হোম আন্তর্জাতিক ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের হুমকি দিলো ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও জার্মানি

ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের হুমকি দিলো ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও জার্মানি

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 47 ভিউজ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক আলোচনায় অগ্রগতি না হলে আগামী আগস্টের শেষ নাগাদ দেশটির ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করবে ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও জার্মানি। মঙ্গলবার ব্রাসেলসে এক বৈঠকে এই হুঁশিয়ারি দেন ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জঁ-নোয়েল ব্যারো। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।

২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তির আওতায় যেসব অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছিল, সেগুলো ফের আরোপের কথা জানান তিনি। জঁ-নোয়েল বলেন, ইরানের কাছ থেকে দৃঢ়, পরিমাপযোগ্য ও যাচাইযোগ্য কোনও অঙ্গীকার না এলে আগস্টের শেষ নাগাদ আমরা এই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবো।

চলতি বছর জুনে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ সামরিক অভিযানের পর ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রম আবারো আলোচনায় আসে। তেহরান দাবি করছে, তাদের প্রকল্পটি শান্তিপূর্ণ এবং বেসামরিক।

মঙ্গলবার ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকের আগে ব্যারো বলেন, ২০১৫ সালের চুক্তির আওতায় দশ বছর আগে যেসব অস্ত্র, ব্যাংক ও পারমাণবিক সরঞ্জামের ওপর বৈশ্বিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছিল, সেগুলো ফিরিয়ে আনা এখন ন্যায়সঙ্গত।

এই ইস্যুতে জাতিসংঘে নিযুক্ত ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও জার্মানির রাষ্ট্রদূতেরা আলোচনায় বসেছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)। এর একদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন এই তিন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা।

২০১৫ সালের চুক্তিতে থাকা ‘স্ন্যাপব্যাক’ ধারায় বলা হয়েছে, ইরান চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনরায় কার্যকর হবে।

ইরান এখন পর্যন্ত এই হুমকির আনুষ্ঠানিক জবাব না দিলেও দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি সম্প্রতি বলেছেন, ইউরোপ যদি নিষেধাজ্ঞা ফিরিয়ে আনে, তবে ইরানের পারমাণবিক ইস্যুতে মধ্যস্থতার তাদের ভূমিকা শেষ হয়ে যাবে।

জুন মাসের ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্রের হামলার আগে ওয়াশিংটনের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনায় ছিল তেহরান। কিন্তু ওই হামলার পর ইরান আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ)-র সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করে।

আরাঘচি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি ভবিষ্যতে আর হামলা না চালানোর নিশ্চয়তা দেয়, তাহলে আমরা আলোচনায় ফিরতে পারি। সাম্প্রতিক হামলা ইস্যুটিকে আরও জটিল ও কঠিন করে তুলেছে।

ইরানের সংসদ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নতুন করে আলোচনায় বসতে হলে নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করতে হবে। তবে সেই শর্তগুলো কী, তা প্রকাশ করা হয়নি।

এদিকে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বুধবার ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরাঘচিকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, বেইজিং তেহরানের সার্বভৌমত্ব ও মর্যাদা রক্ষায় পাশে থাকবে। তিনি বলেছেন, চীন ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র না বানানোর প্রতিশ্রুতি ও শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারের অধিকারকে সম্মান করে।

২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একতরফাভাবে পারমাণবিক চুক্তি থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন। এখন তার প্রশাসনের পক্ষ থেকে আবারো আলোচনার সম্ভাবনার কথা বলা হলেও কোনও নির্দিষ্ট সময়সূচি জানানো হয়নি।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন