আশাশুনি (সাতক্ষীরা)প্রতিনিধি :
আশাশুনি উপজেলার কুল্যা ইউনিয়নে ভিজিডি কার্ডধারী অসহায় মহিলাদের সঞ্চয়ের টাকা ফেরতকালে টাকা কর্তনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। রবিবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। সরকার অসহায় পরিবারের খাদ্য সংকট নিরসনের জন্য ভিজিডি কার্ড এর মাধ্যমে চাউল প্রদানের ব্যবস্থা করেছেন।
কার্ড প্রতি ৩০ কেজি করে চাউল প্রদান করা হয়ে থাকে। প্রতি মাসে ৩০ কেজি চাউল প্রদানের সময় প্রত্যেকের নিকট থেকে দায়িত্বরত এনজিও প্রতিনিধি ২০০ টাকা করে সঞ্চয় বাবদ আদায় করে থাকেন। আদায়কৃত টাকা প্রত্যেক কার্ডধারীর নামে ইউনিয়ন পরিষদে অবস্থিত ব্যাংক এশিয়ার শাখায় স্ব-স্ব হিসাবে জমা করে থাকেন। একজন কার্ডধারী একটানা দু’বছর অর্থাৎ ২৪ মাস চাউল উত্তোলন ও ২০০ টাকা করে জমা দিয়ে থাকেন। এতে দেখা যায় প্রত্যেকের সঞ্চয় হিসাবে ৪৮০০ টাকা করে জমা হওয়ার কথা। তবে অনেক সময় কেউ কেউ সঞ্চয় জমা না করায় সকলের সঞ্চয় জমা এক রকম না হলেও ৪২০০ টাকা থেকে ৪৬০০ টাকা করে জমা হয়েছে। দায়িত্বরত এনজিও আইডিয়াল এর ম্যানেজার (ভিজিডি) শেখ সিরাজুল ইসলামের নেতৃত্বে মাঠ সংগঠক রুহুল কুদ্দুছ কুল্যা ইউনিয়নের কার্ডধারীদের টাকা আদায় ও সঞ্চয় জমা করে এসেছেন।
ভিজিডি কার্ড এর হিসাব সংরক্ষণ পাশ বহিতে চাউল উত্তোলনের হিসাব ও সঞ্চয় জমার হিসাব লিপিবদ্ধ করা আছে। রবিবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ইউনিয়ন পরিষদে কার্ডধারীদের সঞ্চয়ের টাকা ফেরৎ প্রদান করার ব্যবস্থা করা হয়। ব্যাংক এশিয়ার দায়িত্বরত কর্মকর্তারা এনজিও আইডিয়ালের সহযোগিতায় টাকা ফেরৎ প্রদান করেন। এসময় প্রত্যেক কার্ডধারীকে তাদের বহিতে লেখা টাকার অংক থেকে দু’শত টাকা করে কেটে রেখে সঞ্চয় ফেরৎ দেওয়া হলে কার্ডধারীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে একদল সাংবাদিক ঘটনাস্থানে গেলে দেখতে পান, সঞ্চয় হিসাব বহিতে লেখা অংকের থেকে ২০০ টাকা করে কম সঞ্চয় ফেরৎ দেওয়া হচ্ছে।
ভিজিডি কার্ডধারী নুর নাহার খাতুন স্বামী রফিকুল ও রেহেনা পারভিন স্বামী আল আমিন তাদের হিসাব বহিতে ৪৬০০ টাকা লেখা থাকলেও তাদেরকে ৪৪০০ টাকা করে ফেরৎ দেওয়া হয়েছে। উপস্থিত সকল কার্ডধারী টাকা ২০০ করে কম দেওয়ার অভিযোগ করেন। এব্যাপারে ব্যাংক এশিয়ার কর্মকর্তা আজহারুল ইসলাম বলেন, একাউন্টে যত টাকা জমা হয়েছে আমরা সে টাকাই দিচ্ছি। কম জমা হয়ে থাকলে আমাদের কিছু করার নেই। এনজিও আইডিয়াল এর মাঠ সংগঠক রুহুল কুদ্দুছ রুবেল ২০০ টাকা করে কেটে নেওয়ার অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, গত বার আমরা একশ’ টাকা করে বেশী দিয়েছিলাম।
এবার কম দিচ্ছেন কেন? জবাবে বিভিন্ন খরচসহ নানা অজুহাতের কথা ইনিবিনিয়ে বলার চেষ্টা করেন। এব্যাপারে এনজিওর ভিজিডি ম্যানেজার শেখ সিরাজুল ইসলামের সাথে যোগযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি পরে কথা বলবেন বলে জানান হলেও বলেননি।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম বলেন, টাকা কেটে নেওয়ার কোন নিয়ম নেই। নিয়ে থাকলে অপরাধ হয়েছে। তবে সকল কার্ডধারী সমান টাকা জমায়নি, বিষয়টি দায়িত্বরতদের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেবেন বলে তিনি জানান।
s