জাতীয় ডেস্ক:
নীলফামারীর ডোমার উপজেলার ভোগডাবুড়ী ইউনিয়নে অবস্থিত চিলাহাটি রেলস্টেশন। ডিসেম্বরে স্টেশনটি চালু করতে কাজ করছে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। এরইমধ্যে প্রকল্পটির ৯০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। এ স্টেশনটি চালু হলে দ্রুতই ইমিগ্রেশন ও কাস্টম সুবিধা পাবেন স্থানীয়রা।
জানা যায়, ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্থান যুদ্ধের পর থেকে চিলাহাটি-হলদিবাড়ী রেল যোগাযোগের লিংকটি বন্ধ হওয়ায় ভারত-বাংলাদেশের বিশাল জনগোষ্ঠী রেলসেবা থেকে বঞ্চিত থাকে। এ ছাড়া দীর্ঘ ৫৫ বছর ধরে দুদেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যে নেমে আসে স্থবিরতা।
সরেজমিনে দেখা যায়, উত্তরাঞ্চলের রেলওয়ে স্টেশন চিলাহাটি। সীমান্তবর্তী এ স্টেশনের সঙ্গে ভারতের হলদিবাড়ি রেলপথে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে যাত্রীবাহী ট্রেন মিতালী এক্সপ্রেস চলাচল করছে। তবে চিলাহাটি স্টেশনে যাত্রী ওঠা-নামার ব্যবস্থা না থাকায় এ ট্রেনের কোনো সুবিধা পাচ্ছে না উত্তরাঞ্চলের মানুষ। চিলাহাটি স্টেশনে ইমিগ্রেশন না থাকায় শুধুমাত্র ঢাকায় ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস কার্যক্রম সম্পন্ন করে যাতায়াত করতে হয় চিলাহটি হয়ে শিলিগুড়ির এই মিতালী এক্সপ্রেসে। দুদেশের যোগাযোগ স্থাপনকারী এ ট্রেনে যাতায়াতের জন্য উত্তরবঙ্গে ইমিগ্রেশন চালুর দাবি শুরু থেকেই। সেটি মাথায় রেখেই প্রায় ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে চিলাহাটিতে আধুনিক রেলওয়ে স্টেশন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় রেল কর্তৃপক্ষ। খুব শিগগিরই এ স্টেশন থেকে মিতালী এক্সপ্রেসে ট্রেনে ওঠা-নামার সুযোগ পাবে স্থানীয় বাসিন্দা ও যাত্রীরা।
৫৫ বছর পর ২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর মালবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়। ২০২১ সালের ২৭ মার্চ যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের জন্য মিতালী এক্সপ্রেস উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে করোনা ও ভিসা সংক্রান্ত জটিলতায় আটকে যায় মিতালী এক্সপ্রেসের চলাচল। উদ্বোধনের প্রায় দুই বছর পর ২০২২ সালের জুনে চালু হয় যাত্রীবাহী ট্রেন মিতালী এক্সপ্রেস।
চিলাহাটি স্টেশনে যাত্রী সেবা নিশ্চিতে ১ হাজার ৪০০ বর্গমিটার আইকনিক স্টেশন ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া প্লাটফর্ম শেড, ফুটওভার ব্রিজ, চারটি রেইজড প্লাটফর্মসহ দুইটি ওয়াসপিট লাইন নির্মাণ, বৈদুতিক ব্যবস্থার উন্নয়ন, বর্ডার গেট নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।
শিক্ষাবিদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, দীর্ঘ সময়ের পর প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উন্নয়নের সুফল আমরা পেতে যাচ্ছি। এ বন্দর পুরোপুরি চালু হলে জেলার অর্থনীতে গতি আসবে। উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাবে আরও এক ধাপ।
রেলওয়ের পশ্চিম জোনের প্রকল্প পরিচালক ও বিভাগীয় প্রকৌশলী (পাকশী-২) আবদুর রহিম বলেন, এ রেলপথ দিয়ে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ এই স্টেশন থেকে উঠতে ও নামতে পারেব। এ ছাড়া মালামাল আনা নেয়ার ক্ষেত্রেও কাস্টম ক্লিয়ারিং সার্টিফিকেট এখন থেকেই পাবেন।