জাতীয় ডেস্ক:
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার পৌরসভার নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ভোট না দেয়ায় চার ভোটারকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে নৌকা প্রতীকের কর্মী সমর্থদের বিরুদ্ধে।
জগ প্রতীকের স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী ও এই পৌরসভার সাবেক মেয়র হাবিবুর রহমান এই অভিযোগ তুলেছেন।
হাবিবুর রহমান আড়াইহাজার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি এবং সাবেক পৌর মেয়র৷ তিনি পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা।
তার অভিযোগ, সোমবার (১২ জুন) বেলা ১১টার দিকে পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের নাগের চর মাদ্রাসা কেন্দ্রে জগ প্রতীকে ভোট দেয়ায় ভোটারদের মারধর করেছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর কর্মীরা।
হাবিবুর রহমান বলেন, ‘নিজের এলাকা হওয়ায় এখানে ৯৫ শতাংশ ভোট আমার। এই কারণে নৌকার লোকজন কেন্দ্রটিকে দখলে নিয়ে রেখেছে। বেলা ১১টার দিকে নাগের চর মাদ্রাসা কেন্দ্রে নৌকার প্রার্থীর পক্ষ নিয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সফিকুল ইসলাম ওরফে শরিফ ও তার সমর্থকরা চার ভোটারকে মারধর করেছে। পরে পৌরসভা যুবলীগ নেতা শামীম মিয়া তার সমর্থকদের নিয়ে নাগের চর মাদ্রাসার পুরুষ ও নারী কেন্দ্র দুটি দখলে নিয়ে ভোটারদের নৌকায় ভোট দিতে বাধ্য করেন। এছাড়াও নৌকার প্রার্থী সুন্দর আলীর লোকজন ৭ নম্বর ওয়ার্ডের একটি কেন্দ্র দখলে নিয়েছিল। তারা বুথের ভেতর ঢুকে জোর করে নৌকায় ভোট দিতে বাধ্য করেছে। বহিরাগতরা কেন্দ্রে ঢুকে ভোটারদের ভয় দেখাচ্ছে, মারধর করতেছে৷ মারধরের শিকার দুইজন এই এলাকার মো. কামাল উদ্দিন ও মো. রয়েল।
নৌকায় ভোট না দেয়ায় মারধর করা হয়েছে দাবি করে কামাল উদ্দিন নামে এক ভোটার অভিযোগ করে বলেন, ‘আমি ভোট দিয়া বের হওয়ার পরেই উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম শরীফ ও তার লোকজন আমার শার্টের কলার ধরে চর-থাপ্পড় দিতে থাকে৷ আমি নাকি নৌকায় ভোট না দিয়া অন্য মার্কায় ভোট দিছি, এমনটা কেন করছি, এই বইলা মারতে থাকে৷ তারা মারতে মারতে বলে, নৌকায় কেন ভোট দেস নাই? শুধু আমারে না, আরও কয়েকজনকে তারা মারছে৷ সবাইরে নৌকায় ভোট দিতে তারা বাধ্য করতেছে৷’
বেলা সোয়া এগারোটায় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় ভোট কক্ষগুলোর সামনে ভোটারদের দীর্ঘ সারি। এ সময় ভোটাররা অভিযোগ করেন, ধীর গতিতে ভোটগ্রহণ হচ্ছে। দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থেকেও তারা ভোট দিতে পারছেন না৷ পরে ভেতরে গিয়ে দেখা যায় অন্ধকার কক্ষে ভোটারদের তীব্র চাপ। এ সময় একটি কক্ষের গোপন বুথে দুজনকে দেখা গেছে।
এ সময় নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তাফা রাসেল ওই কেন্দ্রটি পরিদর্শনে আসেন। পরে গোপন বুথে থাকা ওই ব্যক্তি সেখান থেকে চলে যান। তার নাম পরিচয় জানা যায় নি।
নাগের চর মাদ্রাসার পুরুষ কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মো. শাহজাহান বলেন, কিছু নির্বোধ এসে ঝামেলা তৈরির চেষ্টা করেছে। আমি পুলিশের সহায়তায় তাদের প্রতিহত করার চেষ্টা করেছি। দুইবার ধমক দিয়েছি। তারা কথা শোনেনি৷ আমি তখন রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানিয়েছি।
দুপুর বারোটায় জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল কয়েকটি কেন্দ্র পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের বলেন, শান্তিপূর্ণ ভোট হচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, সবগুলো কেন্দ্রে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন আছে৷ কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি৷ উৎসবমুখর পরিবেশে মানুষ ভোট দিচ্ছে৷ ভোটের মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সঙ্গে টুকটাক কথা-কাটাকাটি হয়৷ তবে পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে৷