হোম স্বাস্থ্য ডেস্ক চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে ‘আত্মহত্যার’ চেষ্টা করা ৪ জুলাই যোদ্ধা

চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে ‘আত্মহত্যার’ চেষ্টা করা ৪ জুলাই যোদ্ধা

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 49 ভিউজ

অনলাইন ডেস্ক:
জুলাই আন্দোলনে আহত হয়ে চোখ হারানো জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন চার জন বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। চিকিৎসা এবং পুনর্বাসন নিয়ে হতাশা এবং ক্ষোভ থেকে তারা এই পদক্ষেপ নেন বলে জানা গেছে। তারা বর্তমানে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। চিকিৎসকরা তাদের পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। তবে কী খেয়ে তারা আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন তা এখনও জানা যায়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রবিবার (২৬ মে) জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সিইও (অব) লে. কর্নেল কামাল আকবার ও জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান, জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট পরিচালকদের সঙ্গে এক বিশেষ মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করেন। সভায় জুলাই যোদ্ধাদের চিকিৎসা সেবা, সামাজিক মর্যাদা ও ভবিষ্যৎ জীবনমান নিয়ে গঠনমূলক আলোচনা হয়।

সভা চলাকালীন সময়ে আহত সেই চার জন ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম হতাশা ও উৎকণ্ঠা থেকে বিষপান করেন। তাদের মধ্যে একজন কিছুদিন আগে বিদেশ থেকে চিকিৎসা নিয়ে দেশে ফিরে এসেছেন। এই ঘটনার পর হাসপাতালের কর্মকর্তারা তাদরে দ্রুত অ্যাম্বুলেন্সে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। সেখানে তাদের চিকিৎসা করা হয়। জরুরি চিকিৎসা শেষে তাদের পর্যবেক্ষণে রাখার জন্য ভর্তি করা হয়েছে।

জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা জানান, চার জন বিষজাতীয় কিছু একটা খেয়েছেন বলে আমাদের জানানো হয়। আমরা সেই অনুযায়ী চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। চার জন রোগীকেই সিনিয়র চিকিৎসকরা দেখেছেন। তবে তারা কী খেয়েছেন তা স্পষ্ট না এবং অনেক সময় তা স্পষ্ট করে জানাও সম্ভব না। কারণ লক্ষণ সবসময় সঙ্গে সঙ্গে প্রকাশ পায় না। সে জন্য তারা বর্তমানে পর্যবেক্ষণে আছেন। তবে তারা শঙ্কামুক্ত।

হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. শফিউর রহমান জানান, তারা আমাদের পর্যবেক্ষণে আছেন। এই মুহূর্তে শঙ্কার কিছু নেই।

এদিকে গতকাল এই ঘটনার পর জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক জানান, সভা চলাকালীন সময় দুপুর আড়াইটার দিকে চিকিৎসাধীন আহতরা তার সঙ্গে দেখা করেন ও কথা বলেন। তিনি তাদের বাইরে অপেক্ষা করতে বলেন ও পরে কথা বলবেন বলে জানান। এরই মধ্যে চার জন বিষ পান করেন।

তিনি আরও বলেন, আহতদের প্রথম দাবি ছিল, পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা। এছাড়া স্বাস্থ্য কার্ড, গেজেট ইত্যাদি। এগুলো এখনও সম্পন্ন হয়নি। যে চার জন বিষপান করেছেন, তাদের মধ্যে একজন সিঙ্গাপুর থেকে চিকিৎসা করে এসেছেন। সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সেখানে তার চিকিৎসার কিছু নেই। বাংলাদেশে যে চিকিৎসা, সেটা দিয়েই হবে। আমার কাছে মনে হয়, সামগ্রিক বিষয়ে তারা মানসিকভাবে হতাশ।

পরিচালক বলেন, যারা বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন, তাদের বেশিরভাগই মানসিকভাবে ভালো নেই। তারা আশঙ্কা করছেন, যদি হাসপাতাল থেকে চলে যান, তাহলে তারা পুনর্বাসনসহ বিভিন্ন সমস্যা এবং সংকটে পড়তে পারেন। তাই তারা হাসপাতাল ছাড়তে রাজি হচ্ছে না।

আহতদের অভিযোগ, দীর্ঘ ৯ মাসেও তাদের উন্নত চিকিৎসা বা পুনর্বাসনের বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বরং প্রতিশ্রুতি দিয়ে নানা বাহানা করা হয়েছে। আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের দায়িত্ব নেওয়ার কথা বললেও তা বাস্তবে ঘটেনি।

এদিকে বিষপানের ঘটনা জানাজানি হলে আহতদের দেখতে হাসপাতালে যান বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। গণঅভ্যুত্থানে চোখ হারানো চার জন এবং তাদের পরিবারের প্রতি তারেক রহমানের পক্ষ থেকে সহমর্মিতার বার্তা পৌঁছে দেন তিনি। এ সময় রুহুল কবির রিজভী জানান, তাদের চিকিৎসার সার্বিক দায়িত্ব নিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ সেলের মাধ্যমে তাদের এই চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হবে।

এর আগে শনিবার দুপুরে রাজধানীর শাহবাগে জুলাই ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) সঙ্গে বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন ১০-১২ জন আহতকে আর্থিক সহায়তা এবং পুনর্বাসন বিষয়ে বাকবিতণ্ডায় হয় বলে জানা যায়।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন