হোম এক্সক্লুসিভ ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে টেলিফোনের ৬ শত লাইনের ডিজিটাল গ্রাহক দাড়িয়েছে মাত্র ১৪৬ টিতে

শিপলু জামান, ঝিনাইদহ:

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শহরের বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানির লিমিটেডের কালীগঞ্জ ডিজিটাল টেলিফোন এক্সচেঞ্জের প্রাচীর বেষ্টিত দ্বীতল ভবনের অফিস অবস্থিত। দেখতে চাকচিক্য হলে ও বর্তমানে অনেকটা অচল অবস্থার অফিসের কার্যক্রম ধীর গতিতে চলছে। এ অফিসে কোন গ্রাহকদের আনাগোনা ও কাজের তোড়জোড় নেই। কালীগঞ্জ টেলিফোন অফিসটি ১৯৯৪ সালে ৬ শত লাইনের ডিজিটাল গ্রাহকের সংখ্যা ছিল। বর্তমানে গ্রাহক সংখ্যা দাড়িয়েছে মাত্র ১৪৬ টিতে। বর্তমানে চালু থাকা সংযোগ গুলোর মধ্যে আবার অধিকাংশ সংযোগই সরকারি দপ্তর সমূহের এবং সাধারন গ্রাহকের সংখ্যা খুবই কম।

চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি উপজেলার বিআরডিবি অফিসে দেওয়া হয়েছে সর্বশেষ সংযোগ। এ বছর নতুন করে কোন গ্রাহক সংযোগ নেয়নি। যেখানে ৬০০ গ্রাহক ছিল সেখানে এখন মাত্র ১৪৬ টি গ্রাহক রয়েছে। টেলিফোন থেকে টেলিফোনে কল চার্জ সম্পূর্ণ ফি এবং প্রতি বছর ১৭৩ টাকা মাসিক চার্জ দিতে হয় এসব গ্রাহকদের। টেলিফোন থেকে মোবাইলে বা মুঠোফোনে কলরেট মিনিট প্রতি মাত্র ৫২ পয়সা। বর্তমানে কালীগঞ্জ টেলিফোন এক্সচেঞ্জ অফিসে মাত্র তিনজন ব্যাক্তি কর্মরত থেকে এ অফিসের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

কর্মরত ব্যক্তিরা হলেন, ইনচার্জ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, লাইনম্যান মশিয়ার রহমান ও জাহিদুল ইসলাম। দীর্ঘদিন এ ৩ জন কালীগঞ্জ অফিসে গ্রাহক সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। উপরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ অফিসের সেবার মান বৃদ্ধির জন্য কোন উদ্যোগ গ্রহন করেন না। বর্তমানে কালীগঞ্জ টেলিফোন লাইন রক্ষণাবেক্ষণের অভাব, জনবল সংকট, আধুনিক সেবা প্রদানে কর্তৃপক্ষের উদ্যোগ গ্রহন না করা ও পুরাতন যন্ত্রাংশের কারণেই টেলিফোনের আজ এই করুণ অবস্থা। কালীগঞ্জ শহরের বেশ কয়েকজন ব্যাক্তি নতুর সংযোগ নেওয়ার জন্য অফিসে গিয়ে কাউকে না পেয়ে ফিরে আসেন। যে কারণে সে সব ব্যাক্তিরা টেলিফোনের নতুন সংযোগ নিতে পারেননি। এ অফিসে প্রতিদিন কাউকে পাওয়া যায় না, অধিক সময় অফিসটি বন্ধ থাকে। দেখলে মনে হয় এ অফিসে কেউ চাকরি করে না। বিদ্যুতের লাইট অনেক সময় দিনের পর দিন জলতেই থাকে। দায়িত্বরত ব্যাক্তিরা নিয়মিত তাদের কর্মস্থলে আসে না। যে কারণে বিদ্যুতের লাইট গুলো জলতেই থাকে। কোন কিছু সমস্যা হলেই যোগাযোগ করতে হয় ঝিনাইদহ অফিসে। কালীগঞ্জ টেলিফোন এক্সচেঞ্জ অফিসের মাধ্যমে এডিসিএল সংযোগ প্রদান করা হলেও তার গ্রাহক সংখ্যা মাত্র ৩ জন। এই ৩ জন গ্রাহকের মধ্যে উপজেলা সমাজসেবা অফিস,অন্য ব্যাক্তিরা হলেন আনারুল কবির এবং হাফিজুর রহমান রহমান।

কালীগঞ্জ টেলিফোন এক্সচেঞ্জ অফিস থেকে এ ডি সি এল এর সংযোগ নেওয়া গ্রাহক হাফিজুর রহমান বলেন, তিনি টেলিফোন এক্সচেঞ্জ অফিস থেকে ৫,শ এমবিবিএস ইন্টারনেট প্যাকেজ নিয়েছে। সার্ভিস ভালো পাচ্ছেন। এক সময়ে এ অফিসে ১৮/২০ জন চাকরি করতেন। অফিস টি দিন রাত ২৪ ঘন্টা কর্মরত ব্যাক্তিরা থাকতেন, সাথে একটি টেলিগ্রাম অফিস চালু ছিল।

কালীগঞ্জ টেলিফোন এক্সচেঞ্জ অফিসের ইনচার্জ মোঃ সালাউদ্দিন জানান, আমাদের জনবল খুবই কম থাকায় গ্রাহক সেবা ঠিকমত দিতে পারছি না। মোবাইল ফোন চলমান থাকায় সাধারন মানুষ টেলিফোন তেমন টা ব্যবহার করতে চায় না। অনেক গ্রাহক তাদের টেলিফোন বিকল হয়ে পড়ে থাকলে ও সচল করতে চায় না। ক্রমান্বয়ে গ্রাহক সংখ্যা কম হয়ে যাচ্ছে।

ঝিনাইদহ বিটিসিএল অফিসের অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার আবু জাহিদ বলেন, টেকনোলজি আপগ্রেড করা হচ্ছে। ঝিনাইদহ জেলা শহরে জিপিওএন সার্ভিস চালু করা হয়েছে। সর্বাধুনিক টেকনোলজি সমৃদ্ধ হাইস্পিড ইন্টারনেট এবং টেলিফোন সংযোগ নিতে জেলা শহর গুলোতে গ্রাহকদের মধ্যে ইতিমধ্যেই ভালো সাড়া মিলেছে। উপজেলা শহরে চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে, অচিরেই চালু করা হবে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন