সংকল্প ডেস্ক:
খুলনা প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের আদেশ মানতে গড়িমসি করছেন খুলনা পরিবার পরিকল্পনার বিভাগীয় পরিচালক সৈয়দ রবিউল আলম।
চলতি মাসের ৪ এপ্রিল ২০২৪ খ্রী: তারিখ খুলনা প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল এক আদেশ জারি করেন। আদেশ নং ৩ তারিখ : ৪/৪/২৪খ্রী: আদেশ টি জারি করেন ট্রাইব্যুনালের সিনিয়র জজ আব্দুল মান্নান। ৪ তারিখ আদেশ জারির পরে ৫ ও ৬ ছিল শুক্র ও শনিবার। ৭ তারিখ ছিল লাইলাতুলকদরের ছুটি। আদালতের তথ্য মোতাবেক ৮ এপ্রিল খুলনা বিভাগীয় পরিচালক রবিউল আলম কে ট্রাইব্যুনাল আদেশটি ডাকযোগে প্রেরণ করেন। ৯ এপ্রিল ডাইরেক্টর রবিউল আদেশ টি পান। এর পরে ১০ তারিখ থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত ঈদের ছুটি পড়ে যায়। পরের দিন ১৪ এপ্রিল বাংলা নববর্ষের ছুটি। ১৫ এপ্রিল থেকে পুরো দমে অফিস খোলে।আজ ১৭ এপ্রিল। ৩ কর্মদিবস পার হয়ে গেলেও ডাইরেক্টর রবিউল আদালতের আদেশ বাস্তবায়নে উদাসীন।
গতকাল এ প্রতিবেদক খুলনা পরিবার পরিকল্পনার পরিচালকের মুঠোফোনে ফোন করে জানতে চান, আপনি আদেশটি কি মানতে চাচ্ছেন না? তিনি উত্তরে বলেন, আদালতের আদেশ মানবো না কেনো? তাহলে আপনি এই ৩ দিনে কোন ব্যবস্থা নিলেন না কেনো? ডাইরেক্টর উত্তরে বল্লেন আদেশ পড়ার সময় পাইনি।
খোজ নিয়ে জানা যায়,সাতক্ষীরা জেলার কিংবদন্তী চিকিৎসক সাতক্ষীরা বিএমএ’র সিনিয়র সভাপতি সাবেক সিভিল সার্জন ডা: মো: এবাদুল্লাহ সাহেবের পুত্র মো: নিয়াজ ওয়াহিদ কে ১৩ নভেম্বর ২৩ তারিখ সাতক্ষীরা সদর থেকে দেবহাটা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসে বদলি করেন জেলা পরিবার পরিকল্পনার ডিডি বসীর আহমেদ। সেই বদলীর আদেশ প্রাপ্ত হয়ে ভুক্তভোগী দেবহাটা উপজেলা প:প: অফিসে নিয়মিত অফিস করতে থাকে।
কিন্তু মাত্র ৩ মাস ১২ দিনের মাথায় খুলনা বিভাগীয় পরিচালক দেবহাটার তৎকালিক ভারপ্রাপ্ত পরিবার পরিকল্পনা অফিসার পলাশ দত্তের কানপড়া শুনে নিয়াজ ওয়াহিদ কে চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবন নগর উপজেলা তে স্টান্ড রিলিজ করে দেন।
কিন্তু সরকারি চাকুরীর বিধান রয়েছে তয়-৪র্থ শ্রেনীর কর্মচারীদের কে প্রশাসনিক কারন ছাড়া ঘনঘন বদলি করা যাবেনা। আবার জেলার বাহিরে বদলি করা যাবেনা। ভুক্তভোগীর স্ত্রী সাতক্ষীরা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য অফিসে কর্মরত।চাকুরি বিধানে আছে স্বামী স্ত্রী কে যতদুর সম্ভব একই কর্মস্থলে পদায়িত রাখতে হবে। কিন্তু কোনো রকম নিয়ম নীতি না মেনেই খুলনা বিভাগীয় পরিচালক মো: নিয়াজ ওয়াহিদ কে চুয়াডাঙ্গা জীবন নগরে বদলি করে দেন।
ভুক্তভোগী ঐ তর্কিত বদলি অবৈধ মর্মে খুলনা প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে বদলি স্থগিত / বাতিলের জন্য মামলা করে দেন। মামলা নং ১৩ তারিখ ২৭-০২-২০২৪।
ঐ মামলার নথি পর্যালোচনা করে আদালত।পরে কি কারনে নিয়াজ ওয়াহিদ কে বদলি করেছেন সেজন্য ডাইরেক্টর খুলনা কে নোটিশ প্রদান করে চানতে চান আদালত।কিন্তু ডাইরেক্টর খুলনা আদালতের নোটিশের কোন উত্তর দেন নি।
পরে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ট্রাইব্যুনালের সিনিয়র জজ আব্দুল মান্নান ঐ তর্কিত বদলির আদেশের কার্যকারিতা স্থগিত রাখেন।
ডাইরেক্টর রবিউল আলম ১৩ ব্যাচের যুগ্ম সচিব হলেও তার ব্যাচমেট প্রায় সবাই অতিরিক্ত সচিব ও সচিব পদমর্যাদা পেয়েছেন। কিন্তু অধিনস্ত কর্মকর্তাদের সহিত বাজে আচরণ ও দূর্ণীতি মুলক কর্মকাণ্ড করায় তিনি আজ ও পদোন্নতি বঞ্চিত হয়ে যুগ্ম সচিব পদে রয়ে গেলেন।
ডাইরেক্টর রবিউলের কাছে কোন সংসদ সদস্য বা সাংবাদিক ফোন করে তদবীর করলে তিনি বুক ফুলিয়ে বলেন, আর ৩ মাস জুলাই/২৪ পর্যন্ত আমার চাকুরি আছে। স্বাস্থ্য শিক্ষার সচিব আজিজ আমার ব্যাচমেন্ট আমার বন্ধু। আমি যা বলবো পরিবার পরিকল্পনা দপ্তরে তাই হবে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী মো: নিয়াজ ওয়াহিদ জানান,আমার বাবা সাতক্ষীরা জেলার অবসর প্রাপ্ত সিভিল সার্জন ও একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা । বর্তমানে তিনি সাতক্ষীররা বিএমএ’র সিনিয়র সভাপতি। তিনি দীর্ঘ ৪৫ বছর যাবৎ সাতক্ষীরা জেলার অসহায় ও দুস্থ্য মানুষ দের নামমাত্র ফি ১০ টাকায় চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছেন। যেটি দেশবাসী জানেন।
তিনি জানান, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রী ডাক্তার। সুতরাং ডাক্তারের ছেলে কে হয়রানী মুলক বদলী করবে সেটা মেনে নেওয়া যায়না। তিনি এ বিষয়ে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী র হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।