অনলাইন ডেস্ক:
মোংলা -খুলনা নির্মনাধীন রেল প্রকল্প থেকে নানা চুরির ঘটনা ঘটছে। প্রকল্পের যন্ত্রাংশসহ অন্যান্য পন্য চুরি ঠেকাতে পুলিশ প্রশাসনের কাছে লিখিত আবেদন করেও ঠেকানো যাচ্ছেনা চুরি। এমন পরিস্থিতীতে নিদিষ্ট সময়ে এ পথে রেল চলাচল চালু নিয়ে সংখ্যায় প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
বিভিন্ন সুত্রে জানাযায়,২০২২ সালের ২৯ জানুয়ারি থেকে গত ২৩ আগস্ট পর্যন্ত এই প্রকল্পে ২৯টি চুরির ঘটনা ঘটে। খুলনা ও বাগেরহাটের ৮টি থানায় এ সংক্রান্ত মামলা তদন্তাধীন। শুধু এ বছরই চুরির ঘটনা ঘটে ২০টি। এসব চুরির ঘটনায় মোট ক্ষতির পরিমাণ ১ কোটি ৫৭ লাখ ৮৪ হাজার টাকা।
চলমান ওই প্রকল্প থেকে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ চুরির ঘটনা ঠেকাতে খুলনা ও বাগেরহাটের পুলিশ সুপার এবং খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারকে লিখিত চিঠি দিয়েও কোনো সমাধান পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
এই প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইরকন ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপক বলীম দে বলেন, “চুরির ধারাবাহিক ঘটনা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্প চালু করতে সমস্যা সৃষ্টি করছে। ভারত থেকে নিয়ে আসা কোনো যন্ত্রাংশ তো ফের সেখান থেকে নিয়ে এসে কাজ করা সময়সাধ্য। এছাড়া চুরির জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বিশাল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে।
মোংলা – খুলনা রেল প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম জানান, গত বছরের ৮ মে তিনি চুরি বন্ধের উদ্যোগ নিতে খুলনা ও বাগেরহাটের পুলিশ সুপার এবং খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনারকে চিঠি দেন। চিঠিতে চুরি হওয়া মালামাল উদ্ধার ও ভবিষ্যতে চুরি ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছিলো।
খুলনা-মোংলা রেল প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী আহমেদ হোসেন মাসুম বলেন, “প্রকল্পের মূল কাজের ৯৮% কাজ শেষ হয়েছে। এখন ২ কিলোমিটার এলাকার কাজ বাকি রয়েছে। সেপ্টেম্বরে রেল চলাচল শুরুর কথা থাকলেও সেটি সম্ভব হবে না। বৃষ্টির কারণেও কাজে ধীরগতি এসেছে। আশা করি অক্টোবরের মাঝামাঝি পুরো কাজ শেষ করা সম্ভব হবে। অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে রেল প্রকল্পটি চালু করা যাবে।”
২০১০ সালের ২১ ডিসেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় খুলনা-মোংলা রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রথম দফায় প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয় ১,৭২১ কোটি টাকা। নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়ায় প্রথম সংশোধনীতে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৩,৮০১ কোটি টাকা। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি। ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বৃদ্ধির প্রস্তাব অনুমোদন হয়। সর্বশেষ ২০২৩ সালের অক্টোবরের মধ্যে কাজ শেষর জন্য নির্ধারণ হয়। সেই সঙ্গে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৪,২৬০ কোটি টাকা।