হোম রাজনীতি কে চোখ রাঙালো, কে বাঁকালো পরোয়া করি না: প্রধানমন্ত্রী

রাজনীতি ডেস্ক:

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সময়মতো অনুষ্ঠিত হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নির্বাচন যথাসময়েই হবে। কে চোখ রাঙালো আর কে চোখ বাঁকালো- তার পরোয়া তিনি করেন না।

মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) গণভবনে বেলজিয়াম সফরপরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

নির্বাচন সময়মতোই হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচন যথাসময়েই হবে। কে চোখ রাঙালো, কে চোখ বাঁকালো- তার পরোয়া করি না। নির্বাচনকালীন রুটিন ওয়ার্ক চলবে। তাছাড়া তো দেশ স্থবির হয়ে যাবে। নির্বাচনকালীন সরকার বা তার প্রধান কে হবে। সেগুলো নিয়ে কোনো আলোচনা নেই আপাতত। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়। আমাদের এখানেও তাই হবে। মন্ত্রিসভা ছোট হবে কিনা, তা সময়ই বলে দেবে।’

বিএনপির সঙ্গে সংলাপ প্রসঙ্গে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখানে বিরোধী দল হলো নির্বাচিত প্রতিনিধি। এই যে এত মানুষ হত্যা করা হলো, পুলিশ হত্যা করা হলো, তা নিয়ে কেনো প্রশ্ন নেই? খুনিদের সঙ্গে কীসের আলোচনা, কীসের সংলাপ। কোনো সংলাপ হবে না। তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসা দেশবাসীও মেনে নেবে না। যদি আলোচনা করতে হয়, ডিনার খেতে হয়। তা পিটার হাস নিজেই করে খাক।’

বিএনপির সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি যে সন্ত্রাসী দল, সেটি ২৮ তারিখে তারা আবারও প্রমাণ করলো। সুস্থ রাজনৈতিক কর্মসূচিতে তারা জনসমর্থনও পাচ্ছিলো। কিন্তু ২৮ তারিখের ঘটনার পর সাধারণ মানুষের ধিক্কার ছাড়া তাদের কপালে আর কিছু জুটবে না। তাদের এসব ধ্বংসযজ্ঞের সঙ্গে প্যালেস্টাইনের ঘটনা মিলে যায়। নিজেরা কর্মসূচির ডাক দিয়ে মাঠ থেকে পালালো। কীসের দাবিতে কীসের অবরোধ? দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে, তখন বিএনপি এমন নৃশংস কর্মসূচির মাধ্যমে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই ব্যস্ত।’

বিএনপি নেতাদের কাছে প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সাংবাদিকরা তো তাদের নিউজই করছিল। তারপরও কেনো গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর চড়াও হলেন? যদিও গণমাধ্যমে বিএনপির নিউজই বেশি কভারেজ পেতো। অনেক চ্যানেলে তো দেখি যে, আমার নিউজ চার-পাঁচ নম্বরে দেখানো হয়।’

তিনি বলেন, ‘সমাবেশের নামে বিএনপি ঠিক ২০১৩ সালের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটাচ্ছে। ওদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করে লাভ নেই। ওদের চরিত্র বদলাবে না। তারা নির্বাচন চায় না, তারা চায় একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি। মানুষকে কষ্ট দেয়াকেই তারা লক্ষ্য হিসেবে নিয়েছে। ওরা সন্ত্রাসীর দল, সন্ত্রাসীদের যেভাবে শিক্ষা দেয়া দরকার, তাই করা হবে।’

গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে অংশ নিতে গত ২৪ অক্টোবর সফরসঙ্গীদের নিয়ে বেলজিয়ামে যান প্রধানমন্ত্রী। গত ২৫ ও ২৬ অক্টোবর ওই ফোরামে যোগ দেন তিনি। ফোরামের ফাঁকে ইউরোপীয় দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গে বেশ কয়েকটি বৈঠক করেন। বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার ডি ক্র ও লুক্সেমবার্গের প্রধানমন্ত্রী জেভিয়ার বেটেলের সঙ্গেও বৈঠক করেন শেখ হাসিনা।

সফরকালে ২৫ অক্টোবর ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন, নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ইউরোপীয় বাণিজ্য কমিশনার ভালদিস ডোমব্রোভস্কিসের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। এসব বৈঠকের পর বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) এবং ইউরোপীয় বিনিয়োগ ব্যাংকের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে ৩৫ কোটি ইউরোর একটি ঋণ সহায়তা, সাড়ে ৪ কোটি ইউরোর একটি অনুদান এবং একই খাতে বাংলাদেশ সরকার ও ইউরোপীয় কমিশনের মধ্যে ১ কোটি ২০ লাখ ইউরোর অনুদান চুক্তি সই হয়।

এছাড়া সামাজিক খাতের জন্য বাংলাদেশ সরকার ও ইউরোপীয় কমিশনের মধ্যে ৭ কোটি ইউরোর আরও পাঁচটি অনুদান চুক্তি হয়। ২৬ অক্টোবর বেলজিয়ামে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীদের দেয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানেও যোগ দেন তিনি। দুদিনের সফর শেষে ২৭ অক্টোবর দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন