আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসী সংগঠন লস্কর-ই-তাইয়্যেবার শাখা হিসেবে পরিচিত দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্টকে (টিআরএফ) ‘বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন’ তালিকার অন্তর্ভুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গত এপ্রিলে ভারত শাসিত কাশ্মীরে হামলার প্রেক্ষাপটে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) জানান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
এক বিবৃতিতে রুবিও বলেছেন, কাশ্মীর হামলায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের তরফ থেকে ন্যায়বিচার আহ্বানের প্রতিক্রিয়ায় টিআরএফকে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন এবং বিশেষ তকমাধারী বৈশ্বিক সন্ত্রাসীগোষ্ঠী হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
২০১৯ সালে আত্মপ্রকাশ করা টিআরএফকে আরেক নিষিদ্ধ গোষ্ঠী লস্কর-ই-তাইয়্যেবার ফ্রন্ট এবং প্রক্সি হিসেবে ব্যাখ্যা করেন রুবিও।
দিল্লিভিত্তিক চিন্তক সংস্থা (থিংক ট্যাংক) সাউদ এশিয়া টেরোরিজম পোর্টাল অনুযায়ী, লস্কর-ই-তাইয়্যেবার একটি শাখা হচ্ছে টিআরএফ।
কাশ্মীর হামলার ‘কাশ্মীর রেজিস্ট্যান্স’ নামেও পরিচিত সংস্থাটি প্রথমে দায় স্বীকার করলেও পরে অস্বীকার করে।
তাদের মূল সংগঠন হিসেবে পরিচিত লস্কর-ই-তইবা ভারত ও পশ্চিমা দেশগুলোতে একাধিক হামলার জন্য অভিযুক্ত। ২০০৮ সালের মুম্বাই হামলার পেছনেও এই গোষ্ঠীর সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে।
টিআরএফকে সন্ত্রাসী তালিকাভুক্তির জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুবরামানিয়াম জয়শঙ্কর। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে তিনি লিখেছেন, এটি ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদবিরোধী সহযোগিতার দৃঢ় অঙ্গীকারের প্রতিফলন।
কাশ্মীর হামলা ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করে, যা এই দুই পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশীর দীর্ঘদিনের বৈরিতাকে আবারও উসকে দেয়। হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ইসলামাবাদ নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানায়। যুক্তরাষ্ট্র হামলাকে নিন্দা করলেও সরাসরি পাকিস্তানকে দোষারোপ করেনি।
ফরেন পলিসি পত্রিকার লেখক এবং দক্ষিণ এশিয়া বিশ্লেষক মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, টিআরএফকে সন্ত্রাসী তালিকাভুক্ত করে ওয়াশিংটন স্পষ্ট করছে যে, কাশ্মীর হামলা নিয়ে তাদের উদ্বেগ রয়েছে। এই ঘোষণার মাধ্যমে তারা এটাও বুঝিয়ে দিলো যে, হামলার পেছনে লস্কর-ই-তইবার সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তারা মেনে নিয়েছে।
এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের সাম্প্রতিক টানাপোড়েনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক পুনরুজ্জীবনের সহায়ক হতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ভারত অন্যতম প্রয়োজনীয় মিত্র। চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব ঠেকাতে এশিয়ায় ভারতকে ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে দেখছে ওয়াশিংটন, যদিও পাকিস্তানও তাদের মিত্র রাষ্ট্র।