স্পোর্টস ডেস্ক:
শুরুতে ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছিল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। রাজনৈতিক টানাপোড়েনের কারণেই এমন সিদ্ধান্ত নেয় তারা। তবে শেষ মুহূর্তে সেই অবস্থান থেকে সরে আসে বিসিসিআই। সরাসরি উপস্থিত না থাকলেও ভার্চুয়ালি সভায় যুক্ত ছিল তারা। এতে করে এশিয়া কাপসহ অন্যান্য টুর্নামেন্ট আয়োজনে আশাবাদী হয়েছে এসিসি।
মঙ্গলবার ঢাকায় সংস্থাটির বার্ষিক সাধারণ সভা সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। সভা শেষে এসিসি সভাপতি মহসিন নাকভি স্পষ্টভাবেই জানিয়েছেন খুব শিগগিরই এশিয়া কাপ সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসবে, ‘সমস্যাগুলো দ্রুতই সমাধান হবে এবং প্রতীক্ষিত এশিয়া কাপ অনুষ্ঠিত হবে। আমরা এখন বিসিসিআইয়ের সঙ্গে সমন্বয়ে আছি। আশা করি খুব শিগগিরই ঝুলে থাকা বিষয়গুলো সমাধান হয়ে যাবে এবং আমরা এশিয়া কাপ আয়োজন করতে পারবো।’
এজিএমে এসিসির ২৫টি সদস্য দেশই অংশ নেয়। তবে ভারতসহ বেশ কিছু দেশ জুমে মিটিংয়ে অংশ নেয়। বিষয়টি নিয়ে এসিসির সভাপতি বলেছেন, ‘আমাদের বার্ষিক সাধারণ সভা খুব ভালোভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের ২৫ জন সদস্য রয়েছেন এবং সবাই সভায় অংশ নিয়েছেন। আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই সকল সদস্যদের যারা সরাসরি উপস্থিত ছিলেন এবং যারা জুমের মাধ্যমে সভায় যুক্ত হয়েছেন।’
বিসিবি সভাপতি বুলবুলের প্রশংসা করে নাকভি বলেছেন, ‘বিশেষ ধন্যবাদ জানাতে চাই আমিনুল ভাইকে এবং বিসিবিকে, তাদের আতিথেয়তার জন্য। যেভাবে তারা আমাদের দেখভাল করেছেন, তা অভূতপূর্ব। এই দুই দিন ছিল দারুণ স্মরণীয়। এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের পক্ষ থেকে আমি কৃতজ্ঞতা জানাই এমন অসাধারণ আয়োজনের জন্য।’
এদিকে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি বুলবুল গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষ থেকে আমি এসিসি ও এর চেয়ারম্যান মহসিন নাকভিকে ধন্যবাদ জানাই। আমরা গর্বের সঙ্গে বলতে পারি, সভাটি অত্যন্ত সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। সকল সদস্য খুবই সহযোগিতাপূর্ণ ছিলেন, কারণ আমরা সবাই ক্রিকেটের উন্নয়নের জন্য কাজ করছি।‘
এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের বর্তমান প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যান নাকভি। তবে তার অধীনে এসিসির কার্যক্রম যেন আরও সংকুচিত হয়ে পড়েছে, বিশেষ করে ভারতীয় বোর্ডের দৃষ্টিভঙ্গিতে। ভারত বরাবরই এসিসিকে খুব একটা গুরুত্ব দেয় না। আর নাকভি দায়িত্ব নেওয়ার পর সেই উদাসীনতা যেন আরও স্পষ্ট হয়েছে। দুই দেশের রাজনৈতিক টানাপোড়েন তো আগে থেকেই চরমে, তার প্রভাব এবার ক্রিকেট প্রশাসনেও পড়েছে। গত এপ্রিলে কাশ্মিরের পাহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসী হামলার পর দুই দেশের সম্পর্ক আরও জটিল হয়ে পড়ে। একইসঙ্গে চাপে পড়েছে দুই দেশের ক্রিকেট বোর্ডের মধ্যকার যোগাযোগে। ফলে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ আয়োজন কিংবা কোনও যৌথ পরিকল্পনার সম্ভাবনা কার্যত শূন্যে এসে ঠেকেছে।
এসিসি সভাপতির মতে, ক্রিকেটের সঙ্গে রাজনীতিকে মেলানো ঠিক হবে না। সদস্য দেশগুলোকে ক্রিকেট উন্নয়নে একযোগে কাজ করার আহবান জানান নাকভি, ‘আমরা সবাই একমত হয়েছি যে, আমরা ক্রিকেটের জন্য কাজ করবো। আমাদের কেউই চায় না রাজনৈতিক প্রভাব আমাদের সংগঠনে পড়ুক। এটি একটি অত্যন্ত ইতিবাচক পরিবেশে অনুষ্ঠিত একটি সফল সভা ছিল।’