বাণিজ্য ডেস্ক:
কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুস শহীদ বলেছেন, ভবিষ্যতে সীমান্তমুক্ত বীজ আমদানি করা হবে। মূলত কৃষি খাতে উৎপাদন বাড়াতে উন্নত জাতের যে কোনো ধরনের বীজ আমদানি বিধিনিষেধের বাইরে থাকবে।
সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে কৃষিমন্ত্রীর নিজ দফতরে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের একটা ঐতিহাসিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় এক কোটি লোককে আশ্রয় দিয়েছে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি করেছিল। আজ আমরা হাইকমিশনারের সঙ্গে আলাপ করেছি যে, উন্নত জাতের ফসল ফলানোর জন্য বীজের প্রয়োজন। সেটা হবে সীমান্তমুক্ত বীজ।
সীমান্তমুক্ত বীজ আমদানি হলে দেশে আরও বেশি উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে জানিয়ে তিনি বলেন, পাশাপাশি খাদ্য সরবরাহে কোনো সমস্যা হবে না।
সীমান্তমুক্ত বীজ বলতে কি বোঝাতে চাচ্ছেন জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, বীজ আমদানিতে যদি কোনো বিধিনিষেধ থাকে তাহলে বুঝতে হবে বাধা আছে। এখন থেকে কৃষি খাতে উৎপাদন বাড়াতে যে কোনো ধরনের বীজ আমদানিতে বিধিনিষেধের বাইরে থাকবে।
তবে কি বীজ আমদানি শুল্কমুক্ত থাকবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সেটা অর্থ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বিষয়। আমাদের মন্ত্রণালয়ের ভেতরে যা আছে সেটা আমরা করব। ভারতের হাইকমিশনার বলেছেন এ ক্ষেত্রে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। যেমন: গবেষণা, প্রশিক্ষণসহ যে কোনো ধরনের সহযোগিতা করতে তারা আগ্রহী। ভারতে ৭ হাজার কৃষিবিজ্ঞানী রয়েছেন। আমাদের দেশ ছোট, বিজ্ঞানীও কম; তবে আমরা চেষ্টা করছি বিজ্ঞানী আরও বাড়ানোর জন্য।
আব্দুস শহীদ বলেন, সরকারি পর্যায়ে দেশে কোল্ডস্টোরেজ কম আছে। এটা নতুন কোনো বিষয় নয়। তবে বেসরকারি পর্যায়ে প্রত্যেক থানা লেভেলে এক-দুটি করে কোল্ডস্টোরেজ আছে। এ ছাড়া আমরা সরকারিভাবে প্রতিটি জেলায় একটি করে কোল্ডস্টোরেজ করব। সেটা বাজেটের মধ্যে থাকলে অবশ্যই আমরা করব।
আজ প্রধানমন্ত্রী সচিবদের নিয়ে বৈঠক করেছেন সেখানে কৃষি মন্ত্রণালয়ের তিনটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যেমন: খাদ্য নিরাপত্তা, উৎপাদন বাড়ানো ও সার ব্যবস্থাপনা। এ বিষয়গুলো নিয়ে আপনার মন্ত্রণালয় কী ভাবছে–এমন প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী বলেন, আমাদের লোকসংখ্যা কত সেটা আপনারা সবাই জানেন, আর উৎপাদন যেটা হয় সেটা কিছুই না। এ জন্য যেটার প্রয়োজন হয় সেটা আমাদের আমদানি করতে হয়। সেটাও নির্ভর করে বৈদেশিক মুদ্রার একটা বিষয় থেকে যায়।
এ ছাড়া দেশের সার ব্যবস্থাপনা ভালো আছে বলে জানান কৃষিমন্ত্রী। তিনি বলেন, সারের জন্য কোনো কৃষকে গুলি খেয়ে মরতে হচ্ছে না। কৃষকের দোরগোড়ায় আমরা সার পৌঁছে দিচ্ছি। সারের ডিলারদের মনিটরিং করা হচ্ছে। কৃষি মন্ত্রণালয়সহ ইউনিয়ন পর্যায়ে যারা রয়েছে তারা প্রত্যেকে তদন্ত করছে।
সরকার সারে ভর্তুকি দিচ্ছে তারপরও ভোক্তা পর্যায়ে প্রতিপণ্যের দাম বাড়ছে এটা কেন হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে আব্দুস শহীদ বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে দাম বৃদ্ধির কোনো প্রশ্নই আসে না। যদি কোনো মিডলম্যান থেকে থাকে বা সিন্ডিকেট থাকে সেটা ভাঙার জন্য যা যা প্রয়োজন এরই মধ্যে আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি ও নির্দেশনা পৌঁছে গেছে। আর আমাদের কাছে এ রকম কোনো তথ্য নেই যে সার বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। আমরা এ ধরনের কোনো তথ্য পাচ্ছি না।