হোম আন্তর্জাতিক ‘ইমরান খানের বিদেশি চক্রান্তের খবর ভুয়া’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :

বিরোধী দলগুলোর আনা অনাস্থা প্রস্তাবের ভোটের মাধ্যমে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার যে ‘আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগ এনেছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান, তা প্রত্যাখ্যান করেছে দেশটির গণমাধ্যম।

গত ২৭ মার্চ এক জনসসভায় ইমরান খান দাবি করেছিলেন, তার সরকারের বিরুদ্ধে ‘বিদেশি অর্থায়নে চক্রান্ত’ করা হচ্ছে। সেখানে তিনি তার সরকারকে পতনের লক্ষ্যে ষড়যন্ত্রের অস্তিত্বের প্রমাণ হিসাবে একটি চিঠি দেখিয়েছিলেন, কিন্তু ওই চিঠিতে কি লেখা ছিল তা তিনি জানানি।

সভায় ইমরান খান দাবি করেছিলেন, একটি ‘স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি’ অনুসরণ করার কারণেই তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিষয়টি কিছুদিন ধরে পাকিস্তানি মিডিয়ায় একটি আলোচিত বিষয় ছিল।

তবে সিনিয়র পাকিস্তানি সাংবাদিক কামরান ইউসুফ এক টুইট বার্তায় জানিয়েছেন, নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে যে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ‘বিদেশি চক্রান্ত’ দাবি ওয়াশিংটনে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতের পাঠানো একটি কূটনৈতিক বার্তার ওপর ভিত্তি করে করা হয়েছিল এবং কোনো দেশই সরাসরি পাকিস্তানকে চিঠি দেয়নি। সংশ্লিষ্ট মহল ওই বার্তাটিকে সরকারের বিরুদ্ধে হুমকি বা ষড়যন্ত্র হিসেবে বাতিল ঘোষণা করেছে।

এদিকে এক্সপ্রেস ট্রিবিউন লিখেছে, হুমকিটি যদি এতই গুরুতর ছিল তবে কেন অবিলম্বে জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির (এনএসসি) বৈঠক ডাকা হয়নি তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। সেইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট মহল এবং এফও’র কিছু কর্মকর্তা প্রাসঙ্গিক সভায় বিষয়টি তুনে না ধরে জনসমক্ষে বিষয়টি উত্থাপন করা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর আচরণে যথেষ্ট বিরক্ত।

অন্যদিকে, চিঠিটি সংসদে উত্থাপন করতে এবং হুমকিটি সত্যি হলে ইমরান খানকে সম্পূর্ণ সমর্থনের প্রস্তাব দিয়েছেন জাতীয় পরিষদের বিরোধী দলের নেতা শেহবাজ শরীফ। কিন্তু পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ২৭ মার্চ তার ভাষণে দেশের জাতীয় স্বার্থের কথা উল্লেখ করে চিঠির বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানাতে অস্বীকার করেন।

এ প্রসঙ্গে নয়া দৌড় টিভিতে এক বিতর্ক সভায় জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মুর্তজা সোলাঙ্গী বলেন, এটা কীভাবে সম্ভব যে মন্ত্রিসভা, জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি এবং সংসদ এই হুমকি চিঠির বিষয়ে অবগত নয়।’ তারা কীভাবে দেশ চালাচ্ছেন সে বিষয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

অন্যদিকে, প্রখ্যাত পাকিস্তানি সাংবাদিক নাজাম শেঠি টুইট বার্তায় লিখেছেন, ইমরান খান আজ তার সমাবেশে যে ‘গোপন’ চিঠিটি দেখিয়েছেন তার একটি অনুলিপি আমার কাছে রয়েছে। আসলে, এটি সর্বজনীন ডোমেইনেই রয়েছে। তিনি ওই টুইটে ইমরান খানকে একজন ‘ড্রামাবাজ’ বলেও উল্লেখ করেছেন।

২০১৮ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে তার সবচেয়ে কঠিন রাজনৈতিক পরীক্ষার মুখোমুখি হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। পাকিস্তানের বিরোধী দলগুলো প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিপর্যস্ত সরকারকে পতনের হুমকি দিয়েছে।

ধারণা করা হচ্ছে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের মিত্র এবং প্রধান জোট অংশীদার মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট পাকিস্তান (এমকিউএম) বিরোধী দল পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর পরে পদত্যাগ করতে পারেন ইমরান খান।

অন্যদিকে, চুক্তি প্রসঙ্গে পিপিপি চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি তার টুইট বার্তায় জানিয়েছেন, ঐক্যবদ্ধ বিরোধী জোট এবং এমকিউএম একটি সমঝোতায় পৌঁছেছে। রাবতা কমিটি এমকিউএম এবং পিপিপি সিইসি’র উল্লিখিত চুক্তিটি অনুমোদন করার পর একটি প্রেস কনফারেন্সে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।

সূত্র: দ্য ইকোনোমিক টাইমস

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন