আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য এবং যোগাযোগের উন্নতির লক্ষ্যে চীনা নেতৃত্বাধীন বিশাল অবকাঠামো বিনিয়োগ প্রকল্প ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ থেকে সরে যাচ্ছে পানামা। বেইজিংয়ের কথিত প্রভাব রোধে ওয়াশিংটনের হুমকির মধ্যে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে বৈঠকের পর পানামার প্রেসিডেন্ট হোসে রাউল মুলিনো সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আমার সরকার বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের ২০১৭ সালের সমঝোতা স্মারক নবায়ন করবে না।
মিত্রদেশ পানামার কাছ থেকে পানামা খাল দখলে ট্রাম্পের হুমকির মধ্যেই শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) দেশটিতে সফর করতে যান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। প্রেসিডেন্টার সঙ্গে আলোচনার সময় রুবিও সতর্ক করে বলেন, খালে চীনের সম্পৃক্ততার অনুমতি দিয়ে পানামা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ১৯৭৭ সালের চুক্তি লঙ্ঘন করছে।
রুবিও বলেন, দেশটি যদি চীনের প্রভাব কমিয়ে না আনে, তবে এটি সম্ভাব্য মার্কিন প্রতিশোধের মুখোমুখি হতে পারে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে হুমকি দিয়েছিলেন তার পর রুবিও এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
গতকাল রোববার সকালেও ট্রাম্প হুঁশিয়ারির পুনরাবৃত্তি করে সাংবাদিকদের বলেন, চীন পানামা খাল চালাচ্ছে, যা বোকার মতো পানামাকে দেওয়া হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্র এটি ফিরিয়ে নিতে যাচ্ছে, অথবা খুব শক্তিশালী কিছু ঘটতে যাচ্ছে।
পানামার প্রেসিডেন্ট মুলিনো বলেন, রুবিওর সঙ্গে আলোচনার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশোধের তাৎক্ষণিক হুমকি তিনি বুঝতে পারছেন না। খালের মালিকানা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার সম্ভাবনাও নাকচ করে দেন তিনি।
তিনি বলেন, কোনো সন্দেহ নেই যে, খালটি আমাদের দেশ পরিচালিত হয় এবং তা অব্যাহত থাকবে। চীনের উপস্থিতি নিয়ে প্রেসিডেন্ট (ট্রাম্প) তার মতামত দিয়েছেন, যা খালের কারিগরি কর্তৃপক্ষ যথাসময়ে স্পষ্ট করবে।
এদিকে, চীনা কর্মকর্তারা খালের উপর পানামার সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের আশঙ্কার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং বলেন, বেইজিং সব সময় পানামা খালকে স্থায়ীভাবে নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক জলপথ হিসেবে স্বীকৃতি দেবে।
প্রসঙ্গত, চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ ২০১৩ সালে চালু করা একটি বিশ্বব্যাপী উন্নয়ন কর্মসূচি। এটি ওভারল্যান্ড এবং সমুদ্রপথের পাশাপাশি ডিজিটাল ও কাঠামোগত অবকাঠামোর মাধ্যমে বিশ্বের দেশগুলোকে সংযুক্ত করার চেষ্টা করে। লাতিন আমেরিকার প্রথম দেশ হিসেবে পানামা এই প্রকল্পে সই করেছিল।