হোম অন্যান্যশিক্ষা ডি-নথি বাস্তবায়ন একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ: শিক্ষামন্ত্রী

শিক্ষা ডেস্ক:

স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে আধুনিক, দক্ষ এবং সেবামূলক জনপ্রশাসন গড়ে তুলতে ও তথ্য প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে দাফতরিক নথি ব্যবস্থাপনা ও রেকর্ড সংরক্ষণে ডি-নথি (ডিজিটাল নথি) বাস্তবায়ন একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।

রোববার (১৩ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) মিলনায়তনে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহকে ডি-নথির দ্বিতীয় পর্বের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এবং সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের সার্বিক নির্দেশনায় প্রযুক্তিবান্ধব নানা উদ্ভাবন ও সেবা তৈরির মাধ্যমে ইতোমধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ডি-নথি চালু করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আপনি দেশের যে প্রান্তেই থাকেন আপনার প্রয়োজনীয় তথ্য ব্যবহার করতে পারছেন, দেখতে পাচ্ছেন। এটিই ডি-নথি বাস্তবায়নের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই ডি-নথি যেন শুধু ব্যবহারের জন্য ব্যবহার না হয়, যথাযথ কাজে ব্যবহার হয়।

আগস্ট মাস, শোকের মাস উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্ট দুই দিনই আমাদের জন্য কালো অধ্যায়। ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল। তাকে তখন সে সময়ে হত্যা না করলে বাংলাদেশ অতি উচ্চতায় পৌঁছে যেত। আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করে দিতেই সে হত্যাকাণ্ড চালানো হয়। বাংলাদেশ যেন আর ঘুরে না দাঁড়ায় সেটিই তারা চেয়েছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা তাদের ভুল প্রমাণ করে বাংলাদেশকে ডিজিটাল ও স্মার্ট হিসেবে তৈরি করে ঘুরে দাঁড় করিয়েছেন।

তিনি বলেন, ২০৪১ সালে বাংলাদেশ যে জায়গায় থাকার কথা সেই জায়গায় বাংলাদেশ এখনই থাকতে পারতো যদি ব্ঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা না হতো। বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে যেত। শেখ হাসিনা তার আদর্শকে লালন করে সেদিকেই এগোচ্ছেন। ডিজিটাল তথ্য প্রযুক্তির যুগে এগিয়ে গেছি।

এ সময় ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।

শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, ডি-নথি ব্যবহারকারীরাই অনেক সময় আগ্রহী থাকেন না, উদ্যোগী হন না। তাদের আগ্রহ বাড়াতে হবে। উদ্যোগী হতে হবে এবং ডি-নথি ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

মহিবুল হাসান বলেন, যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় নতুন করে ডি-নথিতে যুক্ত হলো তাদেরকে নিজেদের কাজ করার মানসিক রাখতে হবে। শিক্ষার্থীদের এ কাজে সম্পৃক্ত করতে হবে। তারা যেন নিজেরাই যেন নিজেদের সমস্যা বের করে সমাধান করতে পারেন।

প্রশাসনিক কাজের অতি গুরুত্বপূর্ণ ফাইলগুলো ছাড়া আর সবই যেন ডিজিটাল নথির আওতায় নিয়ে আসা যায় সে লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কাজ করবে বলেও জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশে পদার্পণ করছি। ডিজিটাল নথি বাস্তবায়ন করা গেলে ফাইলের স্তূপ কমবে, সেবা প্রত্যাশীরা স্মার্ট সেবা পাবেন এবং ভোগান্তি কমে যাবে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ডিজিটাল নথি বাস্তবায়নে আন্তরিক হওয়ার পরামর্শ দেন।

পেপারলেস অফিস প্রতিষ্ঠার অংশ হিসেবে দ্বিতীয় ধাপে ডি-নথির (ডিজিটাল নথি) সাথে যুক্ত হলো দেশের আরও ১০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। এই নিয়ে মোট ১৮টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ডি-নথি কার্যক্রম শুরু হলো।

নতুন যে ১০টি বিশ্ববিদ্যালয় ডি-নথিতে প্রবেশ করলো: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস্ (বিইউপি), রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. নূরুল আলম অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামান। ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট, কমিউনিকেশন অ্যান্ড ট্রেনিং বিভাগের উপ-পরিচালক মো. মনির উল্লাহ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর, প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়; শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়; জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়; খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়; জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়; যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়; বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়; বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস এবং রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য; এবং ইউজিসি’র ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট, কমিউনিকেশন অ্যান্ড ট্রেনিং বিভাগের পরিচালক ড. সুলতান মাহমুদ ভূইয়াসহ ইউজিসি, এটুআই এবং বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

উল্লেখ্য, এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রথম ধাপে দেশের ৮টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ডি-নথি কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন