নিজস্ব প্রতিনিধি :
তীব্র যানজট এখন নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে সাতক্ষীরা শহর।সাতক্ষীরা শহরের কেষ্ট ময়রার মোড় থেকে তুফান কোম্পানি মোড়ে ইজিবাইকে এ পথ পার হতে সর্বোচ্চ ২-৩ মিনিট সময় লাগার কথা।যানজটের কারণে সময় লেগে যায় ৩০ থেকে ৪০ মিনিট।১৯ই জুন রবিবার সকাল ১১:৪০ ঘটিকায় স্বজমিনে দেখতে মটর সাইকেল যোগে পার হতে সময় লাগছে ৩০ মিনিট। এছাড়া যানজটের কারণে যানবাহন দাঁড়িয়ে থাকায় যাত্রীরা সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। ফুটপাত না থাকায় মানুষ হেঁটেও যাতায়াত করতে পারছে না।
তবে শহরবাসী এই যানজটের জন্য পৌরসভা ও ট্রাফিক পুলিশের ব্যর্থতাকেই দায়ী করছেন।এদিকে দীর্ঘ যানজটে পড়ে যাত্রীরা যেমন ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে তেমনি যানবাহন চালকরাও।
দেশের প্রথম শ্রেনীর সাতক্ষীরা পৌরসভা ১৮৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ৩১ দশমিক ১০ বর্গকিলোমিটার আয়তনে।যার জনসংখ্যা প্রায় দুই লক্ষ।পৌরসভায় ২০১ কিলোমিটার পাকা সড়কের মধ্যে শহরের মধ্যে পড়েছে ৩০ কিলোমিটার সড়ক।
সাংবাদিক নেতা শরীফুল্লাহ কায়সার সুমন বলেন রাধানগর ব্রিজ সংলগ্নে ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় যানজট সৃষ্টি হয়।সকাল ১১ঃ৪০ ঘটিকা থেকে প্রায় ৩৫ মিনিট অপেক্ষা অপেক্ষা করলেও আমার সাথে কোন ট্রাফিকের পুলিশের দেখা হয়নি ।যানজটের কারণে মাঝে মধ্যে এই পথে যেতে সময় লাগে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট।প্রায় প্রতিদিন এ পথে আসা-যাওয়া করতে আমার ১ ঘণ্টার বেশি সময় নষ্ট হয়।সড়কের দুই পাশ দিয়ে বিদ্যুতের খুঁটি দখল করে রেখেছে অনেক জায়গা। সড়কে প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, ট্রাক, যাত্রীবাহী বাসসহ অন্যান্য যানবাহন অনিয়ন্ত্রিতভাবে চলাচল করছে। এতে শহরে যানজট হচ্ছে। শহরের শহীদ নাজমুল সরণি, শহীদ কাজল সরণি, শহীদ সিরাজ সরণি, সাতক্ষীরা-কালীগঞ্জ সড়কের শহীদ আলাউদ্দিন চত্বর থেকে ইটেগাছা পর্যন্ত, সাতক্ষীরা-যশোর সড়কের নিউ মার্কেট থেকে সার্কিট হাউস মোড় পর্যন্ত, তুফান মোড়, সুলতানপুরের কেষ্টময়রার মোড়, বড়বাজার মোড়, পুরাতন সাতক্ষীরায় যানজট অত্যন্ত বেশি থাকছে।এ কারণে শহরবাসীর একদিকে মূল্যবান সময় নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে তারা চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে। শহরের একাধিক স্থানের যানজট ছড়িয়ে পড়ে পুরো শহরে। যাত্রীদের চরম ভোগান্তি চলমান থাকলেও সংশ্লিষ্টদের টনক নড়ছে না। বছরের পর বছর ধরে এমন দুর্ভোগ চলে আসলেও তা নিরসনে কার্যকরী কোন পদক্ষেপ দেখতে পাচ্ছি না।
বাংলাদেশ মানবাধিকার ফাউন্ডেশন জেলা শাখার সভাপতি এড.এস এম শরীফ আজমীর হুসাইন রোকন বলেন সাতক্ষীরা পৌর এলাকায় তীব্র যানযটের অন্যতম কারণ হচ্ছে বাস, অটোরিকশা দাঁড় করিয়ে যাত্রীদের ওঠানো ও নামানো। অবৈধভাবে ইজিবাইক ও ব্যাটারিচালিত ভ্যান চলাচল, যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং, সড়কের প্রস্থ কম হওয়া এবং পাশে ফুটপাত না থাকা সহ গত ৫০ বছর পূর্বে রাস্তা ঘাট যেমন ছিল আজও তেমনই আছে। শহরের কোন রাস্তার প্রস্থ বাড়ানো হয়নি। তাছাড়া ভাঙাচোরা রাস্তার কারনে ধীর গতিতে চলাচলের কারনে যানজট আরো বেশি হচ্ছে।
সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক ও সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মোঃ আনিসুর রহিম বলেন সাতক্ষীরায় ১৫-২০ গুন জনসংখ্যা বেড়ে গেলেও রাস্তাঘাট চওড়া হয়নি।বরণ অবৈধ্য দোকান পাট এমন ভাবে রাস্তা কে দখল করে নেছে এবং তাদের দোকানের সামনে সাইনবোর্ড, মোটরসাইকেল রাখে যে কারনে আরও বেশি যানজট তৈরি হয়। জনসংখ্যা বাড়লেও রাস্তা চওড়া না করে বরণ ফুটপাতে ছোট ছোট দোকান বসিয়ে রাস্তা দখল করছে ফলে যানজট হচ্ছে।এছাড়া যেখানে পুলিশ থাকার দরকার সেখানে কোথাও পুলিশ থাকে না।যেখান যানজট হয় সেখানে পুলিশ থাকা উচিত।সাতক্ষীরায় যানজট ক্রমশিক যেভাবে দিন দিন বাড়ছে তাতে জীবন অতিষ্ট হয়ে যাবে।সাতক্ষীরা পৌর কতৃপক্ষ ও পুলিশ প্রশাসন সকলে এব্যাপারে এগিয়ে আসার অনুরোধ জানাচ্ছি।
সাতক্ষীরা পৌর সভার নব নিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত মেয়র কাজী ফিরোজ হাসান বলেন ব্যাটারি চালিত ভ্যান এবং ইজিবাইকের কারনে যানজট হচ্ছে।আমরা সর্ব মহলে আলোচনা করে আপনাদের সকলের সহযোগিতায়ফুটপাট এবং যানজট মুক্ত পরিচ্ছন্ন শহর গড়ে তুলবো।
জেলা ট্রাফিক ইনচার্জ শ্যামল মুখার্জি বলেন, আমাদের জনবল কম থাকায় সব জায়গায় ট্রাফিক দিতে পারছি না। কেষ্ট ময়রার ব্রিজ আমাদের নজরে আছে ওখানে নিয়মিত ট্রাফিক দেওয়া হয় না দায়িত্বরত অফিসার ওখানে মাঝে মাঝে দেখে আসেন। তবে ঈদের আগে পরে আমরা ওখানে ট্রাফিক দিয়েছি।যেহেতু নতুন করে অভিযোগ পেয়েছি সুতরাং ওখানে দ্রুত নিয়মিত ট্রাফিক রাখার ব্যবস্থা করবো।গাড়ি পাকিং করে যাহাতে যানজট না হয় সেদিকে আমরা নজর রাখবো।অবৈধ্য যানবাহন চালকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা চলমান থাকবে।সাথে সাথে সকল পথচারীদের সচেতন সহ যানজট নিরসনে ট্রাফিক কে সহযোগিতা করতে সকলকে অনুরোধ করছি।