আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
পাল্টাপাল্টি হামলা চালানোর পর অবশেষে পাকিস্তান ও ইরানের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা কমছে। ইসলামাবাদ সফরে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জলিল আব্বাস জিলানির সঙ্গে বৈঠক করেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ান।
পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে সম্প্রতি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায় ইরানের ইসলামিক রেভ্যুলুশনারি গার্ড বাহিনী- আইআরজিসি। এতে শিশুসহ কয়েকজন হতাহত হন। জঙ্গি গোষ্ঠী জইশ আল-আদলের দুটি ঘাঁটি লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয় বলে দাবি করে তেহরান।
ওই ঘটনার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ইরানের সিস্তান বেলুচিস্তানে বিমান হামলা চালায় পাকিস্তান। পাল্টাপাল্টি হামলার জেরে উত্তেজনা দেখা দেয় তেহরান-ইসলামাবাদের মধ্যে। ঘটে রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করে নেয়ার মতো ঘটনা।
অবশেষে কূটনৈতিক টানাপোড়েন শেষ হচ্ছে ইসলামাবাদ ও তেহরানের মধ্যে। উত্তেজনা কমাতে পাকিস্তান সফরে গেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ান। মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) ইসলামাবাদে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জলিল আব্বাস জিলানির সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। দুই দেশের তিক্ত সম্পর্ক ঠিক করার বিষয়ে আলোচনা হয় তাদের।
পরে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এসময় আবদুল্লাহিয়ান বলেন, ইরান ও পাকিস্তান সীমান্তবর্তী এলাকায় সশস্ত্র গোষ্ঠীদের মদদ দিচ্ছে তৃতীয় কোন দেশ।
পাকিস্তান-ইরান সীমান্তে সন্ত্রাসীদের মোকাবিলায় ভবিষ্যতে দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করবে বলেও জানান হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ান। উভয় রাষ্ট্রই একে অপরের সার্বভৌমত্বকে সমান গুরুত্ব দেবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
অন্যদিকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জলিল আব্বাস জিলানি বলেন, দুই দেশের মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এদিকে পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে ইরানের হামলার পরই এ ঘটনার নিন্দা জানায় যুক্তরাষ্ট্র। এটিকে তেহরানের অস্থিতিশীল আচরণের উদাহরণ বলে আখ্যা দেয় হোয়াইট হাউস। ইরান যুক্তরাষ্ট্রের পছন্দের তালিকায় নেই বলে জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ইসলামাবাদ-তেহরান উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির ফায়দা নিতে চেয়েছিল ওয়াশিংটন। তবে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পাকিস্তান সফর তাদের সেই পরিকল্পনা ভেস্তে দিয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।