিটায় একটি সাংস্কৃতিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় ও জেলার সাংস্কৃতিক কর্মীরা। মধুমেলা উদযাপন কমিটির সদস্য এমএ হালিম বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে এ সাগরদাঁড়িতে একটি সাংস্কৃতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি করে আসছি। এবছরও আমরা একই দাবিটি তুলে ধরছি।’

যশোর শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মাহমুদুল হাসান বুলু বলেন, ‘আমাদের সাংস্কৃতিক কর্মীদের প্রাণের দাবি মধুকবির এই স্মৃতি বিজড়িত জন্মস্থানে সাগরদাঁড়িতে তার নামে একটি সংস্কৃতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হোক। বাংলা সাহিত্যে মাইকেল প্রাসঙ্গিক। আমরা চাই এই প্রাসঙ্গিকতাকে শুধু সাগরদাঁড়িতে আটকে না রেখে সারা বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে।’

এদিকে মেলার আয়োজক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তুহিন হোসেন জানিয়েছেন, দর্শনার্থীদের মনোরঞ্জনে উন্মুক্ত মঞ্চে নাটক নাচ গানসহ সব ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, এবারের মেলায় কুঠির শিল্প ও গ্রামীন পসরার প্রায় ৩ শতাধিক স্টল বসেছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন