হোম ফিচার জনগণ চায় বলেই ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ: প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক :

গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও ভোটাধিকারের প্রশ্নে আপস করেননি দাবি করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জনগণ চায় বলেই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে। নির্বাচন বা প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই আজীবন ক্ষমতায় থাকার কোনো ইচ্ছা নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি।

সম্প্রতি বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

বিবিসির পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়, বাংলাদেশের বিরোধী নেতাকর্মীদের কেউ কেউ অভিযোগ করছেন, শেখ হাসিনা নির্বাচন কিংবা প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই আজীবন ক্ষমতায় থাকার স্বপ্ন দেখছেন?
 
জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘অবশ্যই না। নির্বাচন এবং ভোটাধিকারের জন্য আমি সারা জীবন সামরিক শাসকদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছি। নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠার জন্য আমরাই আইন করেছি। আমরা সবসময়ই চেয়েছি যেন মুক্ত ও স্বচ্ছ নির্বাচন হয়। এখন আমাদের ভোটার লিস্ট ছবিসহ তৈরি করেছি, আমরা স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সের ব্যবস্থা করেছি।’
গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ৯৬ শতাংশ ভোট পাওয়ার বিষয়টি অনেকটা ভ্লাদিমির পুতিনের ভোটের মতো, এ বিষয়ে জানতে চাইলে শেখ হাসিনা  বলেন, ‘আমাদের কাজের জন্যই মানুষ আমাদের ভোট দিয়েছে। আমরা তাদের জন্য কাজ করেছি। আমাদের ১৭০ মিলিয়ন মানুষ রয়েছে। আমাদের জনগণ রাজনৈতিক অধিকারের বিষয়ে সচেতন। আমরা ক্ষমতায় আসার পর দারিদ্র্য কমেছে, খাদ্য নিরাপত্তা বেড়েছে, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, গৃহায়ন সব মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হয়েছে।’
 
তাহলে মানুষ কেন (আমাদের) ভোট দেবে না, প্রশ্ন রাখেন প্রধানমন্ত্রী।
 
বিবিসির পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে বলা হয়, ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল যে জরিপ করেছে, সেখানে ৫০টি আসনের মধ্যে ৪৭টিতেই অনিয়ম দেখা গেছে। জাল ভোট, ভোটার ও বিরোধী এজেন্টদের বের করে দেয়ার মতোও অভিযোগ রয়েছে।
 
জবাবে সরকারপ্রধান বলেন, ‘তারা কি সেটা প্রমাণ করতে পেরেছে? কোথায় সেই প্রমাণ? আমি নথিপত্র দেখতে চাই। কারণ আমি বলছি, ২০০৮ সালের নির্বাচন নিয়ে তো কেউ অভিযোগ করেনি। ২১-দলীয় জোট, বিএনপি-জামায়াতে ইসলামী সব মিলিয়ে কতগুলো আসন পেয়েছিল? তিনশ আসনের মধ্যে মাত্র ২১টি। মানুষ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছিল। তারা আমাদের জোটকে ভোট দিয়েছে।’
 
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের তথ্যের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি জানি, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল এটা বলেছে। কিন্তু আমার তাদের স্বচ্ছতা নিয়েই সন্দেহ রয়েছে। আমি খোলাখুলিভাবেই বলছি।’
 
সাক্ষাৎকারে বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর ঢালাওভাবে কোনো নিপীড়ন চালানো হচ্ছে না দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
 
তিনি বলেন, যাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তারা মানুষ হত্যা করেছে, তারা মলোটভ ককটেল ছুড়েছে, তারা পাবলিক বাসে আগুন দিয়েছে। ৩৮০০ পাবলিক বাসের ভেতরে যাত্রীদের রেখেই আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। তারা সাধারণ মানুষ হত্যা করেছে, ট্রেন, লঞ্চ, প্রাইভেটকারে আগুন দিয়েছে।
 
‌‘ব্যবস্থাগ্রহণ সাধারণ দলীয় সমর্থকদের ক্ষেত্রে করা হয়নি। যারা হত্যা করেছে, মানুষকে নির্যাতন করেছে, দুর্নীতি করেছে–এই জন্য তারা শাস্তি পেয়েছে। আমি বুঝতে পারি না, তারা যেসব অপরাধ করেছে, কেন এসব সংগঠন (মানবাধিকার) সেটা দেখতে পাচ্ছে না,’ যোগ করেন শেখ হাসিনা।  
 
এ ছাড়া সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের নির্বাচন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা, রোহিঙ্গাসংকটসহ বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলেছেন। তিনি বিশ্ব সম্প্রদায়কে রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে সত্যিকারের পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানান।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন