অনলাইন ডেস্ক :
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, আইনমন্ত্রী একটি প্রেস কনফারেন্স করে বলেছেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে ৪০১ ধারায় এবং তাঁর বয়স বিবেচনা করে ছয় মাসের জন্য সাময়িক মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
আজ মঙ্গলবার বিকেলে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত জানানোর পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। ওই সময়ে তিনি গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে প্রবেশ করছিলেন। তিনি জানান, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা বৈঠকে বসবেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, আইনমন্ত্রী একটি প্রেস কনফারেন্স করেছেন। সেখানে তিনি বলেছেন যে, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে ৪০১ ধারায় এবং তাঁর বয়স বিবেচনা করে ছয় মাসের জন্য সাময়িক মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেটা শর্ত সাপেক্ষে।
শর্তের মধ্যে আছে তাঁকে দেশেই থাকতে হবে, বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে। এটুকু আমরা জানি। এখন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা আসবেন, আমরা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সাহেবের সঙ্গে কথা বলব, তাঁর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলব, তারপর জানাব কী সিদ্ধান্ত আমরা নেব।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘করোনাভাইরাসের যে ভয়াবহ অবস্থা, দলের নেতাকর্মীদের প্রতি অনুরোধ থাকবে আপনারা শান্ত থাকবেন। আপনারা খুব বেশি যোগাযোগ করে যেন আক্রান্ত না হন, বিষয়টির দিকে খেয়াল রাখবেন। এ মুহূর্তে স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নবান হবেন। এ মহামারীকেও মোকাবিলা করতে হবে।
দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য সারাদেশের মানুষ উদ্বিগ্ন হয়েছিল। আজ এতটুকু স্বস্তি পাবেন যে, ছয় মাসের জন্য হলেও তিনি বেরিয়ে এসে চিকিৎসার সুযোগ পাবেন। যদিও আমি ব্যক্তিগতভাবে চিন্তিত, অত্যন্ত চিন্তিত যে, বাইরে যেতে না পারলে, এখন বাইরে যাওয়ার সুযোগও নেই, তাহলে চিকিৎসাটা কীভাবে করবেন, আমরা জানি না, আমরা কথা বলছি।’
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ডাদেশ পান খালেদা জিয়া। আপিলের পর হাইকোর্টে তা বেড়ে ১০ বছর সাজা হয়। একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন। একই সঙ্গে তাঁকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ছয় মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।
বর্তমানে খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন। স্বাস্থ্যগত অবস্থার অবনতির কথা উল্লেখ করে তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত দুই দফায় জামিনের জন্য আবেদন করা হয়েছে।
সবশেষ গত ২৭ ফেব্রুয়ারি জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন খারিজ করে দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এরপর পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে তাঁর স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে মানবিক কারণে মুক্তির আবেদন জানান। এই অবস্থার মধ্যেই আজ তাঁর মুক্তির সিদ্ধান্তের কথা জানালেন আইনমন্ত্রী।