হোম জাতীয় একাদশের মেয়াদ থাকতেই দ্বাদশের শপথ, সংবিধানে কী আছে

জাতীয় ডেস্ক:

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৯৮ আসনে বিজয়ী সদস্যদের ফলাফলের গেজেট প্রকাশ হয়েছে। বুধবার (১০ জানুয়ারি) শপথ নিতে যাচ্ছেন তারা। পাশাপাশি বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় শপথ নেবেন মন্ত্রিসভার সদস্যরাও।

এদিকে একাদশ সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে দ্বাদশ সংসদের নব নির্বাচিত সদস্যরা শপথ নিতে পারবেন কি না, তা নিয়ে চলছে বিভিন্ন আলোচনা। তবে এ নিয়ে সংবিধানে কিছু অস্পষ্টতা রয়েছে।

সংবিধানে বলা আছে, সংসদের মেয়াদ অবসানের প্রেক্ষাপটে ভেঙে যাওয়ার পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচিতরা মেয়াদ অবসানের আগে তাদের কার্যভার গ্রহণ করবেন না। আবার সংবিধানের অন্য একটি অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে— শপথ আবশ্যক এমন ক্ষেত্রে শপথ নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে কার্যভার গ্রহণ করেছেন বলে গণ্য হবে। সংসদ সদস্য পদের জন্য সংবিধান অনুসারে শপথ নেয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

এক্ষেত্রে সংবিধানের ১৪৮ (৩) অনুচ্ছেদে বলা আছে, এই সংবিধানের অধীন যে ক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তির পক্ষে কার্যভার গ্রহণের পূর্বে শপথগ্রহণ আবশ্যক, সেই ক্ষেত্রে শপথ গ্রহণের পর তিনি কার্যভার গ্রহণ করেছেন বলে গণ্য হবে।

অন্যদিকে, সংসদ সদস্যদের দায়িত্বের ক্ষেত্রে সংবিধানের ১২৩ (২)(খ) অনুচ্ছেদে বলা আছে, তবে শর্ত থাকে যে, এই দফার (ক) উপ-দফা অনুযায়ী অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে নির্বাচিত ব্যক্তিরা, উক্ত উপ-দফায় উল্লিখিত মেয়াদ সমাপ্ত না পর্যন্ত সংসদ সদস্য হিসেবে কার্যভার গ্রহণ করবেন না।

(ক) উপধারায় মেয়াদ অবসানের কারণে সংসদ ভেঙে যাওয়ার পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে সংসদ সদস্যদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এক্ষেত্রে ১৪৮ অনুচ্ছেদে শপথের সঙ্গে সঙ্গে দায়িত্ব গ্রহণের কথা বলা হলেও ১২৩ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, আগের সংসদের মেয়াদ শেষ না হওয়ার আগে নতুনরা দায়িত্ব নিতে পারবেন না।

এদিকে, সংসদের মেয়াদের বিষয়ে সংবিধানের ৭২ (৩) অনুচ্ছেদে বলা আছে, রাষ্ট্রপতি আগে ভেঙে না দিয়ে থাকলে প্রথম বৈঠকের তারিখ থেকে পাঁচ বছর অতিবাহিত হলে সংসদ ভেঙে যাবে।

সংবিধানের বিধান মতে, ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি শুরু হওয়া একাদশ সংসদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২৯ জানুয়ারি। সংবিধানের ১২৩ বিধান মানলে ওই সময়ের আগে এবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য দায়িত্ব নিতে পারছেন না। আবার ১৪৮ বিধান মতে, এক্ষেত্রে কোনো বাধা থাকছে না।

অপরদিকে সংসদ সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (১০ জানুয়ারি) সংসদ সদস্যদের শপথ হলেও দ্বাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন ২৯ জানুয়ারির পরই অনুষ্ঠিত হবে। এক্ষেত্রে ৯ জানুয়ারি গেজেট প্রকাশের দিন ধরলে ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বৈঠক অনুষ্ঠানের সময় রয়েছে। সংবিধানের বলা হয়েছে [৭২ (২)]— যেকোনো সাধারণ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষিত হওয়ার (গেজেট প্রকাশ) ৩০ দিনের মধ্যে সংসদের বৈঠক আহ্বান করতে হবে।

৭ জানুয়ারি সারা দেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বেসরকারিভাবে পাওয়া ফলাফলে ২৯৮ আসনের মধ্যে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ পেয়েছে ২২২ আসন, জাতীয় পার্টি ১১টি আসনে জয় পেয়েছে। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জয়ের হার এবার বেশি। তারা ৬২টি আসনে জয় পেয়েছেন। আর মহাজোটের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাসদের প্রার্থী নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করে একটি করে আসন পেয়েছেন। বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিমও কক্সবাজারের একটি আসন থেকে জয় পেয়েছেন।

এ ছাড়া নির্বাচন কমিশন (ইসি) সংঘর্ষের ঘটনায় ময়মনসিংহ-৩ আসনের ফলাফল স্থগিত করেছে। পাশাপাশি নওগাঁ-২ আসনে এক প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে পরবর্তীতে ওই আসনে নির্বাচন হবে বলে জানিয়েছে ইসি।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন