হোম আন্তর্জাতিক ছয় সপ্তাহ ধরে অবরুদ্ধ গাজা, শেষ খাবারটুকুও ফুরিয়ে যাচ্ছে

ছয় সপ্তাহ ধরে অবরুদ্ধ গাজা, শেষ খাবারটুকুও ফুরিয়ে যাচ্ছে

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 18 ভিউজ

অনলাইন ডেস্ক:
মার্চের শুরু থেকেই গাজায় ঢোকার চেকপয়েন্টগুলো বন্ধ করে রেখেছে ইসরায়েল। ফলে ঢুকতে পারছে না ত্রাণবাহী ট্রাক। শীঘ্রই এই চেকপয়েন্টগুলো খোলা না হলে, ক্ষুধায় নিশ্চিতভাবেই মৃত্যু হবে বেশিরভাগ গাজাবাসীর।

গাজা উপত্যকার ২৩ লাখ বাসিন্দার জন্য সব ধরনের সরবরাহ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করার ছয় সপ্তাহ পার হয়েছে। বছরের শুরুতে যুদ্ধবিরতির সময় যেটুকু খাবার মজুত করা হয়েছিল তা প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। জরুরি খাবার বিতরণ থেমে যাচ্ছে, বেকারিগুলো বন্ধ, বাজারগুলো খালি।

খান ইউনিসের একটি শরণার্থী শিবিরে প্লাস্টিকের ছাউনি ঘেরা ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় নিজের পরিবারের সঙ্গে বসবাস করছেন আখরাস (৬৪)। সেখানেই তিনি কার্ডবোর্ড জ্বালিয়ে আগুন জ্বালান এবং একটি শিমের ক্যান গরম করেন। এটাই তাদের শেষ খাবার।

তিনি বলেন, আমরা ১৩ জনের পরিবার। এক ক্যান ফাভা শিম দিয়ে কী হবে?

আখরাস আরও বলেন, ‘আমরা যুদ্ধ বেঁচে গেছি, প্রতিদিন সকাল-বিকেল বোমাবর্ষণ সহ্য করেছি। কিন্তু আমরা ক্ষুধা সহ্য করতে পারবো না। না আমরা, না আমাদের সন্তানরা।’

উত্তরে নুসাইরাত শরণার্থী শিবিরে শত শত ফিলিস্তিনি একটি খোলা জায়গায় রান্না করা গরম ভাতের জন্য একটি সারিতে দাঁড়িয়ে আছেন। ছোট শিশুরা সামনে এগিয়ে আসছে, হাতে বালতি-পরিবারের জন্য কিছু খাবার নিয়ে যেতে চায় তারা।

এই জরুরি খাবার বিতরণ যেসব ত্রাণ সংস্থা চালাচ্ছে। তারা বলছে, যদি নতুন করে খাবার ঢুকাতে না পারে, তাহলে আর কয়েকদিনের মধ্যেই তাদেরও এই খাবার বিতরণ বন্ধ করে দিতে হবে।

বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি আগে গাজার ২৫টি বেকারিতে রুটি সরবরাহ করতো। এখন সবগুলো বেকারি বন্ধ। অল্প পরিমাণ খাদ্যসামগ্রী বিতরণও বন্ধ হয়ে যেতে চলেছে।

জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থার জুলিয়েট তৌমা বলেছেন, সব ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র শেষ হয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলৈন, গত এক মাসের বেশি সময় ধরে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ গাজা অবরোধ করায় জিনিসপত্রের দাম আকাশছোঁয়া হয়ে গেছে। এর মানে, শিশুরা, নবজাতকেরা না খেয়ে ঘুমোতে যাচ্ছে। প্রতিদিন এই সামগ্রী ছাড়া গাজা গভীর দুর্ভিক্ষের দিকে আরও এক ধাপ এগোচ্ছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলছে, গাজা শাসনকারী হামাস ত্রাণের অপব্যবহার করছে। হামাস যোদ্ধাদের হাতে যাতে ত্রাণ না পৌঁছে, সেজন্যই তারা সব সরবরাহ বন্ধ রেখেছে।

হামাস তাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে। বরং ইসরায়েলকে ক্ষুধাকে যুদ্ধকৌশল হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগ করেছে।

নুসাইরাতে নাইমা ফারজাল্লা বলেছেন, ‘যদি আমরা বোমায় না মরি, তাহলে ক্ষুধায় মরবো।’

সূত্র: রয়টার্স

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন