আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
চারদিকে গুলির আওয়াজ। ছোট্ট এই শিশুটি ভয়ে এভাবেই কান বন্ধ করে রাখছে। আবার প্রাণের সন্তানকে ট্রলিতে নিরাপদে রাখার চেষ্টা করছেন এক বাবা। কাবুল বিমানবন্দরের এখনকার পরিস্থিতি ঠিক এইরকম। কী খাবেন, কোথায় থাকবেন জানেন না, কিন্তু জীবন বাঁচাতে কিংবা অন্য কোনো দেশে আশ্রয় নিতে একটি বিমানে ওঠার জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা।
এখনও স্বাভাবিক হয়নি কাবুল বিমানবন্দরের পরিস্থিতি। দেশটিতে আটকাপড়া বিদেশি নাগরিকরা এখনো ফিরছে নিজ দেশে। বাণিজ্যিক বিমান সহায়তার নির্দেশ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রও। তবে আফগান শরণার্থীর বেশে কোনো জঙ্গিকে রাশিয়া ঠাঁই দেবে না বলে সাফ জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
তালেবান আফগানিস্তান নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকে আতঙ্কে বিমানের চাকায় ঝুলে, কাঁটাতারের বেড়া পার হয়ে যে কোনোভাবেই হোক দেশ ছাড়তে মরিয়া সাধারণ আফগানরা। বিমানবন্দরের পরিস্থিতি সামাল দিতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যের সেনারা টহল দিচ্ছে। এরমধ্যেই কাবুল বিমানবন্দরে আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে দুর্বৃত্তদের গোলাগুলিতে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশ জানায়, পরিস্থিতি যেভাবে এগোচ্ছে, তাতে আমরা যতটুকু সম্ভব মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়ার চেষ্টা করছি।
এদিকে, দেশত্যাগের হিড়িকের মধ্যেই যারা যুক্তরাষ্ট্রকে সহযোগিতা করেছে তাদেরকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ঝুঁকিতে থাকা আফগান নাগরিকদের তৃতীয় কোনো দেশে সরিয়ে নিতে বেশ কয়েকটি বাণিজ্যিক বিমানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, দেশটিতে আটকাপড়া নাগরিকদের নিজ নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। কাবুল থেকে ভারতীয় নাগরিকরা ফিরেছেন দিল্লিতে। বৈধ পাসপোর্টধারী নাগরিকরা পৌঁছানোর সুযোগ পাচ্ছেন উজবেকিস্তানে। ইরান ও উগান্ডা শরণার্থী আশ্রয়ের বিষয়ে ইতিবাচক বলে জানায় দেশগুলো। তবে আফগান শরণার্থীর বেশে কোনো জঙ্গিকে রাশিয়া ঠাঁই দেবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। একই কথা বলেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানও।
এদিকে, ওআইসির এক সম্মেলনে সব পক্ষের ঐক্যমতের ভিত্তিতে সরকার গঠনের মধ্যমে আফগানিস্তানে শান্তি ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছে সৌদি আরব।
কাবুল নিয়ন্ত্রণের এক সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও এখনও সরকার গঠন করতে পারেনি তালেবান। বিভিন্ন দলের সঙ্গে একের পর এক বৈঠক করলেও এখন পর্যন্ত কোনো সমাধানে যেতে পারেনি গোষ্ঠীটি।