আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
ঘোষণা করা হয়েছে এ বছরের শান্তির নোবেল। এবার যৌথভাবে এ পুরস্কার পেয়েছেন বেলারুশের মানবাধিকারকর্মী অ্যালেস বিয়ালিয়াৎস্কি, রাশিয়ার মানবাধিকার সংগঠন মেমোরিয়াল ও ইউক্রেনের মানবাধিকার সংগঠন সেন্টার ফর সিভিল লিবার্টিস (সিজিএস)।
বিয়ালিয়াৎস্কি বেলারুশের একজন খ্যাতনামা মানবাধিকারকর্মী। বয়স ৬০ বছর। বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন তিনি। কর ফাঁকি দেয়ার অভিযোগে ২০২১ সালে তাকে গ্রেফতার করা হয়। কারাবন্দি অবস্থায় তাকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেয়া হলো।
বেলারুশীয় সাহিত্যে পণ্ডিত বিয়ালিয়াৎস্কি ১৯৮৪ সালে হোমিয়েল স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক পাস করেন। এরপর ১৯৮৫-৮৬ সাল পর্যন্ত দুই বছরের জন্য বেলারুশ সেনাবাহিনীতে সামরিক যানচালক হিসেবে কাজ করেন।
সেনাবাহিনীর চাকরি ছেড়ে দিয়ে স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক দেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সোভিয়েতবিরোধী আন্দোলনে যোগ দেন। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন পতনের মধ্য দিয়ে স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে বেলারুশ।
স্বাধীনতার কয়েক বছর পর বেলারুশে ভিয়াসনা হিউম্যান রাইটস সেন্টার নামে একটি মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিষ্ঠা বিয়ালিয়াৎস্কি। সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯৬ সালে। বেলারুশের রাজপথে বিক্ষোভকারীদের ওপর দেশটির একনায়ক আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর বাহিনীর নৃশংস দমন-পীড়নের পরিপ্রেক্ষিতে এর প্রতিষ্ঠা।
ভিয়াসনা শব্দের অর্থ বসন্ত। সংগঠন হিসেবে ভিয়াসনা হিউম্যান রাইটস সেন্টার মূলত কারাবন্দি বিক্ষোভকারী ও তাদের পরিবারগুলোকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করত। একই সঙ্গে রাজনৈতিক বন্দিদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন নথিভুক্ত করাও ছিল এর অন্যতম কাজ।
শুক্রবার (৭ অক্টোবর) পুরস্কার ঘোষণার সময় বিয়ালিয়াৎস্কি সম্পর্কে নোবেল কমিটি বলেছে, ‘তিনি তার দেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় নিজের পুরো জীবন উৎসর্গ করেছেন।’
গণতন্ত্র ও মানবাধিকার সুরক্ষার আন্দোলন করতে গিয়ে দুবার গ্রেফতার ও কারাদণ্ড ভোট করেছেন বিয়ালিয়াৎস্কি। প্রথমবার ২০১১ সালে কর ফাঁকির অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন। এই অভিযোগে তাকে কারাদণ্ড দেয়া হয়। ২০১৪ সালে তিনি কারামুক্তি পান।
এরপর বেলারুশে কারচুপির নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক বিক্ষোভের জেরে ২০২০ সালে দ্বিতীয়বার আটক করা হয় তাকে। এ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় থেকে যান লুকাশেঙ্কো। এবারও তার বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অভিযোগ আনা হয়।
এ অভিযোগে সাত বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়। সেই থেকে কারাগারেই রয়েছেন তিনি। নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটির চেয়ার বেরিট রেইস-অ্যান্ডারসেন বলেন, অ্যালেস বেলারুশে মানবাধিকারের জন্য তার লড়াইয়ে এক ইঞ্চিও ছাড় দেননি।