হোম অন্যান্যসারাদেশ কালিগঞ্জের নলতা কলেজে অর্ধকোটি টাকার নিয়োগ বাণিজ্যের প্রস্তুতি সম্পন্ন, আজ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে সাতক্ষীরা জেলা সদরে!

নিজস্ব প্রতিনিধি :

কোনো নিয়মের তোয়াক্কা না করে কালিগঞ্জের নলতা আহছানিয়া মিশন রেসিডেন্সিয়াল কলেজে অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ নিয়োগ থেকে শুরু করে কর্মচারি নিয়োগেও চলছে স্বজনপ্রীতি ও ব্যাপক অর্থবাণিজ্য। এরই ধারাবাহিকতায় আজ (২৬ নভেম্বর) ৫ টি পদে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রায় অর্ধকোটি টাকার নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়টি লোকচক্ষুর অন্তরালে রাখতে পাতানো নিয়োগ পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে সাতক্ষীরা সরকারি মহিলা কলেজে। ওই নিয়োগ বোর্ডে ডিজি’র প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন সাতক্ষীরা সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ বাসুদেব বসু। কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সহায়তায় প্রত্যেকটি পদের বিপরীতে জনপ্রতি ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা চুক্তিতে একজন করে প্রার্থী চুড়ান্ত করে রাখা হয়েছে। কেউ টাকা দিতে গড়িমসি করলে বিকল্প প্রার্থীও ঠিক করা আছে। এ ঘটনা ইতোমধ্যে অন্যান্য নিয়োগ প্রত্যাশীদের মাঝে জানাজানি হওয়ায় তাদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি হয়েছে।

নিয়োগ প্রার্থীদের মাধ্যমে জানা গেছে, গত ০৯/০৮/২২ তারিখে শুন্যপদে উপাধ্যক্ষ, বৃদ্ধিপ্রাপ্ত শুন্যপদে একজন করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ল্যাব সহকারী, পদার্থ বিদ্যা ল্যাব সহকারী, রসায়ন ল্যাব সহকারী, উদ্ভিদবিদ্যা/প্রাণিবিদ্যা ল্যাব সহকারী এবং একজন অফিস সহায়ক নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এর মধ্যে উপাধ্যক্ষ পদে নলতা আহছানিয়া মিশন রেসিডেন্সিয়াল কলেজের মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জামায়াত নেতা ফারুক হোসেনকে নিয়োগের জন্য চুড়ান্ত করেন অধ্যক্ষ তোফায়েল আহমেদ। কিন্তু বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর ব্যাপক সমালোচনা হওয়ায় উপাধ্যক্ষ পদের নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ পর্যন্ত সম্পন্ন করতে পারছেন না বলে জানা গেছে।

অপরদিকে, রসায়ন ল্যাব সহকারী পদে আইরিন সুলতানাকে চুড়ান্ত করা হয়েছে। বিকল্প প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন মেহেদী হাসান। জীববিদ্যা ল্যাব সহকারী পদে চুড়ান্ত হয়ে আছেন আব্দুল্লাহ পারভেজ। পদার্থবিদ্যা ল্যাব সহকারী পদে আফিয়া সুলতানাকে চুড়ান্ত করা হয়েছে এবং বিকল্প হিসেবে রাখা হয়েছে মাহবুব আলমকে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ল্যাব সহকারী পদে সুদীপ্ত সরকারকে এবং অফিস সহায়ক পদে অধ্যক্ষের ব্যক্তিগত মোটরসাইকেল চালক ইরফাত আহছানকে মনোনীত করে রাখা হয়েছে। এসব প্রতিটি পদের বিপরীতে ১০ লক্ষ টাকা থেকে শুরু করে ১২ লক্ষ টাকা চুক্তি করে এর মধ্যে অগ্রীম হিসেবে টাকা নেয়া হয়েছে বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেক নিয়োগ প্রার্থী জানিয়েছেন। আর এসব নিয়োগে মাধ্যমে অধ্যক্ষ তোফায়েল আহমেদ প্রায় অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন তারা। প্রসঙ্গত, অধ্যক্ষ তোফায়েল আহমেদ নিজেই বিধি বিধান লংঘন করে প্রথমে উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগ লাভ করেন। তারপর তিনি নিজে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে ৩ বছর অধ্যক্ষ পদ দখলে রেখে পরবর্তীতে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ নেন। এসব অনিয়মের বিষয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় সে সময়ে তথ্যবহুল সংবাদ প্রকাশিত হয়। তোফায়েল আহমেদের অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়ে এলাকাবাসী দুর্নীতি দমন কমিশন, জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়, শিক্ষাবোর্ডসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করলে তদন্ত অনুষ্ঠিত হলে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে এখনও পর্যন্ত দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষ তোফায়েল আহমেদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এজন্য দিন দিন তার অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিত লাগামহীন ভাবে বেড়ে চলেছে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।

এব্যাপারে জানতে চাইলে নলতা আহছানিয়া মিশন রেসিডেন্সিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ তোফায়েল আহমেদ বলেন, নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়টি সঠিক নয়। সুষ্ঠু প্রক্রিয়ায় নিয়োগ সম্পন্ন করা হবে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন