হোম ঢাকাফরিদপুর কোতয়ালী থানার অজ্ঞাতনামা চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার মূল রহস্য উদঘাটনসহ ০৪জন আসামী গ্রেফতার, প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত

ফরিদপুর প্রতিনিধি:

ফরিদপুর জেলার কোতোয়ালি থানাধীন অজ্ঞাতনামা চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন সহ চারজন আসামিকে গ্রেফতার সংক্রান্ত এক প্রেস ব্রিফিং আজ বেলা ১২ টায় ফরিদপুর পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহজাহান, অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমদাদ হোসাইন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শৈলেন চাকমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বিন কালাম, কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল জলিল সহ ফরিদপুর জেলার পুলিশের কর্মকর্তা বৃন্দ ও ফরিদপুরে কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
প্রেস ব্রিফিং এ জানানো হয়।

গত ০৮ অক্টোবর সকাল অনুমান ০৮ ঘটিকার সময় নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের কবিরপুর চরের অনেক ফকির মিয়ার আবাদী জমির পাশে ঝোপের মধ্যে লাশ পরে আছে সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত পুলিশ পৌঁছে লাশ দেখে তদন্ত শুরু করে, লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে। বিকাল অনুমান ০৪ টায় ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে অজ্ঞাতনামা লাশের পরিচয় শনাক্ত করে নিহতের পরিবারকে জানানো হলে তারা ফরিদপুর এসে লাশ শনাক্ত করে এবং ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় সুরোজ হত্যা মামলা দায়ের করে।

ঘটনাস্থলে পাওয়া ১টি মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে আসামীদের শনাক্ত করা হয় এবং আসামী মোঃ আবুল কালাম (৩০) ও মোঃ জিয়া(২৩) দের গত ১৭ অক্টোবর . দুপুর ২. টায় পাবনা জেলাধীন সাথিয়া থানা এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে উক্ত আসামীদের তথ্যের ভিত্তিতে আসামী মোঃ জাহাঙ্গীর আলম (২৮) ও আব্দুর রহমান (২৬) কে একই দিন বিকাল ৫ টায় মানিকগঞ্জ জেলাধীন সিংগাইর থানা এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত চার জন আসামী

গ্রেফতারকৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, ডিসিস্ট এবং আসামীরা দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন সময় ফরিদপুর এসে কৃষি শ্রমিক হিসেবে কাজ করে। গত ইং- ৭ অক্টোবর আসামী জাহাঙ্গীর ফরিদপুরের নতুন রসস্টান্ডের পাশে চায়ের দোকানে ডিসিস্টকে ২০,০০০/- টাকা গুনতে দেখে তার লোভ হলে বিষয়টি সে তার পাশে থাকা আব্দুর রহমানকে জানায়। তারা দুইজন পরামর্শ করে আবুল কালাম ও মোঃ জিয়া’দের জানায়। দুপুর অনুমান ০১.৩০ টায় তারা সবাই ফরিদপুরে একত্র হয়। তখন তারা ০৪ জন মিলে ডিসিস্টেকে হত্যা করে টাকা হাতিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মোতাবেক তারা ডিসিস্টের কাছে আসামী কালাম জমির মালিক সাজে এবং বাকিরা কিষাণ সাজে। তখন বাকি ০৩ জন আসামী পরিকল্পিতভাবে ডিসিন্টকেও কিষাণ হিসেবে তাদের সাথে কাজ করার কথা বলে অনুমান সন্ধ্যা ০৭.০০ টায় ঘটনাস্থলে নিয়ে যায়। তখন সেখানে প্রথমে কালাম ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়, জাহাগীর মুখ চেপে ধরে, আব্দুর রহমান গলা চেপে ধরে, কালাম ০২ হাত চেপে ধরে এবং দিয়া দুই পা চেপে ধরে মৃত্যু নিশ্চিত করে। ডিসিস্টের ব্যাগ হতে ১৮,০০০/- টাকা এবং ১টি মোবাইল ফোন নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে তারা ঐ রাতে চরে আত্মগোপনে থাকে এবং পরের দিন সকাল অনুমানিক ০৭টায় ফরিদপুর এসে মীর আবাসিক হোটেলে উঠে তারা প্রত্যেকে ৪৫০০/- টাকা করে ভাগ করে নেয়। ডিসিস্টের বাটন মোবাইলটি কালাম নেয় ও মোবাইল বাবদ ৬০০/- টাকার মধ্যে নিজের ভাগে ১৫০/- টাকা রেখে বাকি টাকা সবাইকে সমান হারে ভাগ করে দিয়ে তারা যে যার মতো করে ফরিদপুর ত্যাগ করে নিজ নিজ এলাকায় চলে যায়।

তদন্তকালে আরো জানা যায়, ডিসিস্ট আগে নিজ এলাকায় অটোম্যান চালাতো। ভ্যানের ব্যাটারী নষ্ট হওয়ায় নতুন ব্যাটারী কিনতে গেলে ২৬,০০০/- টাকা দাম হওয়ায় ডিসিস্টের মেয়ে এনজিও থেকে লোন নিয়ে তাকে ব্যাটারী কেনার জন্য ২০,০০/- টাকা দেয়। বাকী ৬,০০০/- টাকা সংগ্রহের জন্য ডিসিন্ট ইউনুছ আলী(৬০) উক্ত ২০,০০০/- টাকা নিয়ে ফরিদপুর এসে মজুরের কাজ খোঁজে এবং ফরিদপুরে অবস্থান করে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন