বাণিজ্য ডেস্ক:
আমদানি স্বাভাবিক হতেই কাঁচা মরিচের কেজি এক ধাক্কায় অর্ধেক কমে দেড়শতে নামলেও, গত দুই সপ্তাহে সরকারের বেঁধে দেয়া আলু-পেঁয়াজের দাম বাজারে কার্যকর হয়নি। এতে বেকায়দায় পড়েছেন তারা।
সরকারের বেঁধে দেয়া দাম অনুযায়ী খুচরায় আলুর কেজি সর্বোচ্চ হওয়ার কথা ৩৬ টাকা আর পেঁয়াজ ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা। সেখানে রোববার (১ অক্টোবর) কারওয়ানবাজারে পাইকারিতেই পেঁয়াজ বিক্রি হতে দেখা গেছে, ৮২ টাকা থেকে ৮৫ টাকা আর খুচরা বাজারে ৯০ টাকা থেকে ৯৫ টাকা।
এ বিষয়ে খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারিতেই আলু কিনতে হচ্ছে ৩৮ টাকায়। সরকার যদি কোল্ড স্টোরেজ পর্যায়ে আলুর দাম না কমাতে পারে, তাহলে আমাদের তো কিছু করার নেই। কারণ আমরা কিনে এনে সীমিত লাভে বিক্রি করি।
আরেকজন বিক্রেতা বলেন, সর্বোপরি সব পণ্যের দামই বাড়ছে। কোনো পণ্যের দামই কমে না। আমি নিজে ব্যবসায়ী হলেও আমার কিন্তু অন্য পণ্যগুলো কিনে খেতে হচ্ছে। নিত্যপণ্যের দাম খালি বাড়েই।
এমন বাস্তবতায় খুচরা বাজারের পাশাপাশি পাইকারি আড়তেও নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে সরকারি সংস্থাগুলো। তবুও সরকার নির্ধারিত দাম কেন কার্যকর হচ্ছে না- এমন প্রশ্নের জবাবে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার মন্ডল জানান, পাইকারি ব্যবসায়ী ও আমদানিকারকরা তাদের কথা শুনছেন না।
তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আমরা ওইরকমভাবে সাড়া পাচ্ছি না। আমরা সহযোগিতা করতে চাচ্ছি। কিন্তু তারা নিজেদের মতো করে আলু কিনে নিয়ে আসছেন এবং বেশি দামে বিক্রি করছেন। এখন আড়তদাররা বেশি দামে কিনে, বেশি দামে বিক্রি করছেন। ফলে খুচরা পর্যায়েও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে আমদানি স্বাভাবিক হওয়ায় এক ধাক্কায় অর্ধেক কমে দেড়শতে নেমেছে কাঁচা মরিচের কেজি। তবে আলু-পেঁয়াজের মতো অনেক পণ্যের দামই এখন অস্বাভাবিক ও নাগালের বাইরে বলে দাবি করেন ক্রেতারা।
নিত্যপণ্যের বাড়তি দামে নাজেহাল এক ক্রেতা বলেন, পাইকারিতে পণ্যের এক হিসাব। খুচরা পর্যায়ে দাম সেই হিসাবের চেয়েও বেশি। বাজারে ৮০ টাকার নিচে কোনো তরকারির কেজি নেই। কিন্তু আমরা তো নিম্নবিত্ত, আমাদের পক্ষে চলা মুশকিল।
আলুর উৎপাদন ও বিপণন খরচ হিসাব করে পাইকারিতে ২৭ টাকা ৬৩ পয়সা এবং খুচরায় ৩৫ টাকা ৮৭ পয়সা নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার।
আরেকজন ক্রেতা বলেন, আমাদের তো বেতন-ভাতা বাড়ছে না। আমরা আগে যা পেতাম, এখনও তা পাই। ওই আগে একটু মাছ মাংস খেতাম। এখন ভর্তা ডাল সবজি খেয়েই কোনো রকম চলছি। কারণ বাঁচতে তো হবে।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর আলুর উৎপাদন ও বিপণন খরচ হিসাব করে পাইকারিতে ২৭ টাকা ৬৩ পয়সা এবং খুচরায় ৩৫ টাকা ৮৭ পয়সা নির্ধারণ করে দেয় সরকার। একইসঙ্গে দেশি পেঁয়াজের দাম পাইকারিতে ৫২ টাকা ৪৫ পয়সা এবং খুচরায় ৬৪ টাকা ৯১ পয়সা করা হয়।