হোম রাজনীতি এমপি আনার ইস্যুতে গ্রেফতার মিন্টুর বিষয়ে যা বললেন কাদের

রাজনীতি ডেস্ক:

এমপি আনার হত্যা মামলায় ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে আটকের মাধ্যমে সৎসাহসের পরিচয় দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, এমন উদারহণ বিএনপি বা এরশাদ আমলে এই দেশে ছিল না।

শুক্রবার (১৪ জুন) সকালে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত ব্রিফিং এসব কথা বলেন কাদের।

তিনি বলেন, মামলা হওয়ার আগে বা শাস্তি হওয়ার আগে নিয়ম অনুযায়ী কাউকে অপরাধী বলা যায় না। কিন্তু ওই সৎসাহস আওয়ামী লীগের আছে যে, ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু আজকে রিমান্ডে। এমন উদারহণ বিএনপি বা এরশাদ আমলে এই দেশে ছিল না।

উপর থেকে নিচ বিএনপির প্রতিটি স্তরই দুর্নীতিতে নিমজ্জিত উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, দলটিতে নেই অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রের চর্চা। বিএনপির মতো কমিটি বাতিল নয়, বরং সম্মেলনের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচনই আওয়ামী লীগের রেওয়াজ।

তিনি বলেন, যেই সরকার একটা নির্বাচনে বিএনপিকে মেজরিটি আসন পাওয়ার নিশ্চয়তা দিতে পারে- সেই সরকারই বিএনপির বন্ধু হতে পারবে। এছাড়া বিএনপির বন্ধু হওয়া সম্ভব না।

এবারের ঈদযাত্রা স্বস্তির হয়েছে দাবি করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বললেন, ফিরতি যাত্রায়ও স্বস্তি নিশ্চিত ও দুর্ঘটনা রোধে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে।

প্রসঙ্গত, এমপি আনার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুকে গত মঙ্গলবার (১১ জুন) ধানমন্ডি থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে ডিবি পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে তার সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।

এরপর বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করলে ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

এর আগে আনার হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে ৬ জুন রাতে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক কাজী কামাল আহমেদ ওরফে ‘গ্যাস বাবু’কে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। এরপর ৮ জুন আনারকে হত্যার উদ্দেশ্যে করা অপহরণ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। আদালত তার ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে চুয়াডাঙ্গার দর্শনার গেদে সীমান্ত দিয়ে ভারতে যান সংসদ সদস্য আনার। ওঠেন পশ্চিমবঙ্গে বরাহনগর থানার মণ্ডলপাড়া লেনে গোপাল বিশ্বাস নামে এক বন্ধুর বাড়িতে। পরদিন ডাক্তার দেখানোর কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন তিনি। এরপর থেকেই রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন আনোয়ারুল আজিম।

বাড়ি থেকে বেরোনোর পাঁচ দিন পর ১৮ মে বরাহনগর থানায় আনার নিখোঁজের বিষয়ে একটি জিডি করেন বন্ধু গোপাল বিশ্বাস। এরপরও খোঁজ মেলেনি তিনবারের এ সংসদ সদস্যের।

২২ মে হঠাৎ খবর ছড়ায়, কলকাতার পাশের নিউটাউন এলাকায় সাঞ্জিভা গার্ডেনস নামে একটি বহুতল আবাসিক ভবনের বিইউ ৫৬ নম্বর রুমে সংসদ সদস্য আনার খুন হয়েছেন। ঘরের ভেতর পাওয়া যায় রক্তের ছাপ। তবে ঘরে মেলেনি মরদেহ।

২৮ মে সন্ধ্যায় সঞ্জিভা গার্ডেনসের সেপটিক ট্যাংক থেকে মরদেহের খণ্ডাংশ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এগুলো আনারের মরদেহের খণ্ডাংশ কি না সেটা এখনও নিশ্চিত করেনি পুলিশ।

সংসদ সদস্য আনারকন্যা ডরিনের করা হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ মামলায় গ্রেফতার সৈয়দ আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়া, ফয়সাল আলী সাহাজি ওরফে তানভীর ভূঁইয়া ও শিলাস্তি রহমানকে দুদফা রিমান্ডে নেয়া হয়। আর হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়া জিহাদ হাওলাদার ওরফে কসাই জিহাদকে ১২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বারাসাতের আদালত।

এছাড়া বর্তমানে কলকাতা পুলিশের হেফাজতে থাকা সিয়ামের বিরুদ্ধে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হক গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। আমানের সহযোগী সাইফুল মেম্বারকেও রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন