আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
দেশের ৬০ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে দারিদ্র্যের কষাঘাত বের করে আনার জন্য বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে চীন। কৃষিভিত্তিক সমাজ থেকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলে লক্ষাধিক মানুষকে চরম দারিদ্র্য থেকে মুক্তি দিয়েছে। কয়েক দশকের দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে দারিদ্র্যর হার ৬৬ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে শূন্য দশমিক ৩ শতাংশে নেমে এসেছে।
তবে ২০২২ সালে শূন্য কোভিড নীতি, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ায় উন্নয়নের মধ্যে বিশ্ব প্ল্যাটফর্মে বেইজিংয়ের অবস্থান বা মর্যাদা কমেছে।
এ বছরই চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) ২০তম জাতীয় কংগ্রেসে তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতা লাভ করেছেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তার নতুন মেয়াদের দায়িত্বকালে ইতোমধ্যে প্রকৃত সম্পত্তি বিপর্যয় এবং শূন্য কোভিড নীতির ফলে আর্থিক চাপের মধ্যে রয়েছে বেইজিং, যার প্রভাব পড়েছে দেশের উৎপাদন মডেলে।
চীনের জিডিপি ২০২২ সালে সাড়ে ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে, যা ৩০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম। যদিও এ বছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রত্যাশা ছিল ৮ দশমিক ১ শতাংশ। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল ২০২২ সালে চীনের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ৩ দশমিক ২ শতাংশ উন্নয়নের পূর্বাভাস দিয়েছে। চীনের উন্নয়ন হ্রাস পাওয়ার কারণগুলোও স্পষ্ট।
সিডনি মর্নিং হেরাল্ড অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার প্রধান কারণগুলোর একটি কঠোর শূন্য কোভিড নীতি। এর ফলে চীনের প্রধান শহর ও শিল্পাঞ্চল এলাকাগুলোতে বারবার লকডাউন আরোপ করা হয়েছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে সাংহাইয়ে লকডাউন আরোপ করা হয়েছিল, অথচ সাংহাই চীনের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক।
১৬ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের মধ্যে বেকারত্ব ২০ শতাংশ হ্রাস পাচ্ছে এবং শি জিনপিংয়ের বর্তমান পাঁচ বছরের সময়কালে তা দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে। দেশটির ক্রেতারা খুচরা ব্যয় কমিয়েছে এবং বিশ্বের মন্দার পরিস্থিতি রপ্তানি হুমকির মুখে ফেলেছে।
জিও ইকনোমিক সেন্টারের সহকারী পরিচালক নিলস গ্রাহাম আটলান্টিক কাউন্সিলে বলেন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং তার তৃতীয় মেয়াদে যে পদক্ষেপগুলো নিচ্ছেন তা চীনের অর্থনীতিতে ৫ ট্রিলিয়ন ডলার কমিয়ে দেবে। আর এটি নিঃসন্দেহে বিশ্ব উন্নয়নের জন্য বিধ্বংসী ফলাফল।