হোম অন্যান্যসারাদেশ জাসদ কার্যালয় হচ্ছে মসজিদ ও আ.লীগ কার্যালয় হচ্ছে ‘আবু জাহেল টয়লেট’

জাসদ কার্যালয় হচ্ছে মসজিদ ও আ.লীগ কার্যালয় হচ্ছে ‘আবু জাহেল টয়লেট’

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 13 ভিউজ

অনলাইন ডেস্ক:
বগুড়া শহরের সাতমাথায় গুঁড়িয়ে দেওয়া জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (ইনু) কার্যালয়ের জায়গায় ‘আবু সাঈদ জামে মসজিদ’ ও পাশে জেলা আওয়ামী লীগের জায়গায় ‘আওয়ামী আবু জাহেল টয়লেট’ নির্মাণের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা এই ঘোষণা দিয়ে সেখানে ব্যানার ঝুলিয়ে দেন।

বৈষম্যবিরোধীদের পক্ষে ডা. আবদুল্লাহ সানি বলেন, জুলাই বিপ্লবে শহীদ আবু সাঈদের নামে এখানে ‘শহীদ আবু সাঈদ জামে মসজিদ’ স্থাপন করা হবে। এর আগে ওই জায়গার মালিকানা দাবি করে এক ব্যক্তির লাগানো ব্যানার খুলে ফেলা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিপুল সংখ্যক তরুণ-যুবক ‘ছাত্র-জনতার’ নামে শহরের আদালতপাড়ায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রবেশ করেন। তারা ১২তলা ভবনের নিচতলায় শেখ হাসিনার নামফলক হাতুড়ি দিয়ে ভেঙে ফেলেন। রাত ৮টার দিকে স্টেশন রোড, নবাববাড়ি সড়ক দিয়ে দুই শতাধিক বিক্ষুব্ধ মানুষ ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা-ঢাকা’ ‘ভুয়া ভুয়া’ ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে শহরের সাতমাথা সংলগ্ন টেম্পল সড়কে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে আসেন।

তারা হামলা চালিয়ে হাতুড়ি-শাবল দিয়ে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেন। এরপর তারা পাশেই জেলা জাসদ ও শ্রমিক জোট কার্যালয় ভাঙচুর করেন। পরে তারা অফিসের ভেতর থেকে আসবাবপত্র বাইরে বের করে আগুন ধরিয়ে দেন। পাশেই ১৩২ বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী টাউন ক্লাবও ভাঙচুর করা হয়। এরপর শহরের কবি নজরুল ইসলাম সড়কে জেলা জাতীয় পার্টি কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও আসবাবপত্র বাইরে এনে আগুন দেওয়া হয়। রাত ৯টার পর এক্সকাভেটর মেশিন এনে আওয়ামী লীগ, জাসদ (ইন) ও জাতীয় পার্টি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের কার্যালয় গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়া টেম্পল রোডে থাকা টাউন ক্লাব ও জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সুলতান মাহমুদ খান রনির ব্যক্তিগত কার্যালয়ও গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।

এদিকে গুঁড়িয়ে দেওয়া জাসদ কার্যালয়ের জায়গা নিজেদের দাবি করে কয়েকজন ব্যক্তি শনিবার দুপুরে সেখানে ব্যানার ঝুলিয়ে দেন। তাদের পক্ষে মিজানুর রহমান ও মোখলেসুর রহমান দাবি করেন, এ সম্পত্তি ১৯৫২ সালে তাদের দাদার কেনা। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় জায়গাটি বেহাত হয়। পরে জাসদ দলীয় কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করে। ওই জায়গায় রাজনৈতিক কার্যালয় থাকায় তারা এতদিন দখল নিতে পারেননি। এখন স্থাপনা ভেঙে ফেলায় দখল নিতে এসেছেন।

বগুড়া জেলা জাসদের (ইনু) সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম জানান, তারা ১৯৭২ সাল থেকে ওই জায়গায় আছেন ও প্রশাসনের কাছে লিজের জন্য আবেদন করেন। বগুড়া মোটর মালিক গ্রুপ মালিকানা দাবি করে মামলা করলেও সেটা খারিজ হয়ে যায়। ফলে তাদের লিজ গ্রহণ প্রক্রিয়া বিলম্বিত হয়েছে।

অন্যদিকে গুঁড়িয়ে দেওয়া জাসদ কার্যালয়ের জায়গায় মসজিদ স্থাপন প্রসঙ্গে ডা. আবদুল্লাহ সানি বলেন, জুলাই বিপ্লবের সর্বাধিনায়ক শহীদ আবু সাঈদের বাবা তার সন্তানের কোন মূর্তি না বানাতে অনুরোধ করেছিলেন। পারলে তার ছেলের নামে মসজিদ করতে বলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে শহরের সাতমাথার এ জায়গায় আবু সাঈদ জামে মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন। এ ছাড়া পাশেই আওয়ামী লীগের কার্যালয় থাকা জায়গায় ‘আওয়ামী আবু জাহেল টয়লেট’ নির্মাণ করা হবে। এ বিষয়ে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন