ঈদযাত্রা চাপমুক্ত, সহজ ও সুষ্ঠু করে তুলতে নানা ব্যবস্থা নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। টিকেট ছাড়া ঢোকা যাবে না স্টেশনে। সিট দখলমুক্ত রাখতে বিমানবন্দর স্টেশনে থামবে না ঢাকাগামী ট্রেন। লাইনে দাঁড়িয়ে টিকেট সংগ্রহের হেপা থেকে মুক্ত করতে আন্তনগর ট্রেনের টিকেট শতভাগ অনলাইনে বিক্রি করা হচ্ছে। ঈদের পাঁচ দিন আগে থেকে পাঁচ দিন পর পর্যন্ত মোট দশ দিন ঈদযাত্রার টিকেট ঘরে বসেই সংগ্রহ করতে পারছেন যাত্রীরা। আগামীকাল সোমবার (১৭ তারিখ) থেকে চলবে ঈদের ট্রেন ।
আজ রোববার (১৬ এপ্রিল) রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পরিদর্শনে গিয়েছিলেন রেলপথমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন। সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, ‘স্টেশনগুলোতে আমরা এক্সেস কন্ট্রোল করেছি। কাজেই টিকেটবিহীন কোনো যাত্রী স্টেশনে প্রবেশ করতে পারবে না।’
রেলপথমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দুটি প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা। এ সময় আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে দেখা করার জন্য এবং গ্রামের বাড়িতে ঈদ কাটানোর উদ্দেশে কয়েক লাখ মানুষ ঢাকা শহর থেকে গ্রামে আসা-যাওয়া করে। পরিবহণের অন্যতম একটি মাধ্যম হচ্ছে রেলওয়ে। ঈদের সময় যাত্রীদের আসা-যাওয়ার প্রচণ্ড চাপ তৈরি হয়। এই চাপ সামলানোর জন্য আমরা প্রস্তুতি নিয়ে থাকি এবং বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম গ্রহণ করে থাকি। আমাদের সে পরিকল্পনা আমরা একমাস আগেই মিডিয়ার মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছি।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘মন্ত্রণালয় এবং রেলের পক্ষ থেকে যে অভ্যন্তরীণ প্রস্তুতি নেওয়া দরকার, আমরা সেটা নিয়ে থাকি। এই বছর রেলওয়ের সবচেয়ে বড় যে পরিবর্তন নেওয়া হয়েছে, তা হলো—ঈদের পাঁচ দিন আগে ও ঈদের পাঁচ দিন পরে এই দশ দিন আন্তনগর ট্রেনগুলোর টিকেট শতভাগ অনলাইনে বিক্রি করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই ঈদ যাত্রার টিকেট বিক্রি হয়ে গেছে এবং আগামীকাল ১৭ তারিখ থেকে ঈদের ট্রেন চলা শুরু হবে। এই ট্রেন চলাচলের ক্ষেত্রে আমরা বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি এবং সেগুলো যাত্রীদের নিরাপদ ভ্রমণের জন্য আমরা গ্রহণ করেছি। আজকে আমরা কমলাপুর পরিদর্শনে এসেছি সার্বিক প্রস্তুতি দেখার জন্য। এখানে বিভিন্ন পক্ষের সাথে মতবিনিময় করেছি। যাত্রীদের অধিকতর নিরাপদ যাত্রার জন্য কিছু সিদ্ধান্ত আমরা বিভিন্ন পক্ষকে জানিয়ে দিয়েছি।’
নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘১৭ এপ্রিল থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত ঢাকাগামী একতা, দ্রুতযান,পঞ্চগড় নীলসাগর, কুড়িগ্রাম, লালমনি ও রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেন সমূহের ঢাকা বিমানবন্দর স্টেশনে যাত্রা বিরতি থাকবে না, কারণ এসব ট্রেনে বিমানবন্দর থেকে যাত্রীরা সিট দখল করে থাকে।’
রেলমন্ত্রী আরও বলেন, ‘অতীতে বিভিন্ন সময় যাত্রীদের চাপের কারণে এক ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতো, আমরা এবার সেজন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। কমলাপুর, বিমানবন্দর, জয়দেবপুর স্টেশনে অস্থায়ী বাঁশের বেড়া নির্মাণ করা হয়েছে যাতে যাত্রীরা সারিবদ্ধভাবে টিকেট প্রদর্শন করে ঢুকতে পারে এবং টিকেটবিহীন কোন যাত্রী ঢোকার সুযোগ না পায়।’
সিডিউল বিপর্যয় বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের বেশিরভাগই সিঙ্গেল লাইন। কোনো একটি ট্রেনের ১০ মিনিট বিলম্ব হলে অনেক ট্রেনগুলোকে বিলম্বের মুখে পড়তে হয়, তা ছাড়া এখনকার আবহাওয়ার তাপমাত্রা অনেক বেশি তাই গতি কম রাখতে হচ্ছে।’ কাজেই এই বিষয়গুলোকে সামনে রেখে যাত্রী সাধারণকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান তিনি।
স্টেশন পরিদর্শনের সময় রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক কামরুল আহসান, অতিরিক্ত মহাপরিচালক অপারেশন সরদার শাহাদত আলী সহ বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।