রাজনীতি ডেস্ক:
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিনই নির্বাচনী প্রচারে হিংসা-বিদ্বেষমূলক কর্মকাণ্ড চলছে। জাতীয় স্বার্থে এ ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে রাজনৈতিক দল ও নির্বাচন কমিশনকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সামাজিক সংগঠন প্রজন্মের চেতনা। শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে মানববন্ধনে বক্তারা এ আহ্বান জানান।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিদেশি মহলের ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। অনেকদিন ধরেই কূটনৈতিক ও বুদ্ধিজীবিরা একটি অবাধ-সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের কথা বলছেন। এই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য না হলে দেশের অভ্যন্তরে যেমন অস্থিরতা তৈরি হবে, তেমনি বিদেশের সাথে ব্যবসা-বাণিজ্যও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশংকা রয়েছে। তাই জাতীয় স্বার্থেই নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক এম এম রাশেদ রাব্বি বলেন, নির্বাচনী অঙ্গনে আওয়ামী লীগই আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ হওয়ায়, ইতোমধ্যেই সংঘাত-সংঘর্ষে জীবনহানীসহ বাড়ি-ঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনাও কম ঘটেনি। তপশিল ঘোষণার পর থেকে এ পর্যন্ত সারা দেশে নির্বাচনী সহিংসতায় যেসব হতাহতের ঘটনা ঘটেছে সেসব ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ গোলাম নবী হোসেন বলেন, আমরা নির্বাচন এলেই রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর থেকে শুনি দেশ এবং জনমানুষের সেবা আর প্রতিশ্রুতির কথা। দল পরিচালনায় প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীরা জনগণের রায় প্রার্থনা করেন এবং নির্বাচনি ইশতেহারে বক্তৃতা-বিবৃতিতে দুনিয়ার সবকিছু দিয়ে দেবার প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু তারাই নির্বাচন পেরোলে সংর্কীণ স্বার্থ ছাড়া সব কিছুই বেমালুম ভুলে যান। অধঃপতিত অভাগা এই দেশে ক্ষমতাবান দুর্বৃত্তদের স্বার্থসিদ্ধির অনুকূলে যে সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে, তাতে সামাজিক-রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অঙ্গনে বিচরণ করা নেতৃবৃন্দরা যদি ব্যক্তি স্বার্থ পরিহার করে জাতীয় স্বার্থে দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে মন-মানসিকতার পরিবর্তন করতে না পারেন; তাহলে ভবিষতেও গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার অগ্রযাত্রাকে অর্থবহ করা যাবে না এবং সুষ্ঠু অবাধ গ্রহণযোগ্য নির্বাচনও আর হবে না। তিনি বলেন, জনমানুষের সামাজিক-রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তিও আসবে না। দেশটি দিন দিন নৈরাজ্যর দিকেই যাচ্ছে জাতীয় অর্থনীতিও আজ হুমকির মুখে। তাই জাতীয় স্বার্থেই বিভিন্ন স্থানে সংঘাত-সংঘর্ষ ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের অবসানের জন্য সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য দরকার।
সংগঠনের ঢাকা মহানগর কমিটির আহ্বায়ক মো. ছালেক উর রহমান বলেন, ভোটের দিন যতই এগিয়ে আসছে নির্বাচনী অঙ্গনে হুমকি, ধমকি হিংসা-বিদ্বেষ ও সহিংস কর্মকাণ্ড বাড়ছে। প্রতিদিনই ক্ষতি হচ্ছে জান-মাল ও অর্থের। জাতীয় স্বার্থেই নাশকতা ও হিংসাত্মক কাজের সাথে জড়িত প্রকৃত ঘাতকদের চিহ্নিত ও শাস্তি নিশ্চিত করা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নৈতিক দায়িত্ব। যারা নির্বাচনী মাঠে আচরণবিধি লঙ্ঘনসহ সংঘাত-সংঘর্ষ সৃষ্টি করছে, তাদের বিরুদ্ধে দল মতের ঊর্ধ্বে উঠে নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো. মাসুদ আলম, ঢাকা মহানগর কমিটির আহ্বায়ক মো. ছালেক-উর-রহমান (সুমন), যুগ্ম আহ্বায়ক নিজাম উদ্দিন সরকার ও সদস্য মোহাম্মদ আবদুল আলীম, মো. শাহিন আলম ও মো. রবিউল আলম জুয়েল।