খুলনা অফিস :
খুলনায় অস্বাভাবিকভাবে বেড়েই চলেছে করোনো পজেটিভ রোগীর সংখ্যা। সর্বশেষ একদিনেই খুলনায় শতাধিক পজেটিভ রোগী শনাক্ত হয়েছে। গত মে মাসের ২০ তারিখে খুলনা জেলায় করোনা পজেটিভ রোগী ছিল মাত্র ২০জন। অথচ মাত্র এক মাসের ব্যবধানে ২০ জুন রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮’শর ঘরে। এই অস্বাভাবিক হারে রোগী পজেটিভ হওয়াটা বেশ ভয়ঙ্কর মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের দাবি, অতি দ্রুত কয়েকটি এলাকা রেড জোন সহ, লকডাউন এবং প্রয়োজনে কার্ফিউ দেওয়া দরকার। খুলনা সিভিল সার্জন অফিস থেকে কয়েকদিন আগে রেড জোন এলাকা ঘোষণা করার জন্য খুলনা জেলা প্রশাসনের নিকট সুপারিশ করলেও তার কোন সিদ্ধান্ত এখনও নিতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।
খুলনা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ মে খুলনা জেলায় করোনা পজেটিভ রোগী ছিল মাত্র ২১জন। এরপর থেকে প্রতিদিন রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। বিশেষ করে ঈদের পর থেকে খুলনা জেলায় করোনা পজেটিভ রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। সূত্রটি জানায়, ২০ মে জেলায় করোনা পজেটিভ রোগী হয় ২৯জন, ২৫ মে ৪৮জন, ৩০ মে ৭জন, ২রা জুলাই ৯৭জন, ৮ জুলাই ২’শ জন, ১৩ জুলাই ৩৪২জন, ১৫ জুলাই ৪০৮জন, ১৭ জুলাই ৪৯২জন, ১৮ জুলাই ৫৮৯জন, ১৯ জুলাই ৬৭২ এবং ২০ জুলাই ৮০০জন। সম্প্রতি অস্বাভাবিক হারে করোনা পজেটিভ রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় গত ১৬ জুন সিভিল সার্জন অফিস থেকে জেলার ২টি ইউনিয়ন ও কেসিসি’র ১২টি ওয়ার্ডে রেড জোন ঘোষণার সুপারিশ করা হয়। এগুলো হল রূপসা উপজেলার আইচগাতী ইউনিয়ন, দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটি ইউনিয়ন, কেসিসি’র অর্ন্তগত ৮, ৯, ১৪, ১৬, ১৭, ১৮, ১৯, ২১, ২২, ২৪, ২৮ এবং ৩০নং ওয়ার্ড। কিন্তু শনিবার বিকেল পর্যন্ত এ বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
জানা যায়, খুলনা জেলার ৮’শ রোগী শনাক্ত হলেও মারা যাওয়ার হার অপেক্ষাকৃত কম। এখন পর্যন্ত করোনা পজেটিভ রোগী মারা গেছে ১০জন। কেসিসি এলাকায় মারা গেছে ৫জন, রূপসা উপজেলায় ৪জন এবং দিঘলিয়ায় ১জন। তবে কেসিসি’র এলাকার মধ্যে রোগীর সংখ্যা ৬’শ জন, দাকোপ উপজেলায় ২৫জন, বটিয়াঘাটায় ১২জন, রূপসায় ৫৪জন, তেরখাদায় ১৫জন, দিঘলিয়ায় ৪০জন, ফুলতলায় ২০জন, ডুমুরিয়ায় ১৮জন, পাইকগাছায় ১০জন এবং কয়রায় জন।
খুলনার সিভিল সার্জন ডাঃ সুজাত আহমেদ বলেন, আমরা নগরীর কয়েকটি ওয়ার্ডসহ দুই উপজেলার কয়েকটি জায়গা রেড জোন ঘোষণা করার জন্য জেলা প্রশাসকের নিকট সম্প্রতি সুপারিশ করেছি। তবে এখনও কোন সিদ্ধান্ত আসেনি। তিনি বলেন, খুলনা জেলা এখনই লকডাউন সহ প্রয়োজনে কার্ফিউ দিতে হবে। তা না হলে অবস্থা আরও খারাপের দিকে যাবে।
খুলনা জেলা করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে গঠিত কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন জানান, খুলনা জেলার কয়েকটি স্থানে রেড জোন এবং লকডাউন করার জন্য প্রক্রিয়া চলছে। ইতোমধ্যে দোকানপাট, শপিং মল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি বলেন, ঈদের পর থেকে ঢাকা এবং নারায়ণগঞ্জের লোকজনসহ অন্যান্য জেলা থেকে খুলনায় মানুষ প্রবেশ করায় পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে।