জাতীয় ডেস্ক :
২০১৩ সালে দেশের তৃতীয় সমুদ্র বন্দর পায়রা উদ্বোধনের পর পটুয়াখালীতে শিল্পকারখানা স্থাপনে শিল্প উদ্যোক্তারা জমি কিনলেও গ্যাস সংযোগ না থাকায় গড়ে ওঠেনি কোনো শিল্প-কারখানা। পাশাপাশি জেলায় স্থাপিত শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোও গ্যাসের অভাবে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইপলাইনে প্রাকৃতিক গ্যাসের সরবরাহ হলে পাল্টে যাবে এই অঞ্চলের অর্থনীতি। বিশেষজ্ঞের মতে, পদ্মাসেতু হয়ে অথবা ভোলা থেকে প্রাকৃতিক গ্যাস আনা সম্ভব।
দেশের তৃতীয় পায়রা সমুদ্রবন্দর উদ্বোধনের পরই প্রবেশপথের চার লেনের ৯ কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে একরের পর একর জমি কেনেন, বড় বড় শিল্প উদ্যোক্তারা। কিন্তু গ্যাস সংযোগ না থাকায় এখনো গড়ে ওঠেনি একটিও শিল্প কারখানা। পাশাপাশি বিসিক শিল্পনগরীসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় গড়ে ওঠে ছোট বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠান। কিন্তু এসব প্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎভিত্তিক হওয়ায় উৎপাদন খরচ বেশি।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, সম্প্রতি কয়েক দফায় বিদ্যুতের দাম বেড়েছে। ফলে আয়ের বড় একটি অংশ খরচ হয়ে যায় বিদ্যুৎখাতে। তবে পরিবেশ বান্ধব জ্বালানি গ্যাস হলে এসব প্রতিষ্ঠান ও কলকারখানা সচল রাখা সহজ হবে। উৎপাদন ব্যয় অর্ধেক কমে যেত। পাল্টে যাবে পুরো দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতি।
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ‘গ্যাস এলে নিঃসন্দেহে এখানে বড় বড় শিল্পকারখানা গড়ে উঠবে। এসব কারখানাই দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্ব ভূমিকা পালন করবে।’
চেম্বার অফ কমার্সের সভাপতি মো. গিয়াস উদ্দীন বলেন, ‘গ্যাস সংযোগ পেলে পায়রা তৃতীয় সমুদ্র বন্দরের দুই ধারে গড়ে উঠবে শিল্প কারখানা। এতে জেলার লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান হবে।’
বিশেষজ্ঞের অভিমত, পদ্মাসেতু হয়ে অথবা ভোলা থেকে জেলায় পাইপলাইনের মাধ্যমে প্রাকৃতিক গ্যাস আনা সম্ভব।
এ বিষয়ে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশগত বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আব্দুর রহিম বলেন, ‘দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় দক্ষিণাঞ্চলে গ্যাস পাইপলাইন নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করার লক্ষ্য হলো মূলত ওই অঞ্চলে শিল্পায়নকে প্রসারিত করা। এ পরিকল্পনা সফল হলে সাগর, নদী ও স্থলবন্দরকেন্দ্রিক অর্থনীতি ব্যাপক হারে সম্প্রসারিত হবে।বিনিয়োগকারীরাও সেখানে প্রচুর বিনিয়োগ শুরু করবেন। এতে করে সেখানে ব্যবসা-বাণিজ্যের নতুন নতুন খাত সৃষ্টি হবে।’
‘জেলায় গ্যাস সংযোগের ক্ষেত্রে আমরা দুটি মাধ্যম হতে পারে। পদ্মাসেতু হয়ে অথবা ভোলা থেকে সরাসরি পাইপলাইনের মাধ্যমে প্রাকৃতিক গ্যাস সংযোগ করা সম্ভব।’
জেলায় বিসিক শিল্পনগরীতে ১০১টি প্লটের মধ্যে ৯৩টিতে গড়ে উঠেছে ছোটবড় শিল্প কারখানা।